loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • কুমিল্লা ইপিজেড-এ চামড়া কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান

  • নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলংকা

  • অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা

  • ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

  • প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনার জয়

কোভিড-১৯: দেশে ২৪ ঘন্টায় সুস্থতার হার বেড়েছে


কোভিড-১৯: দেশে ২৪ ঘন্টায় সুস্থতার হার বেড়েছে

বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের ১১৯তম দিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার। গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২৯ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১৩ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৪২ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এ-পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ১,৯৯৭ জন।

শনাক্তের বিবেচনায় শনিবার (৪ জুলাই) মৃত্যুর হার ১.২৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১.২৬ শতাংশ। আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)-সংক্রান্ত দৈনিক অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ-তথ্যসমূহ জানান।

অধ্যাপক নাসিমা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল ও বাসায় সুস্থ হয়েছেন ২,৬৭৩ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১,০৬৭ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১,৬০৬ জন। এ-পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭০,৭২১ জন। শনাক্ত বিবেচনায় আজ সুস্থতার হার ৪৪.২৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৪৩.৫১ শতাংশ।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪,৭২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩,২৮৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৭৪ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৪,৬৫০টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ৩,১১৪ জন।

তিনি জানান, দেশে এ-পর্যন্ত ৮ লাখ ৩২ হাজার ৭৪টি নমুনা পরীক্ষায় ১ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯.১৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২.৩৩ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ২১.২৬ শতাংশ।

ডা. নাসিমা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩,৮৭১টি। আগের দিন সংগৃহীত হয়েছিল ১৪,৭৮১টি। 

গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৭১টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হলেও ৬৪টি পরীক্ষাগারের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল জানানো হয়। এসব পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪,৭২৭টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪,৬৫০টি।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারী ২৯ জনের মধ্যে পুরুষ ২১ জন ও নারী আটজন। এ-পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ ১,৫৮৭ জন ও নারী ৪১০ জন। শতকরা হার হিসেবে ৭৯.৪৭ শতাংশ পুরুষ ও ২০.৮৩ শতাংশ নারী মৃত্যুবরণ করেছেন। 

গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিভাগে নয়জন, চট্টগ্রাম বিভাগে চারজন, রাজশাহী বিভাগে সাতজন, খুলনা ও সিলেট বিভাগে তিনজন করে ছয়জন, বরিশাল বিভাগে দুইজন, ময়মনসিংহ বিভাগে একজন। তাঁদের মধ্যে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের, বাসায় একজনের। হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এসেছেন তিনজন।

এ-পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে ১,০৪১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫২১ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০১ জন, খুলনা বিভাগে ৮২ জন, বরিশাল বিভাগে ৬৭ জন, সিলেট বিভাগে ৮৪ জন, রংপুর বিভাগে ৫৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

গত ২৪ ঘন্টায় মৃতদের মধ্যে ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে একজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে নয়জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে চারজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন ও ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন বলে তিনি জানান।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক আরও জানান, এ-পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে তাঁদের মধ্যে, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ০.৬ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১.২০ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩.৫১ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৭.৪১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৪.৭২ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২৯.০৪ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্ব বয়সের ৪৩.৫২ শতাংশ রয়েছেন।

অধ্যাপক নাসিমা জানান, ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬,০৭৫টি, আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ১৪৯টি। সারাদেশে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪,৭৭৫টি, আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪০১টি। 

সারাদেশে বর্তমানে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১,১৪১টি, হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ২০৭টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর-এর সংখ্যা ৯৮টি।

০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে, কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড়া পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি-না – এই নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে বলে তিনি জানান।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭৪৪ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬,৪৪৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২৪২ জন। এ-পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১৩,৬৭৪ জন। এ-পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৩০,১২৩ জনকে।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২,২৪২ জনকে। এ-পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৫ হাজার ১৪৫ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ১,৬৪৮ জন। এ-পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ৯ হাজার ৯৯৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৪,১৫০ জন।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) গত ২৪ ঘন্টায় সংগ্রহ বা বিতরণ হয়নি। এ-পর্যন্ত সংগ্রহ ২৫ লাখ ২৮ হাজার ২৪৫টি। এ-পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২৪ লাখ ৭ হাজার ৩৬৪টি। বর্তমানে ১ লাখ ২০ হাজার ৮৮১টি পিপিই মজুদ রয়েছে।

গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৪৩১টি এবং এ-পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৮৮টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসাবিষয়ে এ-পর্যন্ত ১৬,৪১৪ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৪,২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিআর-এর হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।

ডা. নাসিমা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১,৪০৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ৪১ হাজার ৫০৫ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩ জুলাই পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা- আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ২৭,০৫০ জন। এ-পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৫ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৭১ জন এবং এ-পর্যন্ত ২৩,২৪০ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩ জুলাই পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা-আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭২৩ জন। এ-পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৫ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৫,০৩২ জন এবং এ-পর্যন্ত ৫ লাখ ১৭ হাজার ৮৭৭ জন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি করে পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় এদিনে বুলেটিনে।

Loading...