দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে জাল স্পর্শ করলেন রাউল অস্কার বেসেরা। আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ডের গোলই শেষ ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি অসাধারণ সেইভে নিজেদের জাল অক্ষত রাখতে পেরেছেন আনিসুর রহমান জিকো। আর তাঁদের নৈপুণ্যে এবারের আসরের পাঁচ ম্যাচের সবগুলো জিতে ফেডারেশন কাপের শিরোপা ধরে রাখলো বসুন্ধরা কিংস।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোববার (১০ জানুয়ারি) রোমাঞ্চকর ফাইনালে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে ১-০ গোলে হারিয়েছেন অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। ফেডারেশন কাপে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো ক্লাবটি। গত আসরে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে জিতে শিরোপা-উৎসব করেছিল বসুন্ধরা।
এদিন ম্যাচ শুরুর চতুর্থ মিনিটে প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠা সাইফের জালে বল পাঠিয়েছিল বসুন্ধরা; তবে অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় গোলটি। ষোড়শ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ। সাইফের গোলরক্ষককে পাপ্পু হোসেনকে একা পেয়েও জালে বল জড়াতে পারেননি তিনি।
দুই মিনিট পরে ম্যাচে নিজেদের প্রথম সুযোগ পায় সাইফ। বসুন্ধরার ডি-বক্সে কেনেথ ইকেচুকু বল দেন জন ওকোলিকে। তবে, তাঁর শট চলে যায় গোলপোস্টের উপর দিয়ে। বিংশতম মিনিটে গোলরক্ষক জিকোর দক্ষতায় গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় বসুন্ধরা। মিডফিল্ডার ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন পুরো ম্যাচে ভালো খেলা এই তারকা।
২৮তম মিনিটে দূরপাল্লার নেন বসুন্ধরার ফরোয়ার্ড রিমন হোসেন, কিন্তু গোলরক্ষক পাপ্পুকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি। চার মিনিট পরে আবারও সুযোগ তৈরি করে বসুন্ধরা। ইরানি ডিফেন্ডার খালেদ শাফির থ্রো-ইন সাইফের রক্ষণভাগ বিপদমুক্ত করতে না পারলে পেয়ে যান জোনাথন ফার্নান্দেস। তবে তাঁর শট চলে গেছে গোলপোস্ট ঘেঁষে।
প্রথমার্ধের যোগ হওয়া সময়ে রহমত মিয়ার তীব্র গতির শট ঠেকিয়ে দেন জিকো।
দ্বিতীয়ার্ধের তিন মিনিট পরে এগিয়ে যেতে পারতো সাইফ। প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে ফের জোরালো শট নেন রহমত, কিন্তু জিকোকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন। আরও একবার অসাধারণ নৈপুণ্যে গোল রক্ষা করেন জিকো।
৫২তম মিনিটে গোল পায় বসুন্ধরা। দুই বিদেশির প্রচেষ্টায় লক্ষ্যভেদ করে দলটি। মাঝমাঠ থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন বল দেন আর্জেন্টাইন বেসেরাকে। সেটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গড়ানো শটে পাপ্পুকে ফাঁকি দেন তিনি (১-০)।
এই আসরে এটি তাঁর পঞ্চম গোল। পাঁচ ম্যাচের সবগুলোতেই জাল পৌঁছালেন তিনি। সমান-সংখ্যক গোল নিয়ে গোলদাতাদের তালিকায় শীর্ষে আছেন ইকেচুকুও।
৬৯তম আবারও অনন্য সাধারণ সেইভ করেন জাতীয় দলের গোলরক্ষক জিকো। ইকেচুকুর দূরপাল্লার শট লাফিয়ে হাতের ছোঁয়ায় ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন তিনি। চার মিনিট পর ফের গোলমুখে শট নেন নাইজেরিয়ান ইকেচুকু, কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে সেটি।
এক গােলে এগিয়ে যেয়ে রক্ষণভাগ আরও দৃঢ় করে খেলতে থাকে বসুন্ধরা। এ-সময় গোলরক্ষার দিকেই তাঁদের মনোযোগ ছিল বেশি। সেই সুযোগে বেশ কিছু ভালো সুযোগ তৈরি করেছে সাইফ। যাহোক, ম্যাচের শেষদিকে আরও দুইবার তাঁদেরকে হতাশ করেন জিকো।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবলের অন্যতম শক্তিশালী দল বসুন্ধরা। তবে, বেসেরার প্রচেষ্টা পাপ্পু রুখে দেওয়ায় স্কোরলাইনে পরিবর্তন আসেনি। যদিও তাতে বসুন্ধরার জয়ে কোনো প্রভাব ফেলেনি।