loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • শেষ মুহূর্তের গোলে ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

  • আর্সেনালের কাছে পাঁচ গোলে উড়িয়ে গেলো চেল্সি

  • হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

  • বেপজা অর্থনৈতিক জোনে চীনা কোম্পানির ১৯.৯৭ মি. ডলার বিনিয়োগ

  • কাতারের আমিরের ঢাকা ত্যাগ

আজ শহীদ আসাদ দিবস


আজ শহীদ আসাদ দিবস

আজ (২০ জানুয়ারি) শহীদ আসাদ দিবস। তদানিন্তন পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতনের দাবিতে মিছিল করার সময় ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। শহীদ আসাদ হচ্ছেন ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনের পথিকৃৎ তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের তিন শহীদদের একজন। অন্য দু’জন হচ্ছেন শহীদ রস্তম ও শহীদ মতিউর।

দিবসটি স্মরণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

শহীদ আসাদ ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে মৃত্যুকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা দাবির স্বপক্ষে ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আসামীদের মুক্তি দাবির আন্দোলনে আসাদের মৃত্যু পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তোলে - যা পরবর্তী সময়ে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে তরান্বিত করে।

১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রদের ১১ দফা ও বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্ররা দেশব্যাপী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দেয়। তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খান ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ১৪৪ ধারা আইন জারি করেন।

পূর্ব কর্মসূচি অনুসারে ২০ জানুয়ারি দুপুরে ছাত্রদেরকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পার্শ্বে চানখাঁরপুল এলাকায় মিছিল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন আসাদুজ্জামান। পুলিশ তাদেরকে চানখাঁরপুলে বাধা দেয় ও চলে যেতে বলে। কিন্তু বিক্ষোভকারী ছাত্ররা সেখানে প্রায় এক ঘন্টা অবস্থান নেয় এবং পরে আসাদ ও তার সহযোগীরা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে মিছিল সহকারে অগ্রসর হয়। ওই অবস্থায় খুব কাছ থেকে আসাদকে লক্ষ্য করে এক পুলিশ অফিসার গুলিবর্ষণ করে। তৎক্ষণাৎ গুরুতর আহত অবস্থায় আসাদকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাজারো ছাত্র-জনতা আসাদের মৃত্যুতে একত্রিত হয়ে পুনরায় মিছিল বের করে ও শহীদ মিনারের পাদদেশে জমায়েত হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি সারাদেশে ধর্মঘট আহ্বান করে। ধর্মঘটের শেষ দিনে পুলিশ পুনরায় গুলিবর্ষণ করে।

২০১৮ সালে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য শহীদ আসাদকে মরণোত্তর সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিস্বরূপ স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়।

আন্দোলনে পুলিশের গুলিবর্ষণে আসাদের মৃত্যুর পর বাংলাদেশের অনেক জায়গায় জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আইয়ুব খানের নামফলক পরিবর্তন করে শহীদ আসাদ রাখা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় সংসদ ভবনের ডান পার্শ্বে মোহাম্মদপুরে অবস্থিত আইয়ুব গেটের নাম পরিবর্তন করে আসাদ গেট রাখা হয়।

প্রতি বছর জানুয়ারির ২০ তারিখে শহীদ আসাদের মহান আত্মত্যাগ ও অবদানকে বাঙালি জাতি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে গভীর শ্রদ্ধার সাথে শহীদ আসাদ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। 

দিবসটি উপলক্ষে আজ বিভিন্ন ছাত্র ও যুব সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শহীদ আসাদের ৫০তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে “শহীদ আসাদ দিবস ও ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের ৫০ বছর পালন জাতীয় কমিটি” আজ সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে নির্মিত আসাদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে ও আসাদের সংগ্রামী স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবে।

একই সাথে জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে দুপুরে নরসিংদীর শিবপুরে শহীদ আসাদের কবরেও পুষ্পস্তবক প্রদান করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। দিবসটি স্মরণে জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে পোস্টার ও স্মরণিকা সুভ্যেনির প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে ২৪ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দ্বীপে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

Loading...