সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ২৮০/৫, ৫০ ওভার (সোহেল ১০১*, উমর ৪৮, কালটার-নাইল ২/৬১)
অস্ট্রেলিয়া: ২৮১/২, ৪৯ ওভার (ফিঞ্চ ১১৬, শন ৯১*, আব্বাস ১/৪৪)
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা: অ্যারন ফিঞ্চ (অস্ট্রেলিয়া)
সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া
হারিস সোহেলের সেঞ্চুরি বিফল করে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়াকে আট উইকেটের সহজ জয় এনে দিলেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও শন মার্শ। ফিঞ্চ ১১৬ রানে আউট হন; ৯১ রানে অপরাজিত ছিলেন শন। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
শুক্রবার (২২ মার্চ) শারজাহতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক শোয়েব মালিক। দুই ওপেনার ইমাম উল হক ও শান মাসুদ ৩৫ রানের জুটি গড়েন। ইমাম ১৭ রানে থামলেও রানের চাকা সচল রাখেন মাসুদ; তবে বেশি দূর যেতে পারেননি। ৬২ বলে ৪০ রান করে আউট হন তিনি।
এরপর দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান সোহেল ও উমর আকমল। দেখেশুনেই রান করছিলেন তাঁরা। ধীরে ধীরে এই জুটি বড় হচ্ছিলো। তবে দলীয় ১৭৬ রানে ও ৩৮তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার কটলার নাইল। তিনটি ছক্কায় ৫০ বলে ৪৮ রান করা আকমলকে ফিরিয়ে দেন তিনি।
পরে অধিনায়ক মালিক ১১ রানে থামলেও সোহেলকে সঙ্গ দিয়েছেন ফাহিম আশরাফ ও ইমাদ ওয়াসিম। পঞ্চম উইকেটে আশরাফকে নিয়ে আট ওভারে ৫৭ ও ষষ্ঠ উইকেটে ওয়াসিমকে নিয়ে তিন ওভারে ৩৩ রান যোগ করেন সোহেল। শেষ ওভারের প্রথম বলে ২৭তম ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম শতরান তুলে নেন সোহেল। ১০১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তাঁর ১১৫ বলের ইনিংসে ছয়টি চার ও একটি ছক্কা ছিল। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ২৮০ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।
অস্ট্রেলিয়ার কালটার-নাইল দুইটি উইকেট নেন।
২৮১ রানের লক্ষ্যে ভালো শুরু করে অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার উসমান খাজা ও ফিঞ্চ। ভারতের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত সিরিজে দুইটি সেঞ্চুরিতে ৩৮৩ রান করেছিলেন খাজা। দুর্দান্ত ফর্মে থেকেই এই সিরিজটি শুরু করেন তিনি; তবে এই ম্যাচে ২৪ রানে বেশি করতে পারেননি। দলীয় ৬৩ রানে খাজা ফিরে গেলে ক্রিজে ফিঞ্চের সঙ্গী হন শন। দু’জনে পাকিস্তান বোলারদের বিপক্ষে দেখেশুনে খেলতে থাকেন।
দ্রুত উইকেট ও কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিয়ে রান তোলায় মনোযোগী হন ফিঞ্চ ও শন। এতে দলের স্কোর সহজেই এগিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে দু’শ ছাড়িয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ। তখন ফিঞ্চ ৯৬ ও শন ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
৩৯তম ওভারের তৃতীয় বলে মালিককে ছক্কা মেরে ১০৫ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বাদশ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পান ফিঞ্চ। সেঞ্চুরি তুলে দলের জয় নিশ্চিতের পথেই হাঁটছিলেন ফিঞ্চ। যাহোক, ১১৬ রানে আউট হলেও এই ম্যাচের মাধ্যমে তাঁকে নিয়ে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিলেন ফিঞ্চ। ১৩৫ বল মোকাবেলা করে আটটি চার ও চারটি ছক্কা মারেন তিনি।
বেশ কিছুদিন ধরেই রান-খরায় ভুগছিলেন ফিঞ্চ। ভারত সিরিজে বলার মতো শুধু ৯৩ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান। তবে শুক্রবার দ্বিতীয় উইকেটে শনের সাথে ১৮৮ বলে মূল্যবান ১৭২ রান যোগ করেন ফিঞ্চ - যা অস্ট্রেলিয়ার জয়ের ভিত গড়ে দেয়।
ফিঞ্চ যখন ফেরেন তখন অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল আট উইকটে হাতে নিয়ে ৪৫ বলে ৪৬ রান। দলের এই প্রয়োজন তৃতীয় উইকেটে মিটিয়েছেন শন ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব। এক ওভার বাকী রেখে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত করেন এই দু’জন।
চারটি চার ও দুইটি ছক্কায় ১০২ বলে শন ৯১ ও হ্যান্ডসকম্ব ২৭ বলে অপরাজিত ৩০ রান করেন।
রোববার (২৪ মার্চ) একই ভেন্যুতে হবে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে।