loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

  • বার্সাকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজি

  • অ্যাটলেটিকোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ডর্টমুন্ড

  • রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী কর তাগিদ দিলেন

  • ক্যানাডায় আর্টসেলের আটটি কনসার্ট

সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী


সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও মাদকবিরোধী চলমান অভিযান অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈশ্বিক জঙ্গিবাদ সমস্যা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এদেশের মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য তাঁরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং তাঁদের এই পরিশ্রমের ফলেই আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করতে সক্ষম হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘দেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২১ মে) তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সম্মানে আয়োজিত ইফতার-পূর্ব ভাষণে এ-কথা বলেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

শান্তি ছাড়া কোন দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো - সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেজন্য আমরা সকল ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত রাখতে পারি।

তিনি ইফতার উপলক্ষে প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক তারা  বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের গণভবনে আগমনে গণভবনের মাটি ধন্য হয়েছে উল্লেখ করে সকলের কাছে দোয়া কামনা করে বলেন, “রমজান মাসে আপনারা সকলে দোয়া করবেন এই বাংলাদেশকে আমরা যেন একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলে বিশ্বব্যাপী মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে পারি।”

তিনি পুনরায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, দেশের জনগণ তাঁকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছে বলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নযনের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। দেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে।

ইফতার মাহফিলে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষক, বিভিন্ন সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, কবি, লেখক, সঙ্গীতশিল্পী ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।

ইফতারের আগে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ অগাস্টের শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।

জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান, এটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম, দৈনিক জনকন্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান, বিচারপতি মেজবাউদ্দিন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদ ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ডা. মোদাচ্ছের আলী, প্রকৌশলী ড. শামিমুজ্জামান বসুনিয়া, কৃষিবিদ মীর্জা আবদুল জলিল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, এফবিসিসিআই-এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।

পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, অর্থনীতি পরিষদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, আওয়ামী বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, আইসিটি ফোরাম, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের নেতৃবৃন্দ ইফতারে মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকের ইফতার মাহফিলে উপস্থিত শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, কৃষিবিদ, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ক্রীড়াবিদসহ বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”

তিনি বলেন, “আমরা জানি রমজান মাসে দোয়া করলে সেই দোয়া কবুল হয়, তাই আমরা সবসময় দোয়া করবো বাংলাদেশে যেন শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং যে-উন্নয়নের ধারা সূচিত হয়েছে আমরা যেন তা অব্যাহত রাখতে পারি। বাংলাদেশের একেবারে গ্রাম পর্যায়ের মানুষও যেন সুন্দর ও উন্নত জীবন পায়, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়, সেটাই আমরা কামনা করি, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মহান নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা অর্জনের পরে মাত্র সাড়ে তিন বছর তিনি সময় পেয়েছিলেন। এই অল্প সময়েই তিনি অসাধ্য সাধন করেছিলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু একটা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গড়ে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ’৭৫-এর ১৫ অগাস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যার পর সেই উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি স্বজনহারা হয়েছিলেন, কিন্তু এই হত্যাকান্ডের ফলে দেশের মানুষ তাঁদের জীবনমান উন্নত করার সকল সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলে। জাতির পিতা এ-দেশের সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সারাজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন এবং দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে যে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন - সেই স্বাধীনতার সুফল যেন বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারেন সেটাই সবসময় তাঁর প্রচেষ্টা বলে বঙ্গবন্ধু-কন্যা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যেন ক্ষুধা-দারিদ্র্য, শোষণ-বঞ্চণা থেকে মুক্তি পায়, উন্নত জীবন পায়, মানুষের মাঝে যেন আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যেন বাংলাদেশ গড়ে ওঠে - সেই প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে তাঁর সরকার।

প্রধানমন্ত্রী বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, দেশের জনগণ আমাদের ওপর সেই আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে শুধু এটুকুই চাই - জনগণের এই আস্থা ও বিশ্বাস যেন সবসময় অব্যাহত থাকে। সেই সাথে বাংলাদেশকে আমরা আজ যে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটা যেন আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি।”

তিনি এ-প্রসঙ্গে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, “যাঁর যাঁর কর্মস্থলে থেকে সবাই এই প্রচেষ্টাই চালাবেন যেন আমাদের মাতৃভূমির হারানো গৌরবকে আবার ফিরিয়ে আনতে পারি। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে আবারো যেন মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে পারি; ’৭৫-এর ১৫ অগাস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর যে গৌরবকে আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম।”

তিনি বলেন, “যে বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে রেখে গিয়েছিলেন সেই দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আজ সম্মিলিতভাবে সেই প্রচেষ্টাই চালাতে হবে যেন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।”

লাখো শহীদের রক্তস্নাত স্বাধীনতা অর্জনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, শহীদদের রক্ত কখনও বৃথা যেতে পারে না। যে-জাতির জন্য জাতির পিতা রক্ত দিয়ে গেছেন, তা কখনও বৃথা যেতে পারে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কাজের মাধ্যমে জনগণের যদি এতটুকু কল্যাণ করতে পারি, তাহলে আমার বাবা-মাসহ এদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা জীবন দিয়ে গেছেন তাঁদের আত্মা শান্তি পাবে।

Loading...