আক্রমণাত্মক ব্যাটার হিসেবে পরিচিত হলেও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এ খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না খুশদিল শাহ। অবশেষে স্বরূপে ফিরলেন তিনি। বিধ্বংসী এক ইনিংসে ঝড় তুলে দলকে এনে দেন বিশাল পুঁজি। অবশ্য, ঢাকা ডমিনেটর্সের নাসির হোসেন দারুণ লড়াই করেছিলেন; তবে, শেষ রক্ষা করতে পারেননি। ফলে, টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দিনের প্রথম ম্যাচে ঢাকা ডমিনেটর্সকে ৩৩ রানে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৮৪ রান করে দলটি। জবাবে, নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৫১ রানের বেশি করতে পারেনি ঢাকা।
১৮৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা একদম বিবর্ণ ছিল ঢাকার। দলের ওপেনার সৌম্য সরকার খালি হাতে ফেরেন। এরপর, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংলিশ ক্রিকেটার রবিন দাসও ফেরেন শূন্য হাতে। আগের ম্যাচেও রান করতে পারেননি এই ক্রিকেটার। খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার আহমেদ শেহজাদও। এর ফলে, বড় চাপে পড়ে যায় ঢাকা।
যদিও মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে দারুণ এক জুটিতে সেই চাপ সামলে নিয়েছিলেন অধিনায়ক নাসির; তবে, রানের গতি খুব একটা বাড়েনি। ৫১ রানের জুটিতে লড়াইয়ের আভাস দিলেও ভালো কিছু করার আগেই এই জুটি ভাঙেন মোসাদ্দেক হোসেন। মিডঅফে ইমরুল কায়েসের ক্যাচে পরিণত করেন মিঠুনকে।
এরপর, আরিফুল হককে নিয়ে দলের হাল ধরেন নাসির; গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৬৬ রানের জুটি। কিন্তু, সেটি যথেষ্ট ছিল না দলের জন্য। ফলে, পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাঁদের।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেছেন নাসির। ৪৫ বলে সাতটি চার ও দুইটি ছক্কায় এই রান করেন তিনি। এছাড়া, মিঠুন ৩৬ ও আরিফুল অপরাজিত ২৪ রান করেন।
এর আগে, টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে কুমিল্লা। চট্টগ্রাম পর্বে আগের তিন ম্যাচেই দারুণ ব্যাটিং করা লিটন দাস এদিন ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন খালি হাতে। শুরুতেই দলের সেরা ব্যাটারের বিদায়ের ধাক্কাটা অবশ্য ভালোভাবে সামলে নিয়েছিলেন অধিনায়ক ইমরুল। দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে ৪৭ রানের জুটি গড়ে আউট হন দলপতি।
অধিনায়কের বিদায়ের পরে রিজওয়ানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন জন্সন চার্লস; ৪০ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটার। চার্লসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ ইমরান। তবে, রিজওয়ানের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে গড়া স্বদেশি খুশদিল শাহর গড়া জুটিই বদলে দেয় ম্যাচের চিত্র।
মাত্র ২৪ বলে সাতটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৬৪ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেছেন খুশদিল। অথচ, প্রথম ছয়টি বল দেখেই খেলেছিলেন। এ-সময় এসেছে চার রান। পরের ১৮ বলে আসে ৬০ রান। আমির হামজার করা ষোড়শ ওভারে মেরেছেন তিনটি ছক্কা ও দুটি চার। সেই ওভারে আসে ২৯ রান। পরের ওভারে মুক্তার আলীকে মারেন টানা দুই ছক্কা। এর পরের ওভারে মোহাম্মদ ইমরানের বলে মারেন টানা তিনটি চার। ঊনবিংশ ওভারে বল হাতে নিয়ে খুশদিলের তাণ্ডব ঠেকান সৌম্য সরকার। তিনি এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এই পাকিস্তানি ব্যাটারকে।
অবশ্য, ফেরানো যায়নি রিজওয়ানকে। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ৪৭ বলে একটি চার ও তিনটি ছক্কায় এই রান করেছেন তিনি। এছাড়া, ইমরুল ৩৩ ও চার্লস ২০ রান করেন।