loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • মিলানকে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচ আগেই ইন্টারের ২০তম শিরোপা জয়

  • লেভাকুজেনের ৪৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড

  • ফুলহ্যামকে হারিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে লিভারপুল

  • তাইওয়ানে আবারও ভূমিকম্পের আঘাত

  • প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরকালে পাঁচটি দলিল স্বাক্ষর ও বহুমুখী সহযোগিতার সম্ভাবনা

ফ্রান্সের বিপক্ষে কখনোই হারেনি আর্জেন্টিনা!


ফ্রান্সের বিপক্ষে কখনোই হারেনি আর্জেন্টিনা!

ফুটবল বিশ্বকাপে মাত্র দু’বার ফ্রান্সের মুখোমুখি হয়েছিলো আর্জেন্টিনা। সেই দু’বারই ফাইনালে খেলে আর্জেন্টিনা। ১৯৩০ ও ১৯৭৮ সালে অবশ্য গ্রুপ পর্বে দেখা হয়েছিলো দু’দলের। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা প্রথম বিশ্বকাপ জয় করে।

শনিবার (৩০ জুন) ফ্রান্স বনাম আর্জেন্টিনার মধ্যকার হাই ভোল্টেজ ম্যাচ দিয়ে ফুটবল বিশ্বকাপের নক আউট পর্ব শুরু হচ্ছে। কাজানে অনুষ্ঠেয় ম্যাচটির মাধ্যমে অতীত ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে চায় ফ্রান্স। এর আগে বিশ্বকাপে কিংবা কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করতে পারেনি ফ্রান্স। যাহােক, সমালোচকদের কঠাের দৃষ্টিকে পেছনে ফেলে নিজেদের প্রমাণে এবার বদ্ধ পরিকর লাস ব্লুজরা।

যদিও এ-পর্যন্ত রাশিয়া বিশ্বকাপে দিদিয়ার দেশ্যমের দল সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি, তবে তিন ম্যাচে সাত পয়েন্টসহ গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবেই নক আউট পর্বে গেছে ফ্রান্স। মঙ্গলবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে ফ্রান্স ডেনমার্কের সাথে গোলশূন্য ড্র করে প্রথম রাউন্ড শেষ করেছে। আর এতেই গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে ডেনমার্কের পরের রাউন্ড নিশ্চিত হয়েছে।

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে ফ্রান্স-যে খুব সতর্ক অবস্থায় আছে তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের সেন্টার ব্যাক স্যামুয়েল উমতিতি। নক আউট পর্বের আগে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের প্রায় পুরোটা সময়ই উমতিতিকে তাঁর বার্সেলোনা সতীর্থ লিওনেল মেসিকে নিয়ে কথা বলতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দুই দলের লড়াইয়ে সকলের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন আর্জেন্টাইন এই সুপারস্টার। তবে উমতিতি মনে করেন সব কিছুর পরে ফলাফলই মূখ্য।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা উন্নতি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কারণ আমরা জানি এটা আমাদের পক্ষে করা সম্ভব। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ম্যাচে জয়ী হওয়া। অনেকেই আমাদের খেলা নিয়ে সন্তুষ্ট না হলেও এদিন জিততে পারলে তাঁরাও খুশি হবে। আমি আর শুনতে চাইনা যে আমাদের মধ্যে ফুটবলীয় দক্ষতার অভাব রয়েছে। আর্জেন্টিনাকে বিদায় করে সামনে এগিয়ে যাওয়া অবশ্যই পুরো দলকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাবে। এখন আমাদের সামনে একটাই লক্ষ্য - সামনে এগিয়ে যাওয়া। আমার কাছে ব্রাজিল, পেরু কিংবা মেক্সিকোকে বিদায় করা যতটা না গুরুত্বপূর্ণ তার চেয়ে আর্জেন্টিনার মতো দলকে হারিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়া সত্যিই বিশেষ কিছু।’’

ফ্রান্সের নক আউট পর্বে উত্তরণ সহজ হলেও আর্জেন্টিনার জন্য সেটা ছিল বেশ নাটকীয়। গ্রুপের শেষ ম্যাচে যেখানে জয় ছাড়া বিকল্প কিছু ছিলো না, সেখানে ৮৪ মিনিট পর্যন্ত নাইজেরিয়ার সাথে ১-১ গোলে অমীমাংসিত ছিলো ম্যাচটি। মার্কোস রোহো সেই সময় ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। দারুন এক ভলিতে গোল উপহার দিয়ে তিনি জর্জ সাম্পাওলির দলকে নক আউট পর্বে নিয়ে যান।

দারুন উত্তেজনাকর ম্যাচটি শেষে আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার গিওভানি লো সেলসো বলেছেন, ‘‘আমি এটাকে অকল্পনীয় কোন ম্যাচ বলবোনা। তবে নক আউট পর্বে যাওয়ার পথটা মোটেই সহজ ছিলো না আমাদের। অবশ্যই এই মুহূর্তটা কিছুটা অস্বস্তিদায়ক ছিল। কারণ সবকিছুই ম্যাচের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছিলো। কিন্তু একটি দল হিসেবে যা যা করা প্রয়োজন - আমরা তা করেছি। ম্যাচে জয়লাভের জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। এখন ফ্রান্সকে মোকাবেলা করার জন্য আমরা আরো বেশি শক্তিশালী দল হয়ে উঠেছি।’’

ডেনমার্কের বিপক্ষে ফ্রান্সের হতাশাজনক পারফরমেন্সে পরে আবারো মূল একাদশে ফিরেছেন পল পগবা। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার মধ্যমাঠ এখনো সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি। আর সেই সুযোগটাই কাল কাজে লাগাতে পারেন পগবা। সুপারস্টার মেসি রাশিয়ায় নিজের পারফরমেন্স দিয়ে সমর্থকদের সন্তুষ্ট করতে না পারলেও নাইজেরিয়ার বিপক্ষে যে-গোলটি তিনি করেছেন তাতে আরো একবার প্রমাণিত হয়েছে কেন মেসি সেরা।

এবার নিয়ে ১১বার ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে। দক্ষিণ আমেরিকান জায়ান্টরা ছয়টিতে জয়ী ও দুটিতে ড্র করেছে। আর্জেন্টিনা তাঁদের শেষ ১৩টি বিশ্বকাপের ১২টিতেই প্রথম পর্ব পার করেছে। শুধুমাত্র ২০০২ সালে নক আউটের আগে তাঁদের বিদায় নিতে হয়েছিলো। শেষ চারটি নক আউট ম্যাচে তাঁরা মাত্র দুটি গোল দিতে পেরেছে। নক আউট পর্বে মেসি এখনও পর্যন্ত কোন গোল করতে পারেননি। অবশ্য ফ্রান্সের বিপক্ষে হওয়া সর্বশেষ ম্যাচে তিনিই গোল করেছিলেন। ২০০৯ সালের প্রীতি ম্যাচটিতে ২-০ গোলে জয়ী হয়েছিলো আর্জেন্টিনা।

ফ্রান্সের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের পরিসংখ্যানে আর্জেন্টিনা বেশ এগিয়ে আছে । এখন পর্যন্ত নয়টি প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনা হেরেছে মাত্র দুবার। চারটিতে জিতেছে। বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়।এছাড়া ১৯৮৬ সালের পরে ফ্রান্সের কাছে আর্জেন্টিনা হারেনি। অবশ্য এরপর দুই দলের দেখাই হয়েছে দুবার। সর্বশেষ দেখা ২০০৯ সালে। গত নয় বছরে দুই দলের কোনো ম্যাচ হয়নি।

ফ্রেঞ্চ তারকা অলিভার জিরুদ বড় কোন টুর্নামেন্টে ৩৫৭ মিনিট কোন গোলের দেখা পাননি। সর্বশেষ আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ইউরো ২০১৬’র কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি গোল করেছিলেন। এই ম্যাচের মাধ্যমে ফ্রান্সের কোচ দেশ্যমও অনন্য এক রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। জাতীয় দলের কোচ হিসেবে সর্বোচ্চ ৮০টি ম্যাচে দায়িত্ব পালনের নতুন রেকর্ড গড়ে তিনি পিছনে ফেলবেন রেমন্ড ডমিনিককে।

- তথ্যসূত্র: খেলাধুলা-বিষয়ক ওয়েবসাইট

Loading...