জমকালো এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্স (অ্যাপিক্টা) অ্যাওয়ার্ডস ২০১৯-এর বিজয়ীদের সংবর্ধনা প্রদান করলো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফ্টঅয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর লেক শোর হোটেলের লা ভিটা হলে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলো আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড।
চ্যাম্পিয়ন পদক তালিকায় অ্যাপিক্টা অ্যাওয়ার্ডসে চীন, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, ম্যাকাও, ব্রুনাই-কে পেছনে ফেলে স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তিনটি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন এবং পাঁচটি মেরিট পুরস্কারসহ আটটি পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশের প্রকল্পগুলো।
এশিয়ার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের অস্কার হিসেবে খ্যাত অ্যাপিক্টা’র এবারের আসরে চতুর্থবারের মতো বেসিস-এর সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। গত ২২ নভেম্বর ভিয়েতনামের হা লং বে শহরের ডায়মন্ড প্যালেসে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। টেকনোলজি (আইওটি) ক্যাটাগরিতে বন্ডস্ট্যাইন-এর পিজি ট্র্যাকার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল (জেনারেল) ক্যাটাগরিতে সূর্যমুখী প্রাণিসেবা ও কনজ্যুমার (মার্কেটপ্লেস অ্যান্ড রিটেইল) ক্যাটাগরিতে এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)-এর একশপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
কনজ্যুমার (মার্কেটপ্লেস) ক্যাটাগরিতে সিগমাইন্ড-এর ইন্টেলিজেন্ট কম্পিউটার ভিশন টেকনোলজি ফর ভিডিও অ্যানালিটিক্স, ইনক্লুশন অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিসেস ক্যাটাগরিতে সিএমইডি ডিজিটাল প্রাইমারি হেল্থ কেয়ার সার্ভিস মডেল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ক্যাটাগরিতে প্রাইডসিস আইটি লিমিটেড, পাবলিক সেক্টরে ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার (৩৩৩) ও দূতাবাস মেরিট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।
মেরিট অ্যাওয়ার্ড অর্জনকারীদের দেওয়া হয়েছে অ্যাপিক্টার বিশেষ সনদপত্র। অ্যাপিক্টার প্রেসিডেন্ট স্ট্যান সিং, ভিয়েতনাম সফ্টওয়্যার অ্যান্ড আইটি সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন (ভিনাসা)-এর সহ সভাপতি লু থান লং ও ভিনাসা-র মহাসচিব মিস নিগুয়ে থি থু জাং বিজয়ীদের পদক ও সনদপত্র তুলে দেন।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে অ্যাপিক্টায় বাংলাদেশের ইকোনমিক কো-অর্ডিনেটর রাশেদ কামাল বলেন, “এ-বছর আমরা সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছি। তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি বিভাগের পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের অন্যতম পদক্ষেপ - দেশিয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরা। এ-বছর অ্যাপিক্টায় এ-কাজটি আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি।”
আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মমিনুল ইসলাম বলেন, “বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডস থেকে মনোনীত ৩২টি প্রকল্প এবার ভিয়েতনামে আয়োজিত অ্যাপিক্টা অ্যাওয়ার্ডসে ভালো করেছে। আমরা নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছি। বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডসে আগামী পাঁচ বছরের জন্য আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড আর্থিক সহযোগী হিসেবে থাকাতে আমি গর্ব বোধ করছি। ”
অ্যাপিক্টা অ্যাওয়ার্ডস ২০১৯-এ বাংলাদেশ দলের প্রধান ও বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, “প্রথমবার আমরা একটি মেরিট, পরের দুইবার একটি করে চ্যাম্পিয়ন এবং কিছু মেরিট পজিশনে জিতেছিলাম। এবার সব রেকর্ড ভেঙে তিনটি চ্যাম্পিয়ন ও পাঁচটি মেরিট সম্মাননা অর্জন করেছি। এটা সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে - প্রতিনিয়ত আমরা ভালো করছি। আগামীবার এর চেয়েও ভালো ফলাফল করার আশা করছি।”
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রযাত্রায় বেসিস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডসে কিছুদিন আগেই ৬৯টি পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। সেখান থেকে ৩২টি প্রকল্প বিশ্বের ৩২৭টিরও বেশি প্রকল্পের সাথে লড়াই করে দেশের জন্য আটটি পুরস্কার জয় করে এনেছে। অ্যাপিক্টায় পুরস্কার প্রাপ্তির পরপরই আমি ভিডিওকলে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়েছি। আজ আবারও জানাচ্ছি প্রাণঢালা অভিনন্দন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের অনুপ্রেরণার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবারের অ্যাপিক্টা অ্যাওয়ার্ডসে বাংলাদেশের ভালো ফলাফল।”
অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের বাংলাদেশে অ্যাপিক্টার এক্সিকিউটিভ কমিটি, অ্যাপিক্টায় বাংলাদেশি বিচারক, ইকোনমিক কো-অর্ডিনেটরকে প্রধান অতিথি ফুলেল সংবর্ধনা প্রদান করেন।
ধন্যবাদ বক্তব্য জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ করেন বেসিস পরিচালক দিদারুল আলম।
– সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
