সিরি-আ লিগে লাৎসিও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এসি মিলানকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। বড় এই পরাজয়ে লিগ শিরোপা ধরে রাখা হুমকির মুখে পড়লো এসি মিলানের। ইন্টার মিলান ও রোমার চেয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে এবং এসি মিলানের চেয়ে এক পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে লাৎসিও (৩৭)।
রোমের স্তাদিও অলিম্পিকোতে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সম্ভবত মৌসুমের সবচেয়ে বাজে খেলেছে মিলান। সার্গে মিলিনকোভিচ-সাভিচ তিন মিনিটের মধ্যে প্রথম সুযোগেই লাৎসিওকে এগিয়ে দেন। ৩৮ মিনিটে মাত্তিয়া জাক্কাগনি স্বাগতিক ক্লাবের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। লুইস আলবার্তো পেনাল্টি থেকে ম্যাচের মাঝামাঝি সময়ে দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন। ৭৫ মিনিটে মিলানে শেষ আঘাত হানেন ফিলিপ অ্যান্ডারসন।
কোচ মরিজিও সারির অধীনে শিরোপা জয় সম্ভব বলে বিশ্বাস করেন মিলিনকোভিচ-সাভিচ। ম্যাচ শেষে সার্বিয়ান এই মিডফিল্ডার বলেছেন, ‘গত কয়েক ম্যাচে আমরা যেভাবে খেলেছি, তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে আমরা অনেক দূর যেতে পারবো। আমরা যদি চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে এভাবে খেলতে পারি, তাহলে কেন লিগ শিরোপা জিততে পারবো না?’
মৌসুমের মাঝামাঝি এসে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা নাপোলির (৫০) তুলনায় ১২ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে এসি মিলান (৩৮)। লিগে টানা তিন ম্যাচে মিলানের জয়বিহীন থাকার সুযোগে নাপোলি তাঁদের ব্যবধান বাড়িয়ে নিয়েছে। একইসাথে চারটি ক্লাব দ্বিতীয় স্থানের জন্য মিলানের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে। তাঁদের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা তিনটি দলের মধ্যে লাৎসিও একটি।
ইন-ফর্ম অ্যাটালান্টা দুই পয়েন্ট পিছিয়ে ষষ্ঠ স্থানে (৩৫) রয়েছে। দলটিও ভালোভাবেই শীর্ষ চারে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
ট্রান্সফার বিষয়ে অস্বচ্ছতার জেরে গত শুক্রবার ১৫ পয়েন্ট কেটে নেওয়া হয়েছে ইউভেন্টাসের। এই ঘটনায় অন্তত স্বস্তি মিলতে পারে মিলানের। না হলে, তুরিনের জায়ান্টদের চেয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকতে হতো বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।
মিলান কোচ স্টিফানো পিওলি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে অনেক কিছুই প্রত্যাশা মাফিক হচ্ছে না। মানসিক ও কৌশলগত দিক থেকে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। কারণ, এমন একটি পরিস্থিতিতে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, যা বেশ অস্বস্তিকর। আজকের ম্যাচে প্রথম দুটি গোল অবশ্যই ভিন্নভাবে আমাদের প্রতিরোধ করা উচিৎ ছিল। কিন্তু কোনোকিছুই আমাদের পক্ষে কাজ করছে না। আমরা যেমন খেলে থাকি, সেই ধারায় দ্রুতই ফিরে আসতে হবে; এটাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। যত দ্রুত সম্ভব তা করার চেষ্টা করতে হবে।’
মরিজিও সারির দল তাঁদের তারকা স্ট্রাইকার সিরো ইমোবিলেকে দলে পায়নি। কিন্তু মিলানের রক্ষণভাগকে বারবার ভাঙতে তাঁদের কোনো সমস্যাই হয়নি। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় শেষ পাঁচ ম্যাচে মিলান ১২ গোল হজম করেছে। ম্যাচের শুরুতেই ফ্রান্সের থিও হার্নান্দেজকে হারায় মিলান। ২৪ মিনিটে ইনজুরিতে পড়েন সেন্টার-ব্যাক ফিকায়ো টোমোরি। স্টপেজ টাইমে ফুল-ব্যাক ডেভিড কালাব্রিয়াও ইনজুরিতে পড়েছেন। ইনজুরির এই ঘটনাগুলো মিলানের জন্য দুঃসংবাদ বয়ে এনেছে।
মিলান ডার্বি হতে ১৫ দিনেরও কম সময় বাকি রয়েছে। গত সপ্তাহেই সুপার কাপে ইন্টার মিলানের কাছে শিক্ষা পেয়েছে এসি মিলান। এছাড়া, টটেনহ্যামের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচটিও আসন্ন। সব মিলিয়ে মিলানকে এখন নিজেদের আত্মবিশ্বাস ফেরানার দিকে বেশি মনোযোগী হতে হবে।
