loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • কুমিল্লা ইপিজেড-এ চামড়া কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান

  • নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলংকা

  • অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা

  • ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

  • প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনার জয়

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারালো টাইগাররা


শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারালো টাইগাররা

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ২৪৯/৭ (৫০ ওভার) (লিটন ৪১, শান্ত ৬, মিঠুন ১, মুশফিক ৩৩, সাকিব ০, ইমরুল ৭২*, মাহমুদউল্লাহ ৭৪, মাশরাফি ১০, মিরাজ ৫*; আফতাব ৩/৫৪, মুজিব ১/৩৫, গুলবাদিন ০/৫৮, নবী ০/৪৪, রশিদ ১/৪৬, শেনওয়ারি ০/৯)
আফগানিস্তান: ২৪৬/৭ (৫০ ওভার) (শাহজাদ ৫৩, ইহসানুল্লাহ ৮, রহমত ১, হাসমতুল্লাহ ৭১, আসগর ৩৯, নবী ৩৮ শেনওয়ারি ২৩*, রশিদ ৫, গুলবাদিন ০; মাশরাফি ২/৬২, অপু ০/২৯, মোস্তাফিজ ২/৪৪, মিরাজ ০/৩৬, সাকিব ১/৫৫, মাহমুদউল্লাহ ১/১৭)
ফল: বাংলাদেশ তিন রানে জয়ী
ম্যান অফ দি ম্যাচ: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

বাংলাদেশকে হারাতে শেষ ওভারে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিলো আট রান, উইকেট ছিলো ছয়টি। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিং জাদুই আটকে দিলো তাঁদের। ‘দি ফিজ’-এর কৌশলী বোলিংয়ে তিন রানে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

২০১৮ এশিয়া কাপে টানা দুই ম্যাচ হারে পুরো টাইগার-শিবিরেই অস্বস্তি বিরাজ করছিলো। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানদের কাছে হারের পর ভারতের বিপক্ষেও মাশরাফিরা পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরোতে পারেননি। অবশেষে রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার ম্যাচে সেই আফগানদের হারিয়েই বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠলো লাল-সবুজের দল। ২৪৯ রান করেও মাশরাফি, মোস্তাফিজদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে দারুণ এক জয় এলো। 

ফাইনালের টিকিট পেতে হলে ২৬ সেপ্টেম্বর সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে হবে টাইগারদের।

রোববার মাশরাফিদের দেওয়া ২৫০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা আফগানরা সাত উইকেটের বিনিময়ে সংগ্রহ করেছে ২৪৬ রান। স্কোরই বলছে লক্ষ্যটা আহামরি কিছু ছিলো না। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি আফগানিস্তানের। ফাইনালে উঠার মিশনে দু’দলের জন্যই ম্যাচটি হয়ে উঠেছিলো ‘বাঁচা-মরার’। 

এরকম একটি ম্যাচে বল হাতে এসেই উইকেটের দেখা পান টাইগারদের কাটার স্পেশালিস্ট মোস্তাফিজুর রহমান। পঞ্চম ওভারে নিজের প্রথম বলে ইহসানুল্লাহকে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচে পরিণত করেন ফিজ। ১১ বল খেলে দুইটি চারে আট রান সংগ্রহ করে দলকে ২০ রান এনে দিয়ে ফেরেন ইহসানুল্লাহ। অবশ্য আফগানদের প্রথম উইকেটের পতন আগের ওভারেই হতে পারতো - যদি নাজমুল ইসলাম অপুর বলে মিডঅনে মোহাম্মদ শাহজাদের ক্যাচটি মোহাম্মদ মিঠুন ফেলে না দিতেন।

ইহসানুল্লাহ ফেরার পরে ছয় রান যোগ হতেই ব্যক্তিগত এক রানে ফেরেন আফগান টপ অর্ডার রহমত শাহ। অষ্টম ওভারে অপুর দ্বিতীয় বলে প্রথম রান কাভারের পরে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ক্রিজের অপর প্রান্তে থাকা মোহাম্মদ শাহজাদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে সাকিবের সরাসরি থ্রোতে কাটা পড়েন রহমত।

তৃতীয় উইকেটে হাসমতউল্লাহ শহিদিকে সঙ্গে নিয়ে টাইগারদের ওপর ব্যাট হাতে চোখ রাঙাচ্ছিলেন মারকুটে ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ। কিন্তু তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ব্যক্তিগত ৫৩ রানে তাঁকে বোল্ড আউট করে দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন ব্যাটিংয়ে টাইগারদের পথ দেখানো মাহমুদউল্লাহ। শাহজাদ ফিরে যাওয়ার আগে এই জুটি সংগ্রহ করে ৬৩ রান। 

এ-ম্যাচেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ত্রয়োদশ অর্ধশত রানের দেখা পেয়েছেন শাহজাদ।

এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক আসগর আফগানকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা ঘুরিয়ে যাচ্ছিলেন শহিদি। তাঁদের সেই যাত্রাও থামিয়ে দেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। ৪০তম ‍ওভারে তার চতুর্থ ডেলিভারিতে ব্যক্তিগত ৩৯ রানে মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দি হন আসগর। আবার জেগে ওঠে বাংলাদেশ দল।

পঞ্চম উইকেটটিও আসে মাশরাফির কল্যাণে। ৪৪তম ওভারে নিজের চতুর্থ বলে ক্লিন বোল্ড করেন সেট ব্যাটসম্যান শহিদকে। এই উইকেট দিয়েই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ২৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন ম্যাশ।

ষষ্ঠ উইকেটেও মোহাম্মদ নবী ও সামিউল্লাহ শেনওয়ারি চোখ রাঙাচ্ছিলেন। কিন্তু ৪৮তম ওভারে সাকিব জাদুতে ব্যক্তিগত ৩৮ রানে নবী শান্তর হাতে ধরা পড়লে স্বস্তি ফেরে লাল সবুজের দলে।

আফগানদের হারের কফিনের শেষ পেরেকটি ঠোকেন মোস্তাফিজ। শেষ ওভারে বল হাতে এসে কাটারের পসরা সাজিয়ে নিজের দ্বিতীয় বলে রশিদ খানকে পাঁচ রানে কট অ্যান্ড বোল্ড করলে সেই উল্লাস আরও বেড়ে যায়। তবে জয় নিশ্চিত হয়নি। কেননা শেষ চার বল থেকে তাঁদের প্রয়োজন ছিলো ছয় রান।

কিন্তু আফগানদের দুর্ভাগ্য। মোস্তাফিজ এমনই কাটার জাদু দেখেলেন যে - পুরোপুরি পরাস্ত হলেন সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ও গুলবাদিন নাইব। ১৯ বলে অপরাজিত ২৩ রান করেও চোখের সামনে মুঠো গলে ম্যাচটি বেরিয়ে যেতে দেখলেন সেট ব্যাটসম্যান শেনওয়ারি।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। দুই উইকেট হারানোর পরে ১৯ ও ২১তম ওভারে পরপর সাকিব, মুশফিক ও লিটন দাসের উইকেট পড়ার পর ভীষণ চাপে পড়ে যায় টাইগার অ্যান্ড কো.। দৃঢ় ব্যাটিংয়ে সেখান থেকে দলকে টেনে তুলে ২৪৯ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েস।

রিয়াদের ব্যাট থেকে এসেছে অমূল্য ৭৪ রান। তবে শেষ পর্যন্ত উইকেটে থাকতে পারেননি তিনি। ৪৭তম ওভারে আফতাব আলমের বলে রশিদ খানের ক্যাচ হয়ে ফিরেছেন। তবে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ছিলেন ইমরুল। দায়িত্বশীল ব্যাটে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চদশ অর্ধশত রান তুলে নিয়ে সংগ্রহ করেছেন মহামূল্যবান অপরাজিত ৭২ রান। দু’জনের এমন দায়িত্বশীল ব্যাটে সাত উইকেটের বিনিময়ে আফগানদের বিপক্ষে লড়াই করার মতো পুঁজি পায় স্টিভ রোডসের শিষ্যরা।

১৯তম ওভারে রশিদ-ঘূর্ণিতে ক্রমাগত বিপজ্জনক হয়ে ওঠা লিটন ৪১ রানে ফিরে গেলেও তাঁর ওই ওভারে হন্তদন্ত হয়ে ছোটা সাকিব (০) ও একওভার বিরতিতে সেট ব্যাটসম্যান মুশফিক (৩৩) রান আউট না হলে দলীয় সংগ্রহ আরও সমৃদ্ধ হতে পারতো।

এদিকে শতক, অর্ধশতক করতে না-পারলেও এই ম্যাচটি দিয়েই বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচ হাজার রানের ঘরে ঢুকে গেছেন মুশফিকুর রহিম। ভালো ব্যাটিংয়ের সঙ্গে একটি উইকেট ও একটি ক্যাচ নিয়ে ম্যাচ-সেরা হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

Loading...