loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

  • বার্সাকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজি

  • অ্যাটলেটিকোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ডর্টমুন্ড

  • রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী কর তাগিদ দিলেন

  • ক্যানাডায় আর্টসেলের আটটি কনসার্ট

বঙ্গবন্ধু বিপিএল-এর শিরোপা জিতলো রাজশাহী রয়্যাল্স


বঙ্গবন্ধু বিপিএল-এর শিরোপা জিতলো রাজশাহী রয়্যাল্স

সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী রয়্যাল্স: ১৭০/৪, ২০ ওভার (শুক্কুর ৫২, নওয়াজ ৪১*; আমির ২/৩৫)
খুলনা টাইগার্স: ১৪৯/৮, ২০ ওভার (শামসুর ৫২, রুশো ৩৭; ইরফান ২/১৮)
ফলাফল: রাজশাহী রয়্যাল্স ২১ রানে জয়ী

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে রাজশাহী রয়্যাল্স। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনালে খুলনা টাইগার্সকে ২১ রানে হারিয়েছে দলটি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশেষ বিপিএল-এর শিরোপা ঘরে তোলা রাজশাহী এই টুর্নামেন্টের নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়লো।

বিপিএল-এর সপ্তম আসরের ফাইনলে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৭০ রান করে রাজশাহী। জবাবে ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৪৯ রানের বেশি করতে পারেনি খুলনা।

এদিন টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন খুলনার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। রাজশাহীর পক্ষে ইনিংস শুরু করেন লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। বল হাতে প্রথম ওভারে আসেন পাকিস্তানের বাঁ-হাতি পেসার মোহাম্মদ আমির। প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে চার ওভারে ১৭ রানে চার উইকেট নিয়ে খুলনাকে ফাইনালে তোলা আমির এদিন প্রথম ওভারে সাত রান দেন। একটি বাউন্ডারি আসে আফিফের ব্যাট থেকে।

পরের ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রবি ফ্রাইলিঙ্ককে যুতসইভাবে খেলতে পারেননি আফিফ ও লিটন। ওভার থেকে আসে তিন রান। পরের ওভারে বাউন্ডারি দিয়ে আমিরকে স্বাগত জানান আফিফ। তবে তৃতীয় ওভারেই আফিফকে বিদায় দেন আমির। বাউন্সারকে হুক করতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দেন আফিফ; স্কয়ার লেগে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মেহেদি হাসান মিরাজ।

এরপরে উইকেট যান ইরফান শুক্কুর। লিটনকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন তিনি। তিনটি চারে বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন শুক্কুর। পাওয়ার প্লে’র শেষ বলে এ-ম্যাচে প্রথম বল মাঠের বাইরে ফেলেন লিটন। পেসার শফিউলকে ছক্কা মারেন তিনি। ছয় ওভারে মাত্র ৪৩ রান পায় রাজশাহী।

পাওয়ার প্লে’তে কম রান এলেও, উইকেট ধরে রাখার লক্ষ্য ছিল রাজশাহীর। তাই দেখেশুনেই খেলছিলেন লিটন-শুক্কুর। পাওয়ার প্লে’র পরে নয় ওভার পর্যন্ত একটি করে চার-ছক্কা মারেন লিটন-শুক্কুর। নয় ওভার শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ দাঁড়ায় এক উইকেটে ৬৩।

দশম ওভারের প্রথম বলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন লিটন। পেসার শহিদুল ইসলামের বলে স্কয়ার লেগে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। ২৮ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২৫ রান করেছেন লিটন। শুক্কুরের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৪০ বলে যোগ করেন ৪৯ রান।

এরপর ক্রিজে শুক্কুরের সঙ্গী হন শোয়েব মালিক। প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে খুলনার বিপক্ষে ৫০ বলে ৮০ রান করেও রাজশাহীর পরাজয় ঠেকাতে পারেননি মালিক। তবে এবার আর বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি; ১৩ বলে নয় রান করে ফ্রাইলিঙ্কের শিকার হয়েছেন। এক প্রান্ত দিয়ে লিটন-মালিক ফিরলেও, এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন শুক্কুর। ষষ্ঠ ম্যাচে এসে ৩০তম বলে হাফ-সেঞ্চুরি করেন তিনি। অবশ্য এরপরে নিজের ইনিংস আর বড় করতে পারেননি, আমিরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৫২ রানে আউট হন শুক্কুর। তাঁর ইনিংসে ছয়টি চার ও দুইটি ছক্কা ছিল।

শুক্কুর যখন আউট হন তখনও ইনিংসের ৩৪ বল বাকী, উইকেটে ছিলেন রাজশাহীর অধিনায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল ও পাকিস্তানের মোহাম্মদ নাওয়াজ। পরের ১৬ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ১৭ রান যোগ করেছেন নাওয়াজ-রাসেল। ১৭ ওভার শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ ছিল চার উইকেটে ১১৬। যাহোক, শেষ তিন ওভারে যথাক্রমে ২১, ১৮ ও ১৫ রান করেন রাসেল-নাওয়াজ। ফলে চার উইকেটে ১৭০ রানের সংগ্রহ পায় রাজশাহী। পঞ্চম উইকেটে ৩৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ৭১ রান যোগ করেন তাঁরা।

একবার জীবন পেয়ে তিন ছক্কায় ১৬ বলে অপরাজিত ২৭ রান করেছেন রাসেল। ছয়টি চার ও দুইটি ছক্কায় ২০ বলে অপরাজিত ৪১ রান করেন নাওয়াজ। 

খুলনার আমির ৩৫ রানে দুই উইকেট পেয়েছেন।

জবাবে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় খুলনা। আগের দুই ম্যাচে অপরাজিত ১১৫ ও ৭৮ রান করা ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত শূন্য হাতে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে রাজশাহীর পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ ইরফানকে পয়েন্ট দিয়ে কাট করেন শান্ত; ঝাপিয়ে পড়ে ক্যাচ নেন লিটন। আরেক ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজও ব্যর্থ। দুই রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। তাই প্রথম ১১ বলের মধ্যে ১১ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে খুলনা।

এ-অবস্থায় দলের হাল ধরেন শামসুর রহমান ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলো রুশো। এই জুটি দলকে লড়াইয়ে ফেরান। ৫৩ বলে ৭৪ রান করেছেন তাঁরা। অবশ্য দলীয় ৪৪ রানেই থামতে পারতো জুটি, যদি রাজশাহীর আবু জায়েদ রুশোর ক্যাচটি না ফেলতেন। ষষ্ঠ ওভারে পাকিস্তানের শোয়েব মালিকের বলে কাভার দিয়ে মারতে গিয়ে জায়েদকে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি; কিন্তু সেটি ফেলে দেন জায়েদ। ফলে ১৮ রানে জীবন পান রুশো। অবশ্য জীবন পেয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। নওয়াজের বলে রাসেলকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ২৬ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২৬ রান করেছেন রুশো।

রুশো থামলেও ৩৮তম বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন শামসুর। এরপরই শামসুরকে বিদায় দেন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। চতুর্দশ ওভারে দলীয় ১০১ রানে আউট হন শামসুর। এ-অবস্থায় জয়ের জন্য ৭০ রান দরকার ছিল খুলনার।

আশার প্রদীপ হিসেবে টিকে ছিলেন মুশি, আফগানিস্তানের নাজিবুুল্লাহ জাদরান ও ফ্রাইলিঙ্ক। কিন্তু তিনজনের কেউই ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি। মুশফিক ২১, জাদরান চার ও ফ্রাইলিঙ্ক ১২ রানে আউট হন। শেষ পর্যন্ত আট উইকেটে ১৪৯ রান করে খুলনা। রাজশাহীর ইরফান, রাসেল ও রাব্বি দুইটি করে উইকেট শিকার করেছেন।

ফাইনাল ও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন রাজশাহীর অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল।

Loading...