বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন, শুভ মহালয়া আজ। এদিন থেকেই শুরু দেবীপক্ষের। শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীদুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই ‘চন্ডী’তেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা এবং দেবীর প্রশস্তি। শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া।
এ-বছরের পূজা অন্যান্য বছরের মতো নয়। করোনা-আতঙ্কের আবহেই এবার দেবীপক্ষের সূচনা হলো। আর মহামারীর দুর্যোগ মাথায় নিয়েই এবার হবে মাতৃবন্দনা।
পুরাণমতে, এদিন দেবীদুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এদিন থেকেই শারদীয় দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ছয়দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়। মহালয়া থেকে দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি শুনতে পাওয়া গেলেও এবার ছয়দিন পরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে না। আশ্বিন মাস মল (মলিন) মাস হওয়ার কারণে এবার দূর্গাপুজা শুরু হবে প্রায় একমাস পরে, আগামী ২১ অক্টোবর থেকে। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
আজ ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহালয়ার বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। দেশের অন্যান্য মন্দিরেও এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার জানিয়েছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তদের নিরাপদে মহালয়া উপভোগ করতে আজ সকাল ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত চ্যানেল২৪ এ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের মহালয়া অনুষ্ঠান।
দেবীদুর্গার আগমনী উপলক্ষে দিনটি উদযাপন করতে ভোর সাড়ে পাঁচটায় বনানী মাঠে দেবীবরণের আয়োজন করেছে গুলশান-বনানী সর্বজনীন পূজা পরিষদ।
মহিষাসুরমর্দিনী দেবীদূর্গা সমস্ত অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস।
মহালয়ার আর একটি দিক হলো – এই মহালয়া তিথিতে যাঁরা পিতৃ-মাতৃহীন, তাঁরা তাঁদের পূর্বপূরুষের স্মরণ করে তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন। সনাতনধর্ম অনুসারে, এই দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়। প্রয়াত আত্মার যে-সমাবেশ হয় – তাঁকে মহালয়া বলা হয়। মহালয় থেকে মহালয়া।
(সংকলিত)