নিজেদের মাটিতে দারুণ ছন্দে রয়েছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। গত ১৫ ম্যাচের মাত্র একটিতে হেরেছে দলটি। সাম্প্রতিক ইতিহাস পিএসজি’র হয়ে কথা বললেও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড নতুন ইতিহাস তৈরি করলো বুধবার (৬ মার্চ) রাতে। রাশফোর্ডের শেষ মুহূর্তের নাটকীয় গোলে রাউন্ড অফ সিক্সটিনের দ্বিতীয় লেগে পিএসজিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে অ্যাওয়ে গোলে এগিয়ে থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ম্যান ইউ।
ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম লেগে দুই বা তার বেশি গোলে পিছিয়ে থেকে নকআউট পর্বে জয় পাওয়ার রেকর্ড খুব কমই আছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যান ইউ সর্বশেষ অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতেছিল আট বছর আগে শালকের বিপক্ষে।
প্রথম লেগে কাভানি-নেইমারবিহীন পিএসজি’র কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল ম্যান ইউ। এদিন পিএসজির হয়ে কাভানি থাকলেও ছিলেন না একাদশে। তবে প্রাক ডি প্রিন্সেস স্টেডিয়ামে কঠিন মিশন নিয়ে মাঠে নামে রেড ডেভিলরা।
শুরুটা হয় গোল দিয়েই; কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুই মিনিটের মাথায় পিএসজি’র ডিফেন্ডারের ভুল। টিলো কেয়ারের লক্ষ্যহীন ব্যাকপাসে বল পেয়ে যান রোমেলু লুকাকু। ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষক বুফনকে কাটিয়ে ম্যান ইউকে লিড এনে দেন এই বেলজিয়ান স্ট্রাইকার।
তবে সমতায় ফিরতে সময় নেয়নি পিএসজি। ১২ মিনিটে দুর্বল ডিফেন্সের সুযোগে কিলিয়ান এমবাপ্পের পাস থেকে গোল করতে ভুল করেননি জুয়ান বার্নাট। ১-১ গোলে সমতায় পিএসজি। দুই লেগ মিলে পিএসজির লিড তখন ৩-১ গোলের।
২০ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল পিএসজি, তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন বার্নাট। ৩০ মিনিটে আবারও লিড নেয় ম্যান ইউ। এবারও পিএসজি’র ভুল। রাশফোর্ডের নেওয়া শট বুফন ধরতে ব্যর্থ হন। ফিরতি বল পিএসজি’র জালে জড়িয়ে লুকাকুর গোলে এগিয়ে যায় ম্যান ইউ। প্রথমার্ধে বলার মতো আর কোনো গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো দলই।
বিরতির পর বল দখলে নিয়ে খেলতে থাকে পিএসজি। ৫৫ মিনিটে গোলের দেখা পেয়েছিলেন ডি মারিয়া। তবে অফ সাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়। ৮৪ মিনিটে গোলের আরও একটি সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিক দল; তবে এবার ব্যর্থ হন এমবাপ্পে।
ম্যাচের নাটকীয়তা তৈরি হয় শেষ মিনিটে। ম্যান ইউ ডালটের নেওয়া শট পিএসজি’র ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। রেফারি কর্নারের সিদ্ধান্ত দেন। এরপর কি মনে করে যেন ভিডিও রিভিউতে যান রেফারি। সেখানে হ্যান্ডবলের কারণে কর্নারের সিদ্ধান্ত বদলে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। আর তাতে গোল করতে ভুল করেননি রাশফোর্ড।
৩-১ গোলে এগিয়ে যায় ম্যানইউ। দুই লেগ মিলে ৩-৩ সমতায় ম্যাচ। এরপর আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই। ফলে প্রতিপক্ষের মাটিতে এক গোল বেশি করায় শেষ আট নিশ্চিত করে সোলশারের শিষ্যরা।
শেষ ষােল’র আরেক ম্যাচে এএস রোমাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে এফসি পোর্তো। নির্ধারিত সময়ে খেলায় ২-১ গোলে পোর্তো জিতলেও দুই লেগ মিলে গোলসংখ্যা সমান থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে ভিএআর সহযোগিতায় পাওয়া পোনাল্টি থেকে গোল করে দলকে কোয়ার্টার ফাইনালে উন্নীত করেন অ্যালেক্স টেলেক্স।