রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শহীদ-স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। আজ সকালে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি এই শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের একদিন আগে দেশ ও জাতির জন্য আত্মোৎসর্গকারী মহান বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এই পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করলেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এসে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ-সময় বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। এ-সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, তিনবাহিনীর প্রধানগণ, ঢাকা-উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)’র মেয়র এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এ-সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে, প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডিতে যান এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
দলীয় প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
এদিকে, রাষ্ট্রপতি মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে উপস্থিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং বঙ্গভবন সংশ্লিষ্ট সচিববৃন্দ এ-সময় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি দখলদারবাহিনীর সদস্যরা তাঁদের স্থানীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশাম্স-এর সহায়তায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিল্পী, প্রকৌশলী ও লেখকসহ দুই শতাধিক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে যায় এবং ঢাকার মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগসহ বিভিন্নস্থানে নির্যাতন করে হত্যা করে। এর মধ্যে রায়েরবাজার ও মিরপুর ছিল উল্লেখযোগ্য। এরপর থেকেই দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে স্মরণ করা হয়ে আসছে।
