loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • কুমিল্লা ইপিজেড-এ চামড়া কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান

  • নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলংকা

  • অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা

  • ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

  • প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনার জয়

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আর নেই


হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আর নেই

সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধীদলের নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আজ সকাল পৌনে ৭টায় ইন্তেকাল করেন। তিনি বিগত নয়দিন যাবৎ সিএমএইচ-এ লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এরশাদের মৃত্যু সংবাদটি নিশ্চিত করেছে বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। দীর্ঘদিন তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন।

এর আগে জাপা চেয়ারম্যান সিএমএইচ-এর পাশাপাশি সিঙ্গাপুরে নিয়মিত শারীরিক চেকআপ করান। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান এরশাদ।

ভাইয়ের শারীরিক অবস্থার কথা জানাতে গিয়ে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের গতকাল শনিবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, এরশাদের কোনো অঙ্গ স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে না। ডাকলে তিনি চোখে মেলে তাকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আজ (শনিবার) তা করেননি।

জাতীয় পার্টি সূত্রে জানা গেছে, রোববার বাদজোহর সেনা কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর প্রথম জানাজা হবে। জানাজা শেষে মরদেহ সিএমএইচ-এর হিমঘরে রাখা হবে।

আগামীকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হবে। জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১২টা থেকে তিনটা পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য রাখা হবে। এরপর বাদআছর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে তৃতীয় জানাজা হবে। জানাজা শেষে মরদেহ পুনরায় সিএমএইচ-এর হিমঘরে রাখা হবে।

তৃতীয় দিন মঙ্গলবার সকালে হেলিকপ্টার যোগে তাঁকে রংপুরে নিয়ে যাওয়া হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুর ঈদগাহ মাঠে শেষ জানাজা পড়া হবে। জানাজা শেষে মরদেহ  হেলিকপ্টারযোগে আবার ঢাকায় এনে বাদজোহর সেনা-কবরস্থানে দাফন করা হবে।

আজ থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের জন্য শোক বই খোলা থাকবে।

সাবেক সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে এক রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হন এবং টানা আট বছর দেশ শাসন করেন। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণতন্ত্রকামী মানুষের অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। পরে বেশ কিছু অভিযোগে তিনি কারাবরণও করেন।

কারাগারে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের পাঁচটি আসনে নির্বাচিত হন। পরবর্তী প্রতিটি নির্বাচনে তিনি রংপুর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এরশাদ প্রথমে জাতীয় ফ্রন্ট ও পরে ফ্রন্ট নাম পরিবর্তন করে জাতীয় পার্টি নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন - যা পরবর্তী সময়ে বেশ কিছু উপদলে বিভক্ত হয়ে নানাভাবে জাতীয় পার্টি নামেই রয়েছে। তবে, এরশাদের জাতীয় পার্টিই তাঁদের মূল দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে সব নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনের পরে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এরশাদ ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ২৪ অগাস্ট ভারতে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় তিনি মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পান ও উপসেনা প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান।

এরশাদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান ও পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন আলাদাভাবে  শোক জানিয়েছেন।

তাঁরা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

Loading...