loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

  • বার্সাকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজি

  • অ্যাটলেটিকোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ডর্টমুন্ড

  • রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী কর তাগিদ দিলেন

  • ক্যানাডায় আর্টসেলের আটটি কনসার্ট

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর


বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

শুরু হলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। প্রায় ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা এবারের বিজয়ের মাসে আগের বছরগুলোর মতোই অনুষ্ঠানমালার মধ্যদিয়ে পালন করা হবে।

বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ঘটনা হলো – ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্ন-সাধ পূরণ হয় এই মাসে।

বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এসেছিল এই মাসের ১৬ তারিখে। স্বাধীন জাতি হিসেবে সারাবিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খণ্ড, সবুজের বুকে লালসূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে-জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছিল এই দিনে।

বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য প্রাণ বিসর্জন এবং মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হওয়ায়, বেদনাবিধূর এক শোকগাঁথার মাসও ডিসেম্বর। এই মাসেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাঁদের এ-দেশিয় দোসর – রাজাকার-আলবদর-আল-শাম্সদের সহযোগিতায় দেশের মেধাবী, শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস যজ্ঞে মেতে উঠেছিল। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেওয়ার এ-ধরনের জঘণ্য-পৈশাচিক-নারকীয় হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোনো নজির সারাবিশ্বে নেই।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল-স্থল-আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর পরাজয়ের খবর চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানিবাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

যেখান থেকে ৭ মার্চ মহান স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” বলে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেখানেই পরাজয়ের দলিলে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজি। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়; আর জাতি অর্জন করে হাজার বছরের স্বপ্নের স্বাধীনতা।

বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তাঁর ডাকে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে যাঁর যা কিছু ছিল, তা-ই নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র জনযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

মহান বিজয়ের মাস উদযাপনে বরাবরের মতোই জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম দিন সকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে পুস্পস্তবক অর্পণ করে বীরমুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে শুরু হবে এই কর্মসূচি।

Loading...