একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বুধবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় শুরু হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ৯ জানুয়ারি সংসদের এই অধিবেশন আহ্বান করেছেন।
সংবিধান অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশন শুরুর দিন এবং একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি সংসদে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দিবেন। তবে সংসদীয় রেওয়াজ অনুযায়ী চলমান সংসদের কোনো এমপি’র মৃত্যু হলে অধিবেশন শুরুর পর শোক প্রস্তাব গ্রহণ করে ওই দিনের মতো অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ- ১ থেকে নির্বাচিত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত ৩ জানুয়ারি ইন্তেকাল করেছেন। ফলে রেওয়াজ অনুযায়ী শুরুর পর শোক প্রস্তাব গ্রহণ করে অধিবেশন কিছুক্ষণের জন্য মুলতবির পর তা পুনরায় শুরু করা হবে। তখন রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেবেন।
এছাড়া সংসদের প্রথম অধিবেশনে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৭৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নতুন সংসদের প্রথম বৈঠকে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করতে হয়। এ-জন্য কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে নোটিশ দিতে হয়। এজন্য একজন প্রস্তাবক, একজন সমর্থক ও প্রার্থীর সম্মতি লাগবে।
বছরের প্রথম ও একাদশ সংসদের প্রথম হিসাবে আসন্ন অধিবেশনের মেয়াদকাল দীর্ঘ হবে। তবে সংসদ কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদ ও কার্যক্রম চূড়ান্ত করা হবে। সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে ইতোমধ্যে এই অধিবেশন শুরুর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সংসদ সচিবালয়। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
গত ৩ জানুয়ারি সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে চার ধাপে একাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত ২৯৮ জন সদস্যের মধ্যে ২৮৯ জন শপথ নেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংবিধান ও কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী প্রথমে নিজে শপথ গ্রহণ করেন ও শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যদের শপথ বাক্য পাঠান করান।
সেদিন অসুস্থতার কারণে আওয়ামী লীগের সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম শপথ নিতে পারেননি। পরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এদিন পরে জাতীয় পার্টির হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এ কে এম রহমতুল্লাহ শপথ নেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর ২৯৯টি সংসদীয় আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আগে একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছিল। সেই আসনে গত ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ভােটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইউনুস আলী সরকার নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া নির্বাচনের দিন ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনের তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত হওয়ায় ওই আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। তবে এর মধ্যে ওই আসনের স্থগিত ভোটকেন্দ্রের নির্বাচন হয়েছে। সেই নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বিএনপি’র উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া বিজয়ী হয়েছেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৮টি আসন। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২২টি আসন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বিএনপি পেয়েছে ছয়টি আসন। ওয়ার্কার্স পাটি পেয়েছে তিনটি আসন, গণফোরাম দুইটি (এর মধ্যে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মোহাম্মদ মনসুর এবং গণফোরামের নিজস্ব প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে মোকাব্বির খান নির্বাচিত হয়েছেন), বিকল্পধারা বাংলাদেশ দুইটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) দুইটি, তরিকত ফেডারেশন একটি, জাতীয় পার্টি (জেপি) একটি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তিনটি আসনে জয়ী হন।
