রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি)-তে চলছে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯। তিনদিনের এই মেলা শুরু হয়েছে সোমবার (১৪ অক্টোবর)। বুধবার সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এই প্রদর্শনী।
তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক এই মেলা উদ্বোধন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন। এ-সময় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানে শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, আইডিয়া প্রজেক্ট, এটুআই ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)-এর যৌথ উদ্যোগে ডিজিটাল পণ্য ও তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হবে এখানে। প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত, প্রবেশের জন্য নাম নিবন্ধন করতে হবে। অনলাইনে নিবন্ধনের পাশাপাশি স্পট-নিবন্ধনের ব্যবস্থাও রয়েছে।
প্রযুক্তিখাতে দেশের সক্ষমতা, দক্ষতা, হার্ডওয়্যার পণ্য উৎপাদনে সম্ভাবনা ও কর্মপ্রচেষ্টার চিত্র এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়াও হাই-টেক পার্ক ও তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়ন-কাঠামোতে বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে দর্শনার্থীরা ধারণা পাবেন।
মূলত দেশীয় প্রযুক্তিতে এবারের প্রদর্শনী সাজানো হয়েছে। রাখা হয়েছে আটটি জোন। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ জোনে দেশীয় প্রযুক্তি নির্মাতা-প্রতিষ্ঠানদের পাওয়া যাবে। রয়েছে ইনোভেশন জোন। এই জোনে নিত্য নতুন উদ্ভাবন সম্পর্কে জানা যাবে। আইডিয়া প্রজেক্টের ৩০টি প্রকল্প, এটুআই-এর ৩০টি প্রকল্প ও ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে ইনোভেশন জোন।
অ্যাক্টিভেশন প্রোগ্রামগুলো থেকে নির্বাচিত সেরা ৩০টি উদ্ভাবন এক্সপোতে প্রদর্শিত হচ্ছে। মেলা শেষ হওয়ার পরে শীর্ষ ১০ তরুণ উদ্ভাবককে বঙ্গবন্ধু উদ্ভাবনী অনুদান (বিআইজি)-তে ভূষিত করা হবে।
স্টার্টআপ জোনে নতুন উদ্যোক্তাদের প্রজেক্ট সম্পর্কে ধারণা পাবেন দর্শনার্থীরা। মেলার অন্যতম আকর্ষণ রোবোটিক জোন। এই জোনে শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট দেখা যাবে।
বিসিএস এক্সপো জোন-এ পাওয়া যাচ্ছে হালনাগাদ প্রযুক্তি-পণ্য। স্বনামধন্য প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁদের সর্বশেষ প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে। প্রযুক্তিপণ্য কেনার সুযোগ মিলছে এই জোনে। এক্সপো জোনে থাকছে ১১০টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল। রয়েছে বিটুবি ও মিডিয়া কর্ণার। গেমারদের জন্য রয়েছে গেইমজোন। রয়েছে রোবট আঁকাসহ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
মেলার দ্বিতীয় দিন দর্শনার্থীদের জন্য দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডের অংশগ্রহণে থাকছে কনসার্ট। এছাড়া, তথ্যপ্রযুক্তিতে অবদান রাখার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রাখা ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদান করা হবে।
এই আয়োজনের লক্ষ্য হচ্ছে প্রযুক্তি-পণ্য উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিত করে তোলা। এছাড়া, নতুন উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যিকভাবে তাঁদের পণ্য বাজারজাত করতে সহযোগিতা হিসেবে শিল্প ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে এই আয়োজন।
এই প্রদর্শনীর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট ‘লি’, প্লাটিনাম স্পন্সর ওয়ালটন, গোল্ড স্পন্সর ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স। যৌথভাবে সিলভার স্পন্সর সিম্ফনি ও ডিবিবিএল। ফোরজি এলটিই পার্টনার বাংলালায়ন। এডিএন টেলিকম, বাংলাদেশ টেকনো সিটি লিমিটেড, ডাহুয়া, ডেল, এইচপি, হিকভিশন, ইউসিসি মেলার অন্যতম সহযোগী। গেমিং পার্টনার গিগাবাইট। ই-কমার্স সহযোগী প্রিয়শপ ডটকম। এছাড়া, দেশের ২১টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে নলেজ পার্টনার হিসেবে।
ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো’র সহযোগী হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফ্টওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো), সিটিও ফোরাম, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাংলাদেশ উইম্যান ইন টেকনোলজি (বিডব্লিউআইটি), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ও বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ)।