loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ ২৯ মে

  • সিটিকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে রিয়াল

  • আর্সেনালকে বিদায় করে সেমিতে বায়ার্ন

  • ‘রাজকুমার’ যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যানাডার ৭৫ থিয়েটারে

  • ভারতের বিপক্ষে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত


আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত

সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হয়েছে। ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’ – এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশেও উদযাপিত হয় দিবসটি। এবার পবিত্র শবেবরাত ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস একই দিনে হওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে অনুষ্ঠানে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছিল। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তাঁরা বিশ্বের সকল নারীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

রাষ্ট্রপতি বলেছেন, সমাজ, রাষ্ট্র, ও পারিবারিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের অপরিহার্য শর্ত। তিনি জেন্ডার সমতাভিত্তিক দেশ গড়তে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ গত এক দশকে আর্থসামাজিক খাত ও নারীর ক্ষমতায়নে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন ও তৃণমূল পর্যন্ত নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। নারীশিক্ষা নিশ্চিত করা, নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা, সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন এবং কর্মক্ষেত্র ও রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে সরকার।

বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারী আন্দোলনের ইতিহাসে আজ এক গৌরবময় দিন। দীর্ঘ কর্মঘন্টা আর মজুরি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নারী আদায় করেছিল তাঁর অধিকার।’

দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে বুধবার সরকারি ছুটি থাকায় এ-বছর নির্ধারিত সেমিনারটি পরে আয়োজন করা হবে। অবশ্য, এক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির এবারের প্রতিপাদ্য – ‘ডিজিটাল বিশ্ব হোক সবার; নারীর অধিকার সুরক্ষায় ও সহিংসতা মোকাবেলায় চাই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন বৈষম্যহীন সৃজনশীল প্রযুক্তি’।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি  দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। এর মধ্যে ছিল – শোভাযাত্রা, নারী দিবসের বার্ষিক সংকলন ‘কন্ঠস্বর’-এর মোড়ক উন্মোচন এবং আলোচনা সভা।

জাতীয় প্রেসক্লাব আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিকেল তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজন করেছে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান, যেখানে এ-বছরের নারীর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল: ইনোভেশন – আ টেকনোলজি ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন ও আলোচনা হবে।

এসোসিয়েশন অফ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামও আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজন করেছিল শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ডিজিটাল ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি’ শীর্ষক সেমিনার। উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, এমপি।

দিবসটি উপলক্ষে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতাল বিনামূল্যে নারীদের ‘স্তন ও জরায়ুমুখের ক্যান্সার’ পরীক্ষা এবং সচেতনতামূলক আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল।

সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও ছিল নানা আয়োজন। নাট্য সংগঠন স্বপ্নদল হেলেন কেলার সম্মাননা ও বিশেষ নাটক মঞ্চায়ন করে। বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটারে মঞ্চায়িত হয় হেলেন কেলার-এর জীবন-কর্ম-স্বপ্ন-সংগ্রাম ও দর্শনভিত্তিক বিশেষ নাটক ‘হেলেন কেলার’।

সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখ উদযাপন করা হয়। ১৯০৮ সালে এক শ্রমিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নারী দিবসের দিবসের বীজ বপন করা হয়েছিল, যখন নিউ ইয়র্কের ১৫,০০০ নারী শ্রমিক কর্মঘণ্টা কমানো, ভালো মজুরি ও ভোটের অধিকারের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল করেন। এর এক বছর পরে, যুক্তরাষ্ট্রের সোশ্যালিস্ট পার্টি নারী শ্রমিকদের প্রতি সম্মান জানায়। মার্কিন শ্রমিক আন্দোলনের নেত্রী থেরেসা মালকিয়েলের পরামর্শে তাঁরা ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্কে জাতীয় নারী দিবস উদযাপন করেছিলেন।

আন্তর্জাতিকভাবে নারী দিবস পালনের পরামর্শ প্রথম আসে যুক্তরাষ্ট্রের নারী অধিকারবিষয়ক আইনজীবী ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী ক্লারা জেটকিনের পক্ষ থেকে। ১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে নারী শ্রমিকদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়েছিল, যেখানে ক্লারা আনুষ্ঠানিকভাবে এই ধারণাটির প্রস্তাব রাখেন। সেই সম্মেলনে ১৭টি দেশের ১০০ জন নারীনেত্রীর উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে এই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। সেটাই জাতিসংঘ থেকে স্বীকৃত পেয়ে আন্তর্জাতিক দিবসে পরিণত হয়েছে। 

এ-বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ১১৫তম বর্ষ পালিত হলো।

Loading...