loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

  • বার্সাকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজি

  • অ্যাটলেটিকোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ডর্টমুন্ড

  • রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী কর তাগিদ দিলেন

  • ক্যানাডায় আর্টসেলের আটটি কনসার্ট

ইফতেখার ও সাকিবের ব্যাটিং তাণ্ডবে টানা চতুর্থ জয় বরিশালের


ইফতেখার ও সাকিবের ব্যাটিং তাণ্ডবে টানা চতুর্থ জয় বরিশালের

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এ বরাবরই টি-টোয়েন্টির আমেজ উপহার দিতো চট্টগ্রামের মাঠ। সেখানে এবার কিছুটা ভিন্ন ছিল শুরুর দিকে। তেমন বড় স্কোর দেখা যাচ্ছিল না সাগরিকায়। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের এই বদনাম ঘোচানোর দায়িত্ব নেন সাকিব আল হাসান ও ইফতেখার আহমেদ! দু’জনই খেললেন নিজেদের ক্যারিয়ার-সেরা ইনিংস, তা-ও রীতিমতো তাণ্ডব তুলে। হলো নতুন নতুন রেকর্ড এবং ফরচুন বরিশাল পেলো টানা চতুর্থ জয়।

বৃহস্পতিবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ৬৭ রানে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেটে ২৩৮ রান করে বরিশাল। জবাবে, নির্ধারিত শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে নয় উইকেটে ১৭১ রানের বেশি করতে পারেনি রংপুর।

এদিন পঞ্চম জুটিতে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েন সাকিব ও ইফতেখার। মাত্র ৮৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৯২ রান করেন এই দুই ব্যাটার, ভেঙে ফেলেন ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ভিটালিটি ব্লাস্টের ম্যাচে নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে বার্মিংহ্যাম বিয়ার্সের অ্যাডাম হোস ও ড্যান মৌসলির ১৭১ রানের জুটির রেকর্ড। এই রেকর্ডে রংপুরকে বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বরিশাল। শেষ পর্যন্ত সেই রানে চাপা পড়ে রংপুর।

পঞ্চম উইকেটে বিশ্বরেকর্ড গড়লেও বিপিএল-এর সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটা নয়। আছে তিন নম্বরে। ২০১৭ সালের ফাইনালে ক্রিস গেইল ও ব্রান্ডন ম্যাককালামের গড়া দ্বিতীয় উইকেট জুটির অবিচ্ছিন্ন ২০১ রানের রেকর্ড সর্বোচ্চ। দলীয় সংগ্রহও বিপিএল-এর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এই চট্টগ্রামে ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম ভাইকিংসের বিপক্ষে চার উইকেটে সর্বোচ্চ ২৩৯ রান করতে সক্ষম হয়েছিল রংপুর।

অথচ, ম্যাচের শুরুতে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল না বরিশাল। পঞ্চম ওভারে এনামুল হক বিজয় ও ইনফর্ম ইব্রাহিম জাদ্রানকে তিন বলের ব্যবধানে তুলে নিয়ে বড় ধাক্কা দেন হারিস রউফ। এক ওভার পর তো টানা দুই বলে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহকে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন হাসান মাহমুদ। দলীয় ৪৬ রানেই চার উইকেট হারিয়ে চাপে ছিল দলটি। সেখান থেকে সাকিব-ইফতেখার দলকে টেনে তো তোলেনই, গড়েন বিশাল পুঁজি।

ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করে ১০০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন ইফতেখার। মাত্র ৪৫ বলে ছয়টি চার ও নয়টি ছক্কায় এই রান করেন তিনি। অথচ প্রথম ১৩ বলে মাত্র নয় রান করেছিলেন তিনি। এরপর শুরু হয় তাঁর তাণ্ডব। সাকিব অবশ্য শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেন। তবে, শেষ দিকে দানবীয় রূপে আবির্ভূত হন তিনিও। ৪৩ বলে নয়টি চার ও ছয়টি ছক্কায় খেলেন হার না মানা ৮৯ রানের ইনিংস।

মূলত দ্বাদশ ওভার শেষেই মূল আক্রমণের শুরু করেন এই দুই ব্যাটার। শামিম হোসেন পাটোয়ারি করা ত্রয়োদশ ওভারে চার ছক্কায় ২৫ রান নেন ইফতেখার। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাঁদের। এমনকি টি-টোয়েন্টির অন্যতম সেরা বোলার হারিসও পার পাননি। ঊনবিংশ ওভারে এসে তিনটি ছক্কা ও একটি চার দিয়ে হজম করেছেন ২৪ রান। শেখ মেহেদী হাসানের করা শেষ ওভারে এসেছে ২৭ রান। সবমিলিয়ে শেষ আট ওভারে আসে ১৪৪ রান।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে রানের গতি সচল রেখে ব্যাটিং করতে পারেনি রংপুর। ২৮ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন সাইম আইয়ুব ও রনি তালুকদার। অবশ্য, তাঁরা খেলেছেনও ২৮ বল। টপ অর্ডারে কেউ ঝলসে উঠতে পারেননি; পারেননি মিডল অর্ডারের কেউও। মোহাম্মদ নাঈম শেখ কিছুটা চেষ্টা করেছলেন, কিন্তু রানআউটে কাটা পাড়েন। মিরাজের বলে ডিপ কভারে পাঠিয়ে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন নাঈম, তবে, কামরুল ইসলাম রাব্বির দারুণ থ্রোতে ঠিক সময়ে উইকেটে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। সেই ওভারে আউট হন শেখ মেহেদীও। ফলে, ৭৮ রানে সাত উইকেট হারিয়ে তখনই পরাজয় দেখতে শুরু করে রংপুর।

এরপর শামিমের সঙ্গে ৩৬ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়ে লড়াইয়ের চেষ্টা চালান মোহাম্মদ নাওয়াজ। নাওয়াজ আউট হলে এক প্রান্তে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন শামিম। তবে, সেটি কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলেছেন শামিম। ২৩ বলে তিনটি চার ও চারটি ছক্কার সাহায্যে সাজিয়েছেন নিজের ইনিংস। ২৪ বলে দুইটি করে চার ও ছক্কায় ৩৩ রান করেন নাওয়াজ। নাঈমের ব্যাট থেকে এসেছে ৩১ রান। 

বরিশালের পক্ষে ২৬ রান খরচায় তিনটি উইকেট শিকার করেন মিরাজ। দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন রাব্বি ও ওয়াসিম। 

Loading...