বরাবরের মতোই ভালোবাসা দিবসে (১৪ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলায় মানুষের ঢল নামে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে দর্শনার্থীদের মেলাঙ্গণে প্রবেশ করতে হয়েছে এবারও। সব বয়সের দর্শনার্থী বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতিতে বইমেলা সেদিন প্রাণের মেলায় পরিণত হয়।
অধিকাংশ স্টলেই ক্রেতার ভিড় ছিল সারাক্ষণ। আশানুরূপ বই বিক্রিতে প্রকাশকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলো থেকে প্রকাশক ও বিক্রেতারা জানান, এবারের মেলায় এদিনই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। বিক্রির শীর্ষে রয়েছে উপন্যাস ও শিশুকিশোর গ্রন্থ। কবিতার বইয়ের বিক্রিও ভালো ছিল। তরুণ পাঠকরা বই কেনায় ব্যস্ত ছিল মেলায়।
এবারের মেলার পরিবেশ অতীতের যে কোন মেলার চেয়ে ভালো। প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলোর মাঝখানের স্থানগুলো বড় আকারের হওয়ায় দর্শনার্থীরা খুব সহজেই স্টলে ঘুরে ঘুরে বই পছন্দ করতে পারছেন। বই মেলায় তিনটি দিবসে বিক্রি বেশি হয় -- একুশের দিনে, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে।
এদিন মেলায় ১৯২টি নতুন বই এসেছে -- যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক। উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে, ড. মোহাম্মদ আমীনের ‘বাংলাদেশের জেলা, উপজেলা ও নদ-নদীর ইতিহাস’ -- প্রকাশক শোভা প্রকাশ, পারিজাত প্রকাশনীতে মোনায়েম সরকারের ‘বাংলাদেশ ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায়’, মাহি প্রকাশনে শামসুজ্জামান খান সম্পাদিত ‘ কিশোর গল্প সংকলন’, মুনতাসীর মামুনের ‘উনিশ শতকে পূর্ববঙ্গের সংবাদ সাময়িকের সঙ্গে রোমাঞ্চ’ এসেছে অনন্যা প্রকাশনীতে, সুকুমার বড়ুয়ার ‘চাঁদে প্রথম মানুষ’ -- রাত্রি প্রকাশনী, তানজিনা আখাতারের ‘নারী এগিয়ে যাচ্ছে’ পারিজাত প্রকাশনীতে, বাংলা একাডেমি এনেছে ‘ফোকলোর কিকসা’, কথা প্রকাশনে জামাল রেজার উপন্যাস ‘ তুমি আমি’।
বুধবার মেলার মূলমঞ্চে ছিল ‘শিশু সংগঠনের নিষ্ক্রিয়তা ও শিশুর সাংস্কৃতিক বিকাশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাসাহিত্যিক মোহিত কামাল। আলোচনায় অংশ নেন সুব্রত বড়ুয়া, কবি দিলারা হাফিজ ও সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ার। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন।