বুধবার (১০ অক্টোবর) ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আনা পৃথক মামলার রায় ও আদেশের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট নজীরবিহীন গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আনা পৃথক মামলার বিচার শেষ হয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর।
রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে ২১ অগাস্টের ওই ঘটনায় আনা পৃথক মামলায় একই সঙ্গে বিচার অনুষ্ঠিত হয়।
ভয়াবহ, পৈশাচিক, নারকীয় ও বর্বরোচিত এই গ্রেনেড হামলার বিচারের রায়ে দেশবাসীর দীর্ঘ-প্রতীক্ষার অবসান হবে । ওই ঘৃণ্য হামলায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন পাঁচ শতাধিক লোক।
তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচন্ড শব্দে তাঁর শ্রবণশক্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
মামলার আসামিদের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর অন্যতম।
মামলা ভিন্নখাতে নেয়া, তদন্ত ও সাক্ষ্যগ্রহণের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অবশেষে রায় হতে যাচ্ছে জঘন্যতম গ্রেনেড হামলার। সেই হামলায় আহত অনেক ব্যক্তি এখনো শরীরে স্প্রিন্টার নিয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। আজও চোখের পানি ফেলেন নিহতদের স্বজনরা। বিচারের জন্য তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে ১০ অক্টোবর।
রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে বলে দাবি করেছেন।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলগণ খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
২১ অগাস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫২ জন। এরমধ্যে তিনজন আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ায় তাঁদেরকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এই তিনজন আসামি হলেন - জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও তাঁর সহযোগী শরীফ সাহেদুল আলম বিপুল।
এখন ৪৯ জন আসামির বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জঙ্গি তাজউদ্দিনসহ ১৮ জন পলাতক। বিএনপি নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন।
এর মধ্যে ওই ঘটনায় হত্যা, হত্যা-চেষ্টা, ষড়যন্ত্র, ঘটনায় সহায়তাসহ বিভিন্ন অভিযোগে রয়েছে একটি মামলা - যেটিতে বর্তমানে আসামির সংখ্যা ৪৯ জন। একই ঘটনায় অপর একটি মামলায় আসামির সংখ্যা ৩৮ জন।
