loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • লিভারপুল হারলো এভারটনের কাছে, ম্যানইউ-এর শেফিল্ড-বাধা অতিক্রম

  • শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৪

  • জাভি এই মৌসুম শেষেই বার্সা ছাড়বেন না

  • নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

  • ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

মেসির নৈপুণ্যে উড়ে গেল ইউনাইটেড


মেসির নৈপুণ্যে উড়ে গেল ইউনাইটেড

আগের ম্যাচে প্রতিপক্ষের মাঠে খোলসের মধ্যে ছিল বার্সেলোনা। তবে নিজেদের মাঠে ফিরে আসল রূপ প্রকাশ পেল মেসিদের। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলাই করলো তাঁরা। এমন ম্যাচের নায়ক যে মেসি হবেন - তা বলাই বাহুল্য। অসাধারণ জোড়া গোল করে ইউনাইটেডকে ঘরে ফেরার পথ দেখিয়ে দিলেন বার্সার আর্জেন্টাইন জাদুকর।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ক্যাম্প ন্যুতে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালের ফিরতি লেগে মেসির জাদুর কাছেই হার মেনেছে ম্যান ইউনাইটেড। ১৬ ও ২০ মিনিটে গোল করে একাই ম্যাচের গতিপথ ঠিক করে দিয়েছেন বার্সা-অধিনায়ক। তৃতীয় গোলটি আসে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফিলিপ কটিনিয়োর পা থেকে। ৩-০ গোলের এই জয়ের পর দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ গোলের ব্যবধান নিয়ে সেমিফাইনালে পা রেখেছে ক্যাটালান ক্লাবটি।

এদিন ১০ম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সেলোনা। নিজেদের ডি-বক্সে বার্সা মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচকে ফাউল করেছিলেন ইউনাইটেড ডিফেন্ডার ফ্রেড। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন। তবে ভিডিও রেফারির সহায়তা নিয়ে সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

ইউনাইটেড জয়ের আশায় জল ঢেলে দিয়ে ১৬তম মিনিটে মেসি যে গোলটি করলেন তা চোখে লেগে থাকার মতো!

নিজেদের রক্ষণভাগে দুর্বল ডিফেন্স করে বল হারান ইউনাইটেড ডিফেন্ডার অ্যাশলে ইয়ং। বল চলে যায় মেসির দখলে; বল নিয়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্সকে পুরো বোকা বানিয়ে ডি-বক্সের দিকে এগিয়ে যান। পথে স্ম্যালিংয়ের বাধা অতিক্রম করে ডি-বক্সের ঠিক সামনে থেকে বাঁ পায়ের বুলেট গতির শটে ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডেভিড ডি গায়াকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন বার্সা ফরোয়ার্ড। সম্পূর্ণ নিখুঁত ফিনিশিং।

দ্বিতীয় গোল পেতে মাত্র চার মিনিটে অপেক্ষা করতে হয় বার্সাকে। তবে এবারের গোলে মেসির চেয়ে ম্যান ইউ গোলরক্ষকের অবদানই বেশি। এবারও ডি-বক্সের ঠিক সামনে থেকে ডান পায়ে নিচু শট নিয়েছিলেন মেসি; শটে গতিও তেমন বেশি ছিল না। স্প্যানিশ গোলরক্ষক ডি গায়া এমন শট ঠেকিয়েও ফেলেছিলেন, কিন্তু বল তাঁর হাত ফসকে জালে আশ্রয় নেয়। ২০১০ সালে স্টুটগার্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোড়া গোল করেছিলেন মেসি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি আসরে এই নিয়ে ১০ গোল হলো মেসির। ফলে এবার এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন মেসিই। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বায়ার্ন মিউনিখের ফরোয়ার্ড রবার্ট লেভান্ডোভস্কির গোল আটটি।

প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে আগের ভুলের কিছুটা মাশুল দেন ডি গায়া। মেসির বানিয়ে দেওয়া বল নিয়ন্ত্রণে নেন প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের বাঁ পাশে থাকা বার্সা তারকা জর্ডি আলবা এবং সঙ্গে সঙ্গে কাট ব্যাক করে তিনি বল পাঠিয়ে দেন গোলবারের সামনে থাকা সার্জি রবার্টোর কাছে। রবার্টোর শট গোলপোস্টের একদম লাগোয়া অবস্থান থেকে ফিরিয়ে দেন ডি গায়া।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যানইউ’র রক্ষণকে বারবার পরীক্ষায় ফেলেছেন মেসি-সুয়ারেজরা। এর ফল আসে ৬১তম মিনিটে। এবার গোলদাতা কটিনিয়ো; গোলের উৎস মেসি। ২৫ গজ দূরে থেকে নেওয়া কটিনিয়োর শটটি ছিল দেখার মতো। ইউনাইটেড ডিফেন্ডার স্ম্যালিং তাকে আটকে রাখতে ব্যর্থ হলে কিছুটা ফাঁকা থেকে দূর পাল্লার শটেই গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এই ব্রাজিলিয়ান। ম্যাচের তিন গোলই ডি-বক্সের বাইরে থেকে!

পুরোটা সময় ইউনাইটেড তারকাদের বড়ই অসহায় মনে হচ্ছিল। আগের ম্যাচে যে-দলটি মেসিদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে দেয়নি, তাঁরাই আজ স্বাভাবিক খেলা খেলতে ব্যর্থ হয়েছে। রীতিমত অসহায় আত্মসমর্পণ যাকে বলে। কিংবদন্তি কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন গ্যালারিতে বসে দেখলেন তাঁর অবর্তমানে কতোটা পথ হারিয়েছে ইংলিশ জায়ান্টরা।

ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে একটি সুযোগ পেয়েছিল ওলে গানার সোলশারের শিষ্যরা। কিন্তু চিলিয়ান ফরোয়ার্ড অ্যালেক্সিস সানচেজের ডাইভিং হেড দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগান।

২০১৫ সালের পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালের বাধা পার হলো বার্সা। প্রথম লেগে ১-০ গোলে জেতা ম্যাচেও মেসির অবদানই ছিল মুখ্য, যদিও গোলটি ছিল আত্মঘাতী। কিন্তু দ্বিতীয় লেগে স্বরূপে ফিরে ইউনাইটেডকে একেবারে ধুয়েই দিলেন ‘ভিনগ্রহের’ ফুটবলার।

Loading...