প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি ইতোমধ্যে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা-মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর একটি হলে খুন হওয়া আবরার ফাহাদের পরিবারের সদস্যরা সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ-কথা বলেন।
আবরারের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিল আবরারের পিতা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া খাতুন, ভাই আবরার ফায়াজ সাব্বির, চাচা ও মামা। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
ইহসানুল করিম বলেন, আবরারের মা রোকেয়া খাতুন তাঁর সন্তানের হত্যার পর দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “ঘটনার পরে আপনি যে-মাতৃসুলভ ভূমিকা পালন করেছেন - তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা আমার নেই।” প্রেস সচিব জানিয়েছেন, আবরারের মা কথাটি আট-দশবার বলেছেন।
আবরার হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খুনিরা খুনিই, অপরাধীরা অপরাধীই, কে কোন দলের - তা আমি দেখিনি।” শেখ হাসিনা আবরারের মা-বাবাকে বলেন, “আপনারা যা হারিয়েছেন - তার জন্য সান্তনা দেয়ার ভাষা আমার নেই।” তিনি বলেন, “দয়া করে আমার দিকে তাকান, আমি একরাতে সবকিছু হারিয়েছি। আমি আপনজন হারানোর যন্ত্রণা বুঝি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবরারের হত্যাকারীরা মানুষ নয়। “যাঁর সাথে তাঁরা বসে পড়ালেখা করছে তাকে তাঁরা কিভাবে হত্যা করতে পারে?” শেখ হাসিনা বলেন, ঘটনার পরে পুলিশকে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করার নির্দেশ দেয়া হয়। “কিন্তু বুয়েট-এর কিছু ছাত্র কেন ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি করলো - তা আমার বোধগম্য নয়।
প্রেস সচিব জানিয়েছেন, গণভবনের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হওয়ার পরে আবরারের মা তাঁকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। প্রধানমন্ত্রী আবরারের মাকে পরম মমতায় বেশ কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখেন এবং তাঁর জন্য নির্ধারিত চেয়ারের বদলে আবরারের মা’র পাশেই বসেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্মসম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান এ-সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
বুয়েট-এর তড়িৎকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে ৭ অক্টোবর ভোর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওইদিন রাত তিনটার দিকে শেরেবাংলা হলে নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার মধ্যবর্তী স্থান থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ এ-ঘটনায় চকবাজার থানায় ১৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পুলিশ এ-পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।
