বিখ্যাত সুরকার, সংগীতজ্ঞ, বাংলা খেয়ালের প্রবর্তক আজাদ রহমান আর নেই। আজ শনিবার (১৬ মে) বিকেলে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে এ-তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
জানা গেছে , আজাদ রহমান অনেকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। শুক্রবার (১৫ মে) তাঁকে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বরেণ্য এই সংগীত পরিচালকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় আজাদ রহমানের জন্ম। তিনি রবীন্দ্র-ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খেয়ালে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
১৯৬৩ সালে কলকাতায় ‘মিস প্রিয়ংবদা’র সংগীত পরিচালনার মধ্যদিয়ে আজাদ রহমানের চলচ্চিত্রে প্রবেশ। সেই ছবিতে তাঁর সুরে কণ্ঠ দিয়েছিলেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখার্জি ও প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আজাদ রহমানের সুরারােপিত প্রথম ছবি বাবুল চৌধুরীর ‘আগন্তুক’। তাঁর সুর ও কণ্ঠে ‘এপার ওপার’ ছবির ‘ভালোবাসার মুল্য কত’, ‘ডুমুরের ফুল’-এর ‘কারো মনে ভক্তি মায়ে’, ‘দস্যু বনহুর’-এর ‘ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়’ গানগুলো সত্তর দশকে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
এছাড়া, ‘বাদী থেকে বেগম’, ‘এপার ওপার’, ‘পাগলা রাজা’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘আমার সংসার’, ‘মায়ার সংসার’, ‘দস্যুবনহুর’, ‘ডুমুরের ফুল’, ‘মাসুদ রানা’সহ বহু চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি।
আজাদ রহমানে বলা হয় বাংলা খেয়ালের প্রবর্তক। বাংলা একাডেমি থেকে দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা সংগীতবিষয়ক বই ‘বাংলা খেয়াল’।
তিনি কালজয়ী দেশাত্মবোধক গান ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো’র সুরকার।
তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অনেক স্বীকৃতি রয়েছে আজাদ রহমানের ঝুলিতে।