loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • শেষ মুহূর্তের গোলে ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

  • আর্সেনালের কাছে পাঁচ গোলে উড়িয়ে গেলো চেল্সি

  • হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

  • বেপজা অর্থনৈতিক জোনে চীনা কোম্পানির ১৯.৯৭ মি. ডলার বিনিয়োগ

  • কাতারের আমিরের ঢাকা ত্যাগ

মালিঙ্গা-নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডকে হারালো শ্রীলঙ্কা


মালিঙ্গা-নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডকে হারালো শ্রীলঙ্কা

ক্রিকেট বিশ্বকাপে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালের আশা ভালোভাবেই বাঁচিয়ে রেখেছে শ্রীলঙ্কা। লিড্সের হেডিংলিতে শুক্রবার (২১ জুন) শ্রীলঙ্কা ২০ রানে হারিয়েছে ইংলিশদের। মাত্র ২৩৩ রানের টার্গেট দিয়েও লাথিস মালিঙ্গার বোলিং-নৈপুণ্যে জিতেই মাঠ ছেড়েছে লঙ্কানরা। টুর্নামেন্টে এটা শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় জয়, অন্যদিকে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় পরাজয়।

এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে পিছিয়ে থাকা ১৯৯৬’র শিরোপাজয়ী দেশটি নিজেদের ফিরে পেল। বাংলাদেশকে টপকে ছয় পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে দলটি। আর হেরে আট পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরেই থাকলো ইংল্যান্ড। এই ম্যাচে জিতলে অস্ট্রেলিয়াকে পিছনে ফেলে শীর্ষে উঠতো স্বাগতিকরা।

এদিন টস জিতে আগে ব্যাট করে নয় উইকেটে শ্রীলঙ্কা করেছে ২৩২ রান। পরে ১০ ওভার বল করে ৪৩ রানে চার উইকেট নিয়ে দলকে জয় এনে দিয়েছেন মালিঙ্গা। ফলে প্লেয়ার অফ দি ম্যাচের পুরস্কার তাঁর হাতেই গেছে।

জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের সামনে ২৩৩ রানের টার্গেট কঠিন ছিল না। তাই বোধহয় নিশ্চিত জয় পেতে যাচ্ছে বলে ভেবেছিল তাঁরা; আর এটাই ছিল বড় ভুল। কারণ, মালিঙ্গা যে-ছিলেন মাঠেই! মালিঙ্গার তোপেই ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো করতে পারেনি স্বাগতিক দেশটি। 

শুরুতেই ওপেনার জনি বেয়ারস্টোকে হারায় ইংল্যান্ড। দলীয় এক রানে রানের খাতা খোলার আগেই এলবিডাব্লিউ করে বেয়ারস্টোর উইকেট নেন মালিঙ্গা। দলীয় ২৬ রানে দলটি হারায় অপর ওপেনারকে; এবারও মালিঙ্গার আঘাত। ওপেনার জেম্স ভিন্সকে মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ বানিয়ে পরপর দুই উইকেট নিয়ে মালিঙ্গা শুরুতেই আতঙ্ক ছড়ান ইংলিশ-শিবিরে।

১৮ বলে দুই চারে ১৪ রান করেন ভিন্স। ২৬ রানে প্রথম দুই উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নিতে জুটি বাঁধেন জো রুট ও অধিনায়ক ওয়েন মরগান। এই জুটি কিছুটা চেষ্টা করেন। কিন্তু জুটি বড় হতে দেননি ইসরু উদানা। দলীয় ৭২ রানে মরগানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তিনি। মরগান ৩৫ বলে দুই চারে করেছেন ২১ রান।

দলের শতরানের আগে অধিনায়ক বিদায় হলেও বেন স্টোক্সকে নিয়ে ১০০ পার করেন জো রুট। তবে এই ব্যাট্সম্যানকেও বড় স্কোর গড়তে দেননি মালিঙ্গা। দলের পক্ষে প্রথম ফিফটি করার কিছুক্ষণ পরেই তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়। দলীয় ১২৭ রানে মালিঙ্গার বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করেছেন ৫৭ রান। ৮৯ বলে তিনটি চারে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংসটি। 

ব্যাট করতে নেমে বাট্লারও হন মালিঙ্গার শিকার। ১৪৪ রানে প্রথম পাঁচ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে পিছিয়ে যায় ইংল্যান্ড। তবে স্টোক্স ও মঈন আলি সতর্ক হয়ে ব্যাট করেন। ফলে জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে দল পৌঁছে ১৭০ রানে। মঈনকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন ডি সিলভা। উদানাকে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়ার আগে মঈন ২০ বলে এক ছক্কায় করেন ১৬ রান। 

এরপরে ওক্স ও আদিল দ্রুত ডি সিলভার শিকার হয়ে মাঠ ছাড়লে ১৭৮ রানে আট উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকেই পড়ে ইংল্যান্ড। আর্চার নেমেও স্টোক্সের সাথে বেশি সময় টিকতে পারেননি। তিন রান করার পর তাঁকে ফেরান উদানা। 

তবে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে উডকে নিয়ে শেষ জুটিতে দলকে জয় এনে দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন স্টোক্স। জয়ের অনেকটা কাছেও গিয়েছিল দলটি, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি; কারণ স্টোক্স অপরাজিত থাকলেও উড শূন্য রানে ফেরেন। ফলে ২১২ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড।

তিন ওভার বাকি থাকতেই পরাজয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইংল্যান্ড। ৮৯ বলে সাত চারটি ও চার ছক্কায় মেরে স্টোক্স ৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন। 

শ্রীলংকার পক্ষে মালিঙ্গার চার উইকেট ছাড়াও ডি সিলভা তিনটি ও উদানা নিয়েছেন দু’টি করে উইকেট।

এর আগে এবারের বিশ্বকাপের ২৭তম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলংকা নয় উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান করে। এদিন বড় স্কোরের প্রত্যাশা ছিল পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা লঙ্কানদের। কিন্তু ইংল্যান্ডের দুই পেসার জোফ্রা আর্চার ও মার্ক উডের বোলিংয়ে মুখ থুবরে পড়েন ব্যাট্সমানরা। একের পর এক উইকেট পতনে অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ৮৫ রানের অপরাজিত ইনিংসের উপর ভর করে ৫০ ওভারে নয় উইকেটে ২৩২ রান করেছে দলটি।

শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে দ্বীপ দেশটি, কেননা এক রানে প্রথম উইকেট হারানো দলটি তিন রানে হারায় দ্বিতীয় উইকেট। আর্চার প্রথম ওভারে অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নেকে ফিরিয়ে প্রথম উইকেটের পতন ঘটান। মাত্র এক রান করে লঙ্কা-অধিনায়ক ক্যাচ আউট হন উইকেটরক্ষক জস বাটলারের হাতে। দলীয় তিন রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় তাঁরা। এবার অপর ওপেনার কুশল পেরেরাকে দুই রানে ফেরান ক্রিস ওক্স।

তিন রানে প্রথম দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলকে এগিয়ে নেন অভিষেক ফার্নান্দো। দলীয় ৬২ রানে আউট হন তিনি। মাত্র এক রানের জন্য ফিফটি করতে পারেননি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা এই ব্যাট্সম্যান। মার্ক উডের বলে আদিল রশিদকে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ৩৯ বলে ছয়টি চার আর দুইটি ছক্কায় ৪৯ রান করেছেন ফার্নান্দো।

ফার্নান্দো আউট হলেও কুশল মেন্ডিস ও ম্যাথিউস মিলে জুটি করে স্কোর অনেকটা এগিয়ে নিয়েছেন। এই দু’জন ৭১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলীয় ১৩৩ রানে বিচ্ছিন্ন হন। 

বল করতে এসে নিজের পঞ্চম ওভারে জোড়া আঘাত করে আবারও প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দেন আদিল। দলীয় ১৩৩ রানে কুশল মেন্ডিসকে ৪৬ রানে মঈনের হাতে ক্যাচ বানান তিনি। ৬৮ বলে দুই চারে সাজানো ছিল মেন্ডিসের ইনিংসটি। 

পরের বলেই তিনি জীবন মেন্ডিসকে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় করেন। হ্যাটট্রিক চান্স ছিল আদিলের সামনে; অবশ্য সেটা হয়নি। ব্যাট করতে নেমে ভালো করতে চেয়েছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা-ও। কিন্তু দলীয় ১৯০ রানে আর্চারের বলে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৪৭ বলে এক চারে ২৯ রান করেছেন ডি সিলভা। 

অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা দুই রান করে আর্চারের বলে আউট হওয়ার পরে উদানাকে ছয় রানে ও মালিঙ্গাকে এক রানে আউট করেন মার্ক উড। ফলে বড় স্কোর গড়ার স্বপ্ন শেষ হয় লঙ্কানদের। 

শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে নুয়ান প্রদীপকে নিয়ে দলকে ২৩২ রানে নিয়ে যান ম্যাথিউস। ১১৫ বল খেলে পাঁচ চার ও এক ছক্কায় ৮৫ রানে অপরাজিত থাকেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার ম্যাথিউস।

ইংল্যান্ডের পক্ষে তিনটি করে উইকেট শিকার করেছেন আর্চার ও উড। আদিল রশিদ নেন দুই উইকেট।

Loading...