loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • কুমিল্লা ইপিজেড-এ চামড়া কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান

  • নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলংকা

  • অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা

  • ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

  • প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনার জয়

বার্সাকে হারিয়ে সুপার কাপ জিতলো বিল্বাও


বার্সাকে হারিয়ে সুপার কাপ জিতলো বিল্বাও

ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের তখন শেষ মিনিট। ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা এফ. সি. বার্সেলোনা শিরোপা-উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু আক্রমণে প্রাধান্য দেখিয়েও পিছিয়ে থাকা অ্যাথলেটিক বিল্বাও হাল ছাড়েনি। সমতায় ফিরে শিরোপার ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে টেনে জয়সূচক গোলও আদায় করে নিয়েছে দলটি। ফলে, ছয় বছর পরে কোনো প্রতিযোগিতার শিরোপা জেতার স্বাদ পেলো মার্সেলিনো গার্সিয়ার দল।

রোববার (১৭ জানুয়ারি) রাতে সেভিয়াতে স্প্যানিশ সুপার কাপের (সুপার কোপা) রোমাঞ্চকর ফাইনালে ৩-২ গোলে জিতেছে বিল্বাও। এই প্রতিযোগিতায় ক্লাবটির এটি তৃতীয় শিরোপা। শেষবার তাঁরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০১৫ সালে। সেই সময় দুই লেগের ফাইনালে বার্সেলোনাকেই ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল ক্লাবটি।

এদিন বরাবরের মতোই বল দখলে আধিপত্য দেখিয়েছে ক্যাটালান দলটি। দুই গোল করে দুবার দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন আঁতোয়ান গ্রিজমান। অন্যদিকে, আক্রমণাত্নক খেলা উপহার দেওয়া বিলবাও প্রথমার্ধে অস্কার দি মার্কোস ও দ্বিতীয়ার্ধে আসিয়ের ভিয়ালিবরের লক্ষ্যভেদে গোল শোধ করে দেয়। এরপর অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে ব্যবধান গড়ে দেন ইনাকি উইলিয়াম্স।

একেবারে শেষে বার্সার হতাশা বাড়িয়ে সরাসরি লালকার্ড দেখেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। মাঠে নামলেও এদিন পুরো ছন্দে ছিলেন না এই আর্জেন্টাইন তারকা।

ম্যাচের ২৫তম মিনিটে সঙ্গে লেগে থাকা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে এড়িয়ে ফাঁকায় চলে গিয়েছিলেন আরাউহো। কিন্তু মেসির ফ্রি-কিকে পা ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। পরের মিনিটে গোলের প্রথম ভালো সুযোগ তৈরি করে বিলবাও। ডি-বক্সের ভেতর থেকে আন্দার কাপার জোরালো শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগান।

ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে আক্রমণের ধার বাড়ায় বার্সা। ৩৭তম মিনিটে প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে শট নেন মেসি; তবে তা লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে দি মার্কোসের ক্রসে রাউল গার্সিয়ার হেড পোস্টের অনেকটা উপর দিয়ে চলে যায়।

৪০তম মিনিটে গোল পেয়ে যায় রোনাল্ড কোমানের দল। জর্ডি আল্বার কাছ থেকে ফিরতি বল পেয়ে মেসির নেওয়া শট বাধা পায় বিলবাওয়ের রক্ষণভাগে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তা পড়ে গ্রিজমানের সামনে। গড়ানো শটে জাল কাঁপান ফরাসি ফরোয়ার্ড (১-০)। বার্সার উল্লাস থাকতে থাকতেই অবশ্য সমতায় ফেরে বিল্বাও। ৪২তম মিনিটে উইলিয়ামসের বুদ্ধিদীপ্ত পাসে প্রথম ছোঁয়ায় দারুণভাবে বল জালে পাঠান দি মার্কোস (১-১)।

৫১তম মিনিটে ডানি গার্সিয়া ৩০ গজ দূর থেকে শট নিলেও পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি টার স্টেগানকে। দুই মিনিট পরে মেসির ফ্রি-কিকে পরাস্ত হয়েছিলেন বিল্বাও গোলরক্ষক উনাই সিমন। কিন্তু, বল পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।

৫৭তম মিনিটে রাউল লক্ষ্যভেদ করলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়। নয় মিনিট পরে দি মার্কোসের ক্রস আরাউহো বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে পেয়ে যান উইলিয়াম্স। অবশ্য, ভালো পজিশনে থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।

বার্সেলোনা ফের এগিয়ে যায় ৭৭তম মিনিটে। আল্বার পাসে প্রতিপক্ষের রক্ষণদেয়াল ভেঙে আরেকটি গড়ানো শটে জাল কাঁপান বিশ্বকাপজয়ী গ্রিজমান (২-১)। 

গোল হজমের পরপরই চারটি বদল আনেন মার্সেলিনো। সেই বদলিদেরই একজন ভিয়ালিবরে স্তব্ধ করে দেন বার্সাকে। ৯০তম মিনিটে ইকার মুনিয়াইনের ফ্রি-কিকে খুব কাছ থেকে টের স্টেগেনকে ফাঁকি দেন তিনি (২-২)।

অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে চোখ ধাঁধানো গোলে বিল্বাওকে ফাইনালে প্রথমবারের মতো এগিয়ে দেন উইলিয়াম্স। মুনিয়াইন ডি-বক্সের ভেতরে খুঁজে নেন তাকে। সামনে থাকা প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়কে দর্শক বানিয়ে তীব্রগতির শট নেন তিনি। বল দূরের পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে পৌঁছায় (৩-২)। টার স্টেগানের সুযোগই ছিল সেটি শট রুখে দেওয়ার।

১০৫তম মিনিটে সব হিসাবনিকাশ শেষ করে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন উনাই নুনেজ। কিন্তু মুনিয়াইনের ক্রসে পা স্পর্শ করাতে পারেননি তিনি। ছয় মিনিট পর উল্টো তাঁর কারণেই আত্মঘাতী গোল খেতে বসেছিল বিল্বাও। কিন্তু বল বাইরে চলে যাওয়ায় বেঁচে যায় বাস্ক অঞ্চলের ক্লাবটি।

১১২তম মিনিটে গ্রিজমান সুযোগ হাতছাড়া করার পরের মিনিটে তাঁর পথেই ফের হাঁটেন নুনেজ। দুজনই ফাঁকায় থেকেও ব্যর্থ হন গোল করতে। আট মিনিট পরে ভিএআর-এর সাহায্য নিয়ে লালকার্ড দেখানো হয় মেসিকে। মাঝমাঠে ভিয়ালিবরে পথ আটকালে রেকর্ড ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই তারকা মেজাজ হারিয়ে তাঁর মাথার পিছনে আঘাত করেন। বার্সেলোনার জার্সিতে ৭৫৩তম ম্যাচে মেসির এটি প্রথম লাল কার্ড পাওয়ার ঘটনা। আর্জেন্টিনার হয়ে খেলার সময় অবশ্য দুইবার লাল কার্ড দেখেছেন ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতা বহুগুণে বাড়িয়ে একটু পরেই শিরোপা উদযাপনে মেতে উঠে বিল্বাও।

Loading...