বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে বনানীস্থ নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
একুশে পদকপ্রাপ্ত, ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত আলোকচিত্রী সাইদা খানমের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি-সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছিলেন। আজ মঙ্গলবার বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হবে। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
সাইদা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে মাস্টার্স করেন। তাঁর বাবা আবদুস সামাদ খান, মা নাছিমা খাতুন। পৈতৃক বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। তবে জন্ম পাবনায়, ১৯৩৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর। তিনি স্থিরচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেই সময় পূর্ব-বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশ) তিনিই ছিলেন একমাত্র ও প্রথম নারী আলোকচিত্রী।
সাইদা খানমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমপি। এক শোকবার্তায় প্রতিমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৫০ এর দশকে বেগম পত্রিকায় আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন সাইদা খানম। কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের মতো বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালকের সাথেও। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে ঢাকার আজিমপুর এলাকায় অস্ত্র হাতে প্রশিক্ষণরত নারীদের ছবি তোলেন।
অদম্য সাহসী আলোকচিত্রী সাইদা খানমের অনুপ্রেরণায় পরবর্তীতে এই সাহসিকতা ও মর্যাদাপূর্ণ পেশায় অনেক নারীর পদচারণা ঘটেছে উল্লেখ করে কে এম খালিদ বলেন, বাংলাদেশে নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ এই মহীয়সী নারী তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
সাইদা খানম ছবি তোলার পাশাপাশি লেখালেখি করতেন সবসময়। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে – ‘ধূলোমাটি’, ‘স্মৃতির পথ বেয়ে’, ‘আমার চোখে সত্যজিৎ রায়’।