loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • কুমিল্লা ইপিজেড-এ চামড়া কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান

  • নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলংকা

  • অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা

  • ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

  • প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনার জয়

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের ৮২তম জন্মবার্ষিকী


বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের ৮২তম জন্মবার্ষিকী

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের ৮২তম জন্মবার্ষিকী ২৬ ফেব্রুয়ারি। এদিন নূর মোহাম্মদ নগরে তাঁর স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ, সমাবেশ, গার্ড অব অর্নার প্রদান, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ল্যান্স নায়েক শেখ নূর মোহাম্মদ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার (মহিখোলা) বর্তমান নূর মোহাম্মদ নগরে জন্মগ্রহণ করেন। দরিদ্র পিতা মোঃ আমানত শেখ ও মাতা মোসাঃ জেন্নাতা খানমের আশা ছিলো ছেলে বড় হয়ে লেখাপড়া শিখে মানুষ হয়ে দেশের মুখ উজ্জল করবে। কিন্তু ডানপিটে নূর মোহাম্মদ লেখাপড়ায় বেশি এগোতে পারেননি। স্থানীয় বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় তাঁর শিক্ষা জীবনের অবসান ঘটে।

এরপর ১৯৫৯ সালের ১৪ মার্চ নূর মোহাম্মদ তৎকালীন ইষ্ট পাকিস্তান রেজিমেন্টে যোগদান করেন এবং কৃতিত্বের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষে একই বছরের ৩ ডিসেম্বর দিনাজপুর সেক্টরে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৭০ সালের ১ জুলাই যশোর সেক্টর হেড কোয়ার্টারে বদলি হয়ে আসেন। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধকালে ল্যান্সনায়েক নূর মোহাম্মদ ৮ নং সেক্টরে সাবেক ইপিআর ও বাঙ্গালি সেনাদের নিয়ে গঠিত একটি কোম্পানিতে যোগদান করেন।

৭১ এর ৫ সেপ্টেম্বর নূর মোহাম্মদ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গোয়ালহাটি গ্রামের সম্মুখ-যুদ্ধে একটি টহলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। সঙ্গী ছিলো আরও চার জন সৈন্য। তাঁরা পার্শ্ববর্তী ছুটিপুর পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর ঘাঁটির ওপর নজর রাখছিলেন। হানাদাররা টের পেয়ে বিপদজনক অবস্থার মুখে টহলদারী মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁদে ফেলার পরিকল্পনা করে। হানাদারদের এ-পরিকল্পনা বুঝে উঠতেই নূর মোহাম্মদ সঙ্গীদের নিয়ে হানাদারবাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণ করেন। শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। মারাত্মক আহত হলেন সঙ্গী নান্নু মিয়া। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে হানাদারদের মর্টার শেল মারাত্মকভাবে জখম করে নূর মোহাম্মাদকে। মৃত্যু আসন্ন বুঝে তিনি সিপাহী মোস্তফা কামালের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিয়ে আহত নান্নু মিয়াকে নিয়ে সবাইকে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলেন। উপায় না দেখে তাঁরাও তাই করলেন, কিন্তু একটি এসএলআর রেখে যান মারাত্নক আহত কমান্ডারের কাছে। নূর মোহাম্মাদ মৃত্যুপথযাত্রী হয়েও এসএলআর নিয়ে শেষবারের মত ঝাঁপিয়ে পড়েন হানাদারদের উপর, আর সেখানেই তিনি শহীদ হন তিনি। পরে নিকটবর্তী একটি ঝোঁপের মধ্যে এই বীরের মৃতদেহ পাওয়া যায়।

নূর মোহাম্মদ সঙ্গী সৈনিকদের প্রতি যে-ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন এবং মৃত্যু নিশ্চিত বুঝেও হানাদারদের উপর একাই ঝাঁপিয়ে পড়ে বীরত্ব ও দেশপ্রেমের যে-নিদর্শন রেখেছেন, এর কোন তুলনা হয় না। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন এদেশের মাটিতে নূর মোহাম্মদের রক্তের গন্ধ পাওয়া যাবে। যতদিন এ-জাতি থাকবে ততদিন নূর মোহাম্মদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

(সংকলিত)

Loading...