loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

  • বার্সাকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজি

  • অ্যাটলেটিকোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ডর্টমুন্ড

  • রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী কর তাগিদ দিলেন

  • ক্যানাডায় আর্টসেলের আটটি কনসার্ট

আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আর নেই


আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আর নেই

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, ১৪ দলের মুখপাত্র ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, এমপি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার (১৩ জুন) বেলা সোয়া ১১টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

গত ১ জুন করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজ্ড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। সেদিন রাতে তাঁর শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। এরপর ৫ জুন ভোরে মোহাম্মদ নাসিমের স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) হয়। ওইদিনই জরুরিভাবে তাঁর অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পরে চিকিৎসকরা তাঁকে ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। 

৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নাসিমের চিকিৎসায় পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ড শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে তাঁকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নেন। ওইসময়ের মধ্যে অবস্থার উন্নতি না-হওয়ায় পর্যবেক্ষণের সময় আরও ৭২ ঘন্টা বৃদ্ধি করা হয়। এরমধ্যে অবশ্য নাসিমের করোনা টেস্ট দুইবারই নেগেটিভ এসেছিল।

উন্নত চিকিৎসার জন্য এক পর্যায়ে  নাসিমকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার চেষ্টাও করা হয়েছিল ৷ কিন্তু শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হওয়ায় বিদেশে নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মোহাম্মদ নাসিম ১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা (শহীদ ক্যাপ্টেন) এম মনসুর আলী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন, যিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে গঠিত বাংলাদেশ সরকারে অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এবং স্বাধীনতাপরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

মোহাম্মদ নাসিমের মায়ের নাম মোসাম্মৎ আমিনা খাতুন। তিনি আমেনা মনসুর হিসেবেই পরিচিত।

মোহাম্মদ নাসিম তিন সন্তানের জনক। তিনি জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালেও তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এছাড়া, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

এর আগে ১৯৯৬ সালের সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।

রাজনীতির পাশাপাশি সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। ঢাকাসহ নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন তিনি।

বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ডা. এস এ মালেক ও আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হকইনুসহ মন্ত্রী সভার সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাবৃন্দ গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

রোববার (১৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টায় বনানী কবরস্থান মসজিদে মোহাম্মদ নাসিমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।

মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয় জানাজায় দলীয়- নেতাকর্মীদের ব্যাপকভাবে উপস্থিত না-হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, “আপনারা সবাই যে-যাঁর অবস্থান থেকে তাঁর জন্য দোয়া করবেন। তিনি যেহেতু দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন, তাই দেশের এই পরিস্থিতিতে তাঁর মরদেহ কোথাও নেয়া হবে না। ”

Loading...