চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ মাঠের সুলতান মঞ্চ চত্বরে রোববার (২ মার্চ) শুরু হচ্ছে দশদিনব্যাপী ‘সুলতান মেলা’। এদিন বিকেলে মেলা উদ্বোধন করবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. লোকমান হোসেন মিয়া। সভাপতিত্ব করবেন জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি আনজুমান আরা। জেলা প্রশাসন ও সুলতান ফাউন্ডেশন যৌথভাবে মেলার আয়োজন করেছে। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
মেলাকে ঘিরে পুরো শহরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এবারের মেলায় থাকছে, বিভিন্ন গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসব - হাডুডু, কুস্তি, ঘোড়ার গাড়ির দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই, দড়ি টানাটানি, ভলিবল খেলা, নারীদের ভলিবল প্রতিযোগিতা, দড়ি টানাটানি, কাবাডি, শরীর গঠন প্রতিযোগিতা, লাঠিখেলা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, এস এম সুলতান ও বরেণ্য চিত্রশিল্পীদের চিত্র প্রদর্শনী, কলাগাছে ওঠা, বাঁশের লাঠির দৌড়, জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবৃত্তি, নাটক, জারিগান, গম্ভীরাগান, লালনগীতি, সুলতান স্বর্ণপদক প্রদান ও সুলতানের জীবন ও দর্শন নিয়ে সেমিনার।
১২ মার্চ মেলার সমাপনী ও সুলতান পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিএম ইউসুফ আলী।
এবার সুলতান পদক পাচ্ছেন খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী মোস্তফা মনোয়ার।
বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ অগাষ্ট নড়াইল শহরের মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক অর্জন করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট অফ আর্টিষ্ট হিসেবে স্বীকৃতি পান এবং ১৯৮৬ সালে চারুশিল্পী সংসদ সম্মননা পান।
তাঁর একক চিত্র প্রদর্শনী ১৯৪৬ সালে ভারতের সিমলায়, ১৯৪৮ সালে লাহোরে, ১৯৪৯ সালে করাচিতে, ১৯৫০ সালে লন্ডনে, ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে এবং ১৯৮৭ সালে ঢাকাস্থ জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দেশ-বিদেশে বহুবার তাঁর ছবি প্রদর্শিত হয় যা সবার নজর কাড়ে।
১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর মহান এই শিল্পী দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টে ভোগার পর যশোর সম্মিলিত হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সুলতানের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তাঁর নিজ বাড়িতে এস এম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা নির্মিত হয়েছে।
