loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • কুমিল্লা ইপিজেড-এ চামড়া কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান

  • নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলংকা

  • অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা

  • ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

  • প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনার জয়

বেলজিয়ামের বিপক্ষে মরক্কোর দারুণ জয়


বেলজিয়ামের বিপক্ষে মরক্কোর দারুণ জয়

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে কখনো আফ্রিকার দেশের বিপক্ষে হারেনি বেলজিয়াম। প্রথম রাউন্ডে খেলা নিজেদের গত আট ম্যাচেও পরাজিত হয়নি। যাহোক, বিশ্বকাপে নিজেদের ৫০তম ম্যাচটিতে ভেঙে গেলো অপরাজেয় থাকার সেই ধারা। রোববার (২৭ নভেম্বর) মরক্কোর কাছে ২–০ গোলে হেরে গেছে গতবারের সেমিফাইনালিস্ট দেশটি। ফেভারিট বিচারে কাতার বিশ্বকাপে এটি তৃতীয় অঘটন। এর আগে, আর্জেন্টিনা সৌদি আরবের কাছে, জার্মানি জাপানের কাছে হেরেছিল। অবশ্য, ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচটিতে হেরে গেলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথ খোলা রয়েছে বেলজিয়ামের সামনে (সমীকরণ মিলে গেলে)। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ক্যানাডাকে হারানোর সুবাদে দলটির পয়েন্ট তিন; আর ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ড্র করা মরক্কোর পয়েন্ট এখন চার। 

কাতার বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের বিপক্ষে আরেকটি আপসেট ঘটিয়ে মরক্কো নকআউটে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো। দোহার আল-থুমামা স্টেডিয়ামে রোববার (২৭ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত ম্যাচে শক্তিশালী রেড ডেভিল্সদের ২-০ গোলে পরাজিত করেছে এটলাস লায়ন্সরা। বল দখলের লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকা দলটির হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে গোল দুটি করেছেন আব্দেলহামিদ সাবিরি ও জাকারিয়া আবুখাল।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে ক্যানাডাকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল বেলজিয়াম। কম যায়নি মরক্কোও; জয় না পেলেও গত আসরের রানার আপ ক্রোয়েশিয়াকে রুখে দিয়েছিল দলটি। গোলশূন্য ড্র করে আদায় করে নেয় মূল্যবান একটি পয়েন্ট।

যেহেতু, জয় পেলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে নকআউট পর্ব, তাই মরক্কোর বিপক্ষেই কাজটি সেরে রোববারই সেরে নিতে চেয়েছিল বেলজিয়াম। পক্ষান্তরে, মরক্কো চেয়েছিল, র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থনীয় দলকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে। শেষ পর্যন্ত, সেটি করতে সক্ষম হলো দলটি। যদিও প্রথমার্ধের পুরোটা সময়েই মরক্কোর মধ্যে সেই দক্ষতা দেখা যায়নি। বরং, একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে তাঁদের রক্ষণভাগকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিল বেলজিয়াম। বেলজিয়ামের পোস্টে মরক্কো যে-কয়বার হানা দিয়েছে, তাতে ছিল না তেমন যুতসই পরিকল্পনা। প্রতি-আক্রমণ থেকেই তাঁরা কিছুটা ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করেছে।

ইনজুরি টাইমে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে সফলতা প্রায় পেয়েই গিয়েছিল মরক্কো। হাকিম জিয়েচ ফ্রি কিক থেকে অসাধারণ সুন্দর একটি শটে বল বেলজিয়ামের জালে পাঠালেও সেটি ভিএআরর প্রযুক্তিতে বাতিল করেন রেফারি।

এর আগে, ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে আক্রমণে যায় বেলজিয়াম। পেনাল্টি বক্সের ভেতর থেকে মিশি বাটশুয়াই’র শট কর্নারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন মরক্কোর গোলরক্ষক মোহাম্মদি। এ-সময় পরপর দুইটি কর্নার পেয়েছিল বেলজিয়াম; তবে সুবিধা আদায় করতে ব্যর্থ হয়। 

দশম মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনাকে ডি বক্সের লাইনে ফেলে দিলে ফ্রি কিক পায় বেলজিয়াম। তবে ব্রুইনার নেওয়া ফ্রি কিকের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১৮ মিনিটে বেলজিয়ামের আমাডু ওনানার দুর্বল শটের বল সহজেই গ্রিবে পুরে নেন মরক্কোর গোলরক্ষক। এর দুই মিনিট পরে প্রতি-আক্রমণে যায় মরক্কো। বাঁ প্রান্ত দিয়ে হাকিম জিয়েচ একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে গিয়ে জোরালো শট নিলেও সেটি গোল লাইনের বাইরে চলে যায়।

৩২ মিনিটে বেলজিয়ামের থমাস মুইনারের মাটি কামড়ানোর শট ধরে ফেলেন মরক্কোর গোলরক্ষক। দুই মিনিট পরে ডান প্রান্ত দিয়ে মরক্কোর আশরাফ হাকিমির শট নিলেও সেটি বারের দেখা পায়নি। ৩৯ মিনিটে ব্রুইনার ফ্রি কিকের বল পোস্টের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।

এর পর প্রধমার্ধের সেরা সুযোগটি লাভ করে মরক্কো। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত হিসেবে এক মিনিট যুক্ত করার নির্দেশ দেন ম্যাচের চতুর্থ রেফারি। ওই সময় গোল পোস্টের ডান প্রান্তে হাকিম জিয়েচকে বেলজিয়ামের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা ফেলে দিলে ফ্রি কিকের নির্দেশ দেন রেফারি। জিয়েচ নিজেই ফ্রি কিক থেকে বাঁকানো শটের বলটি সরাসরি বেলজিয়ামের জালে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু ভিএআরর প্রযুক্তিতে সেটি বাতিল করেন রেফারি। ফলে লিড নিয়ে বিরতিতে যাওয়া হয়নি মরক্কোর।

বিরতি থেকে ফিরে আরও উজ্জীবিত হয়ে খেলা শুরু করে এটলাস লায়ন্সরা। ৫৭ মিনিটে মরক্কোর সোফিয়ানে বুফাল জোরালো শট নিলে অল্পের জন্য সেটি পোস্ট মিস করে।

৭৩ মিনিটে ডান প্রান্তের ডি বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় মরক্কো। কঠিন অ্যাঙ্গেল থেকে দারুণ এক শটে বলটি জালে পাঠিয়ে দেন বদলি হিসেবে মাঠে নামা আব্দেলহামিদ সাবিরি (১-০)। নাটকীয় এই গোলে প্রথমার্ধের অতৃপ্তি পূর্ণ হয় মরক্কোর।

গোল করার পরে আরও আগ্রাসী হয়ে উঠে এটলাস লায়ন্সরা। একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে কোনঠাসা করে ফেলে বেলজিয়ানদের; এর সুফলও পায় দলটি। ম্যাচের ইনজুরি টাইমে (৯০+২) দ্বিতীয় গোল করে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় মরক্কো। মধ্য মাঠ থেকে উড়ে আসা বল নিয়ে বক্সে দ্রুত ঢুকে পড়েন হাকিম জিয়েচ। পোস্টের ডান প্রান্ত থেকে তিনি সেটি পেছনে ঠেলে দেন পিছু নেওয়া সতীর্থ জাকারিয়া আবুখালের কাছে। চলন্ত বলটি ঠান্ডা মাথায় আলতো ছোঁয়া দিয়ে থিবো কোর্তোয়ার মাথার উপর দিয়ে জালে জড়ান তিনি (২-০)।

এর আগে, বিশ্বমঞ্চে পরস্পরের বিপক্ষে একবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল রেড ডেভিল্স ও এটলাস লায়ন্সরা। ১৯৯৪ সালের ওই ম্যাচে অবশ্য ১-০ গোলে হেরে গিয়েছিল মরক্কো।

আগামী ১ ডিসেম্বর ক্যানাডার মোকাবেলা করবে মরক্কো। একই রাতে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে বেলজিয়াম।

Loading...