loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • লিভারপুল হারলো এভারটনের কাছে, ম্যানইউ-এর শেফিল্ড-বাধা অতিক্রম

  • শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৪

  • জাভি এই মৌসুম শেষেই বার্সা ছাড়বেন না

  • নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

  • ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

টাইগারদের সিরিজ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ


টাইগারদের সিরিজ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত: ২০ ওভারে ১৭৪/৫ (আইয়ার ৬২, রাহুল ৫২, সৌম্য ২/২৯)
বাংলাদেশ: ১৯.২ ওভারে ১৪৪/১০ (নাইম ৮১, মিঠুন ২৭, চাহার ৬/৭)
ফলাফল: ভারত ৩০ রানে জয়ী
ম্যাচ-সেরা: দিপক চাহার (ভারত)
টস: বাংলাদেশ
সিরিজ-সেরা: দিপক চাহার (ভারত)
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ভারত ২-১ ব্যবধানে জয়ী 

ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছেন পেসার দিপক চাহার। রোববার (১০ নভেম্বর) তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০ ম্যাচে জয়ের জন্য ১৭৫ রানের টার্গেট পেয়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে ১২ রানেই দুই উইকেট হারায় টাইগাররা। এরপর তরুণ মোহাম্মদ নাইম ও মোহাম্মদ মিঠুন ৬১ বলে ৯৮ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ১১০ রানে পৌঁছে দেন। এরপরই ভারতের পেসার চাহারের হ্যাট্রিকে ৩৪ রান তুলতে আট উইকেট হারিয়ে ম্যাচ ও সিরিজ পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। ১৪৪ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা, ফলে ভারত ম্যাচ জেতে ৩০ রানে। 

হ্যাট্রিকসহ সাত রানে ছয় উইকেট নিয়েছেন চাহার। এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৭৪ রান করে ভারত।

নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। শুরুতেই ভারতকে ধাক্কা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল টাইগারদের। সেই কাজটি করেছেন পেসার শফিউল ইসলাম। ইনিংসের নবম বলে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন শফিউল। আগের ম্যাচে ৪৩ বলে ৮৫ রান করা রোহিত এবার দুই রানের বেশি করতে পারেননি।

অধিনায়ক হারানোর ধাক্কাটা সামলে ওঠার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও লোকেশ রাহুল। দ্রুত রান তুলে বাংলাদেশের বোলারদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন তাঁরা। তবে শফিউলের হাত ধরে দ্বিতীয় সাফল্য পায় বাংলাদেশ। ১৬ বলে চার বাউন্ডারি মেরে ১৯ রান করা ধাওয়ানকে থামিয়ে দেন তিনি।

৩৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। তৃতীয় উইকেটে সর্তকতার সাথে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন রাহুল ও শ্রেয়াস আইয়ার। মারমুখী মেজাজে রান করেছেন রাহুল। ৩৩তম বলে টি-২০ ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি করার একটু পরেই ভুল শট খেলে ইনিংসের সমাপ্তি টানেন তিনি। বাংলাদেশের পেসার আল-আমিনের শিকার হওয়ার আগে সাতটি চারে ৩৫ বলে ৫২ রান করেছেন রাহুল। আইয়ারের সাথে ৪১ বলে ৫৯ রান যোগ করেন তিনি।

রাহুল ফেরার পরে মারমুখী হয়ে উঠেন আইয়ার। আগে দুইটি ছক্কা হাঁকানো আইয়ার পঞ্চদশ ওভারে স্পিনার আফিফ হোসেনের প্রথম তিন বলে ছক্কা মারেন। ঐ ওভারের পঞ্চম বলে এক রান নিয়ে ২৭তম বলে টি-২০ ক্যারিয়ারে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান আইয়ার।

সপ্তদশ ওভারের প্রথম বলে ভারতের উইকেটরক্ষক রিশভ পান্তকে ছয় রানে বোল্ড করেন সৌম্য। একই ওভারের পঞ্চম বলে আইয়ারকেও বিদায় দিয়ে ভারতের রানের গতি কমানোর পথ সৃষ্টি করেন সৌম্য। নিজের একাদশ ম্যাচে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৩৩ বলে তিনটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৬২ রান করেন আইয়ার।

শেষের দিকে মনিশ পান্ডিয়ার ১৩ বলে তিনটি চারে অপরাজিত ২২ ও শিবম দুবের আট বলে নয় রানে পাঁচ উইকেটে ১৭৪ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। 

বাংলাদেশের শফিউল ও সৌম্য দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন।

ম্যাচ ও সিরিজ জয়ের জন্য ১৭৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে এদিনও ভালো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ওপেনার লিটন দাস। প্রথম ওভারে দুই বাউন্ডারিতে আট রান করেন লিটন। কিন্তু তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে চাহারের শিকার হয়ে বিদায় নেন তিনি। আট বলে নয় রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে।

এরপর ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলেই আউট হন সৌম্য। পরপর দু’বলে উইকেট নিয়ে শুরুতেই বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দেন চাহার। শুরুর ধাক্কা সামলে উঠার পথ খোঁজেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও মোহাম্মদ মিঠুন। উইকেট বাঁচিয়ে খেলতে মনোযোগী হন তাঁরা। তাই পাওয়ার প্লে’তে আশানুরূপ রান পায়নি বাংলাদেশ। রান উঠেছে মাত্র ৩৩। তাতেও শঙ্কিত হননি নাইম-মিঠুন। রানের গতি বাড়াতে থাকেন তাঁরা। বেশি মারমুখী মেজাজে ছিলেন নাইম। ৩৩তম বলেই তিন-ম্যাচের টি-২০ ক্যারিয়ারে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। তাঁর মারমুখী ব্যাটিংয়ের সাথে মিঠুনের ঠান্ডা মেজাজের পরিকল্পনায় দ্বাদশ ওভারেই বাংলাদেশের স্কোর তিন অংকে পা দেয়। এই জুটিও শতরানের দিকে এগোতে থাকে। দুই প্রান্ত দিয়ে বোলার ও ফিল্ডিং পজিশন পরিবর্তন করে নাইম-মিঠুন জুটি ভাঙতে পারছিলেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত। ফলে বাধ্য হয়েই সফল বোলার চাহারের শরাণাপন্ন হন দলপতি।

আগের স্পেলে দুই ওভারে এক রানে দুই উইকেট নেওয়া চাহার নাইম-মিঠুন জুটি ভাঙেন। ত্রয়ােদশ ওভারে আক্রমণে এসে শেষ ডেলিভারিতে মিঠুনকে বিদায় দেন চাহার। দুইটি চার ও একটি ছক্কায় ২৯ বলে ২৭ রান করেন মিঠুন। তৃতীয় উইকেটে নাইম-মিঠুনের ৬১ বলে ৯৮ রানের জুটিতে জয়ের আশা জাগে বাংলাদেশের।

কিন্তু ১৩ ওভারে দলীয় ১১০ রানে মিঠুনের প্রস্থান বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য বয়ে আনে। এরপর ১৩০ রানে পৌঁছুতে দ্রুতই চার উইকেট হারায় টাইগাররা; অর্থাৎ ২০ রানে পাঁচ উইকেট হারাতে হয় বাংলাদেশ দলের। আর সেখানেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয় মাহমুদুল্লাহবাহিনীর।

বাংলাদেশের আসল ক্ষতি করেছেন দুবে। চাহারের আঘাতের পরে দুই ওভারে তিন উইকেট নেন দুবে। তাঁর শিকার হন মুশফিকুর রহিম-আফিফ হোসেন ও নাইম। মুুশফিক ও আফিফ খালি হাতে ফেরেন। ২০ বছর বয়সী নাইমকে ৮১ রানে বোল্ড করেন দুবে। তাঁর ৪৮ বলের ইনিংসে ১০টি চার ও দুইটি ছক্কা ছিল। 

ষোড়শ ওভারের পরপর দু’বলে নাইম-আফিফকে বিদায় করেন দুবে। এর পরের ওভারে বাংলাদেশের শেষ ভরসা অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান স্পিনার যুজবেন্দ্রা চাহাল। ১০ বলে আট রান করেন মাহমুদুল্লাহ।

মাহমুদুল্লাহর বিদায়ে ম্যাচ জয়ের আশা ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ; কেননা তখন ১৯ বলে ৪৫ রান দরকার ছিল টাইগারদের, হাতে ছিল তিন উইকেট। শেষ পর্যন্ত চার বল বাকী থাকতে ১৪৪ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা।

অষ্টাদশ ওভারের শেষ বলে শফিউলকে ও শেষ ওভারের প্রথম দু’বলে যথাক্রমে মুস্তাফিজুর ও আমিনুলকে শিকার করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন চাহার। টি-টোয়েন্টিতে ভারতের প্রথম ও বিশ্বের দ্বাদশ হ্যাটট্রিক করা বোলার চাহার। ৩.২ বলে সাত রানে ছয় উইকেট পেয়েছেন তিনি।

Loading...