সব ধরনের ক্রিকেটে থেকে সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞায় হতাশই হয়েছিলো ক্রিকেট বিশ্ব। তবে আজ বুধবার তাঁর নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) থেকেই তিনি মুক্ত। ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটে ফিরতে সাকিবের আর কোনো বাধা থাকছে না।
বৃহস্পতিবার থেকে ক্রিকেট খেলতে ও ক্রিকেটের যেকোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন সাকিব। আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে একটি টি-টোয়ন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই টুর্নামেন্ট দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরতে প্রস্তুত তিনি। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরবেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
এক বছর আগে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক সাকিবকে নিষিদ্ধ করেছিলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এরমধ্যে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছিল আইসিসি। গত বছর আইসিসি দুর্নীতি দমনের তিনটি নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ স্বীকার করার পরে তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ মেনে নেন সাকিব এবং দুর্নীতি দমন ট্রাইবিউনালের শুনানির পরিবর্তে আইসিসি’র শাস্তিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেছিলেন তিনি।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরে আইসিসির দেয়া সকল শর্ত পূরণ করায় বৃহস্পতিবার থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পুনরায় খেলতে পারবেন সাকিব।
যদি শ্রীলংকা সফরটি স্থগিত না হতো, তাহলে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারতেন সাকিব। শ্রীলংকা সফর দিয়ে ফেরার লক্ষ্যে, গত সেপ্টেম্বরে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও নাজমুল আবেদিন ফাহিমের অধীনে চার সপ্তাহের অনুশীলন ক্যাম্প সম্পন্ন করেছেন তিনি। অনুশীলন পর্বটি একেবারে রুদ্ধদ্বার অবস্থায় হয়েছিল।
ক্রিকেটে ফিরতে মুখিয়ে আছেন সাকিব – এমনটা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। অবশ্য, মাঠে ফেরার পরে সাকিবের কাছ থেকে আহামরি কিছু আশা না করার আহ্বান করেছেন তিনি।
ছুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার আগে সাকিবকে নিয়ে ডোমিঙ্গো গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আমি তাঁর সাথে কথা বলেছি। তিনি তাঁর ফিটনেস নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করছেন। তিনি এখন দেশের বাইরে। ফিট হতে তাঁর কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হবে এবং আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে। আমরা জানি, সাকিব বড় মাপের খেলোয়াড়। তাই আমি আশা করছি, বাংলাদেশের হয়ে তাঁর ২০২১ মৌসুমটি দুর্দান্ত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাকিব অন্যান্য ক্রিকেটারের মতোই। তাঁকে মানিয়ে নিতে কিছুদিন ক্রিকেট খেলতে হবে। কিন্তু আপনি যদি, তাঁর কাছ থেকে শুরুতেই প্রত্যাশা করেন এবং অলৌকিক পারফর্মেন্স আশা করেন, তবে আপনাকে ধৈর্য্য ধরতে হবে।’
ডোমিঙ্গো বলেন, ‘এক বছর ধরে ক্রিকেট খেলছেন না তিনি। সাকিব বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। তবে তাঁরও পথ খুঁজে বের করতে হবে। থ্রো ও বোলিং মেশিনে খেলা আর ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বোলারের মুখোমুখি হবার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।
সেরা অলরাউন্ডারকে ড্রেসিংরুমে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সাকিব সতীর্থরা। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘আমরা জানি অনেক বছর ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সেরা খেলোয়াড় সাকিব। আমরা সকলেই অধীর আগ্রহে ড্রেসিংরুমে তাঁর ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। এটি জেনে ভালো লাগছে, আমরা তাঁকে দেখতে পারবো, তাঁর সাথে কথা বলতে পারবো এবং একসাথে সময় কাটাতে পারবো।’
নিষিদ্ধ থাকায় অবস্থা খুব বেশি সিরিজ মিস করতে হয়নি সাকিবকে। কেননা, কোভিড-১৯ এর কারণে বেশিরভাগ সিরিজই স্থগিত হয়েছে। নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় ভারত সফর মিস করেছেন সাকিব। ঐ সফরে দু’টি টেস্ট ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ছিলো। এছাড়া, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, পাকিস্তানের বিপক্ষে দু’টি টি-২০ ও একটি টেস্ট এবং দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে, দু’টি টি-টোয়েন্টি ও একটি টেস্ট ম্যাচ মিস করেছেন সাকিব।
আগামী বছরের জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরবর্তী আন্তর্জাতিক সিরিজ। করোনার কারণে বাংলাদেশের আটটি টেস্ট এবং বেশক’টি ওয়ানডে টি-২০ ম্যাচ স্থগিত হয়েছে।
