প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গত সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংলাপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জোট এবং সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সম্মানে এক চা-চক্রের আয়োজন করেন। শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণভবনের দক্ষিণ লনের সবুজ চত্বরে আয়োজিত এই চা চক্রে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে - জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-ইনু) জাপা (মঞ্জু), জাসদ (আম্বিয়া), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, তরিকত ফেডারেশন ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
চা-চক্রে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান স্থলে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তিনি বিভিন্ন টেবিলে ঘুরে ঘুরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, বেগম মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ওবায়দুল কাদের, মুহম্মদ ফারুক খান, আব্দুল মতিন খসরু, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ড. হাছান মাহমুদ, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শম রেজাউল করিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ও জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, রুহুল আমিন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, সুনীল শুভ রায়, জাপা (মঞ্জু) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাসদ (আম্বিয়া) নেতা মইনুদ্দিন খান বাদল ও নাজমুল হক প্রধান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
এছাড়া বিকল্পধারার সভাপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব.) এম এ মান্নান, মাহী বি. চৌধুরী, শমসের মোবিন চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোট সভাপতি মিজবাহুর রহমান চৌধুরী, তরিকত ফেডারেশন সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, সামাবাদী দল সভাপতি দিলীপ বড়ুয়া, বিএনএফ সভাপতি ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা, অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতা, ১৪ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে গণভবনের দক্ষিণ লনের সবুজ চত্বর আবহমান গ্রাম-বাংলার সাধারণ বাড়ি-ঘরের আদলে সাজানো হয়। কুড়েঘরের সঙ্গে বসার জন্য মাদুর ও মোড়া পাতা হয়। খাবার পরিবেশনের জন্য মাটির পাত্র ব্যবহার করা হয়। এ-সময় দেশাত্ববোধক সঙ্গীত বাজানো হয়। আপ্যায়নে ছিল ভাপা, চিতই, পাটিসাপ্টা ও পুলিসহ হরেকরকম দেশি পিঠা, চটপটি, ফুচকা, মুড়ি, মোয়া, নাড়ু ও জিলাপি ছাড়াও ছিল কাবাব ও নান রুটি।
পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষে চা চক্রে যোগদানকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “আজকের অনুষ্ঠানে আপনারা স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন এবং আপনাদের উপস্থিতি খুবই উৎসাহব্যঞ্জক।”
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী কাদের বলেন, “আমরা শুধু কুশলই বিনিময় করিনি, আমরা শীতের পিঠা খেতে খেতে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে রাজনৈতিক বিষয়ে পরস্পরের সঙ্গে আমাদের অভিমত শেয়ার করেছি। আমি আশা করি প্রধানমন্ত্রীর এই শুভ উদ্যোগে আপনারা সকলেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন। আমাদের সকল নেতৃবৃন্দের পক্ষে আমি এজন্য আপনাদের সবার কাছে সব রকম সহযোগিতা কামনা করছি।”
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর চা চক্রে ৫৪টি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ ছাড়া সকল রাজৗনতিক দলই চা চক্রে যোগদান করে। গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে নভেম্বরের ১ থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছেন।