loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • আর্সেনালকে বিদায় করে সেমিতে বায়ার্ন

  • ‘রাজকুমার’ যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যানাডার ৭৫ থিয়েটারে

  • ভারতের বিপক্ষে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

  • বার্সাকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজি

  • অ্যাটলেটিকোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ডর্টমুন্ড

আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, উন্নয়নের জন্য কাজ করে: প্রধানমন্ত্রী


আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, উন্নয়নের জন্য কাজ করে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর দল কখনো পলায়ন করে না, বরং জনগণের সাথে থেকে তাঁদের উন্নতির জন্য কাজ করে যায়। তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে দেশবাসীকে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করারও আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যাঁরা (বিএনপি নেতারা) বলছে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, আমি তাঁদের একটা কথা পরিষ্কার করতে চাই যে – আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, কিন্তু তাঁদের (বিএনপি’র) নেতারাই পালিয়ে যায়।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হওয়া মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এ-কথা বলেন। সমাবেশ স্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী সিটি করপোরেশন (আরসিসি)’র সাতটিসহ মোট ২৬টি প্রকল্প উদ্বোধন ও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বিরোধীদল অনেক কথাই বলে, তাঁরা নোটিশ দেয়, আবার বলে আমরা নাকি পালাবার পথ পাবো না। তিনি বিএনপি-জামাতকে প্রশ্ন করেন – পালায়  কে? কারণ, আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না, পিছু হটে না।

’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পরে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বাধা সত্ত্বেও ’৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে একরকম জোর করেই দেশে ফিরে আসার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবার ২০০৭ সালে ছেলের বউ অসুস্থ থাকায় তাঁকে বিদেশ যেতে হয়েছিল; কিন্তু, তাঁর ফেরায় আবারও বাধার সৃষ্টি করা হয়, মামলা হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করেও সে-সময় বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে জোর করে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন।

‘আজকে যাঁরা বলে – আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, তাঁদের আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আওয়ামী লীগ পালায় না, পালায় আপনাদের নেতারাই,’ বলেছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেতারা নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে, তাঁদের দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল আর রাজনীতি করবে না বলে। সেই কথা কি বিএনপি নেতাদের মনে নাই? দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা ও তারেক। এমনকি খালেদা জিয়া তারেক-কোকোর মাধ্যমে যে-টাকা পাচার করেছিল, তার ৪০ কোটি টাকা আমরা বিদেশ থেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো পালায়না বরং জনগণকে নিয়েই কাজ করে। কেননা, এই সংগঠন জাতির পিতা শেখ মুজিবের হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখন ক্ষমতায় থাকে বাংলাদেশের মানুষের তখনই ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা দারিদ্রের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়েছি। সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ভাতা ও সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি তিনি ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য তাঁর সরকারের বিনামূল্যে দুই কাঠা জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের এই বাংলায় একটি মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে, কেউ যেন খাদ্যের জন্য কষ্ট না পায় সেজন্য তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন তিনি।

গত নির্বাচনে (জাতীয় নির্বাচন) এবং মেয়র নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য তিনি রাজশাহীর জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, ‘আগামীতে নির্বাচন আসবে, এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে সেখানে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন কি-না – ওয়াদা চাই।’

সমবেত জনতা এই সময় দুই হাত তুলে সমস্বরে চিৎকার করে ওয়াদা করলে তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ যেন গড়তে পারি  সেজন্যই আপনারা সকলে নৌকায় ভোট দেবেন।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্মসম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মাহবুবউল আলম হানিফ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সমাবেশ সঞ্চালনা করেন। ‘৮১ সালে তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয় উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা বলেন, আমি এমন একটি দেশে ফিরে আসি, যেখানে আমার কোনো বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। জাতির পিতার খুনিদেরকে ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। সেই অবস্থায় আমি দেশে ফিরে আসি শুধু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি তারপর চেষ্টা করেছি, বাংলাদেশকে উন্নত করতে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া কেউ এদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দেয়নি, চিন্তাও করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসেই বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে।

তিনি বলেন, এই রাজশাহীতে জাতির পিতা স্বাধীনতার পর কলকারখানা করেন। এরপর সব বন্ধ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ বন্ধ কারখানা চালু করতে কাজ করে। পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ বাঁধ করে দিয়ে সেই ভাঙন আমরা রোধ করে দেই। রাজশাহীর মানুষের কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নেই, তাঁদের জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজশাহী সবসময় অবহেলায় ছিল। আপনারা এখানে নৌকায় ভোট দিয়েছেন। আমরা উন্নয়ন করেছি। রাজশাহীতে ১০,৬৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন করা হয়েছে এবং ৪,০০০ কোটি টাকার কাজ চলছে। আজ যে-কাজগুলো উদ্বোধন করা হলো, এগুলো রাজশাহীবাসীকে আমার উপহার।

তিনি এ-সময় তিনি রাজশাহীতে বেসরকারি উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল গড়ে তোলায় এগিয়ে আসার জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সেক্ষেত্রে এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভেনু হিসেবেও বিকশিত হতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এদেশের খাদ্য নিরাপত্তা থেকে শুরু করে কমিউনিটি ক্লিনিক সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছি। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ডিগ্রির মর্যাদা দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ পায়। আমরা চাই – আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। দেশকে আমরা উন্নত করতে চাই।

Loading...