দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত আরও ২,০২৯ জন শনাক্ত হয়েছেন। ফলে এ-পর্যন্ত শনাক্ত হলেন ৪০,৩২১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হওয়ায় এ-পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা হলো ৫৫৯ জন। এছাড়া, গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫০০ জন। এতে, করোনা-আক্রান্তদের মধ্যে এ-পর্যন্ত ৮,৪২৫ জন সুস্থ হলেন।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ-তথ্যসমূহ জানান।
তিনি জানান, আজ আক্রান্তের হার ২১.৭৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০.৮৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৩৯ শতাংশ বলে তিনি জানান।
ডা. নাসিমা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৯,২৬৭টি। গত ২৪ ঘন্টায় নতুনভাবে সিরাজগঞ্জের এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজসহ ৪৯টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯,৩১০টি নমুনা। গত ২৪ ঘন্টায় গতদিনের চেয়ে ১,২৯৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ-পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৭৬৬টি।
তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারী ১৫ জনের মধ্যে পুরুষ ১১ জন ও নারী চারজন। তাঁদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের সাতজন ও চট্টগ্রাম বিভাগের আটজন। এরমধ্যে ঢাকা শহরের বাসিন্দা ছয়জন, নারায়ণগঞ্জের একজন, চট্টগ্রাম শহরের দুইজন, চট্টগ্রাম জেলার দুইজন, কক্সবাজারের দুইজন এবং কুমিল্লার দুইজন রয়েছেন।
বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ২৪৮ জন এবং আইসোলেশনে থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৩৮ জন। এ-পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ২,৬৩৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৪,৯৮৪ জন।
সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩,২৮৪টি। ঢাকার ভেতরে রয়েছে ৭,২৫০টি। ঢাকা শহরের বাইরে ৬,০৩৪টি শয্যা রয়েছে। আইসিইউ সংখ্যা রয়েছে ৩৯৯টি, ডায়ালাসিস ইউনিট ১০৬টি।
তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৪,০০১ জনকে, কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২,৪০৪ জন। মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ১৬ হাজার ৮১২ জন। মোট কোয়ারেন্টিনে ছিলেন ২ লাখ ৭৫ হাজার ১০৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৮,২৯৩ জন।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে – যার মাধ্যমে সেবা দেয়া যায় ৩১,৯৯১ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এ-পর্যন্ত সংগ্রহ ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ৭৩৭টি। ২৪ ঘন্টায় বিতরণ করা হয়েছে ১৬,৬০০ টি এবং এ-পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২০ লাখ ৮২ হাজার ৯৩৪টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮০৩টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৯৮টি এবং এ-পর্যন্ত প্রায় ৮১ লাখ ৮৯ হাজার ১৭৬টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসাবিষয়ে গত ২৪ ঘন্টায় আরও ১৪ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ফলে, এ-পর্যন্ত ১৬,২০১ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৪,২১৭ জন হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. নাসিমা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১,১৬৯ জনসহ এ-পর্যন্ত বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৭ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা-আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৮,২৫০ জন। এ-পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৮ হাজার ৫২৩ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২১৯ জন এবং এ-পর্যন্ত ৬,৩৫৯ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৭ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা-আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৮৪,৩১৪ জন। এ-পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৫ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৫,৫৮১ জন এবং এ-পর্যন্ত ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫ জন।
“আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে” উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি এদিনও সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া, ঘরের বাইরে গেলে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে ঠিকমতো মাস্ক পরা এবং মাস্ক পুনর্ব্যবহার ও পরিষ্কার রাখার বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন ডা. নাসিমা।
পাশাপাশি, ২০ সেকেন্ড ধরে সঠিকভাবে হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্বের বিষয়টিও পুনরুল্লেখ করেন তিনি।
