loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • মিলানকে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচ আগেই ইন্টারের ২০তম শিরোপা জয়

  • লেভাকুজেনের ৪৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড

  • ফুলহ্যামকে হারিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে লিভারপুল

  • তাইওয়ানে আবারও ভূমিকম্পের আঘাত

  • প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরকালে পাঁচটি দলিল স্বাক্ষর ও বহুমুখী সহযোগিতার সম্ভাবনা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একদিনের সিরিজ জিতলো টাইগাররা


ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একদিনের সিরিজ জিতলো টাইগাররা

সংক্ষিপ্ত স্কোর

টস: ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৪৮/১০, ৪৩.৪ ওভার (পাওয়েল ৪১, ওটলি ২৪, মিরাজ ৪/২৫, মুস্তাফিজ ২/১৫, সাকিব ২/৩০)
বাংলাদেশ: ১৪৯/৩, ৩৩.২ ওভার (তামিম ৫০, সাকিব ৪৩*, রেইফার ১/১৮)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ-সেরা: মেহেদী হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ)
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ

একদিনের ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হ্যাট্রিক সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলো বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাত উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। ফলে, সিরিজ নিশ্চিতের পাশাপাশি ২-০ ব্যবধানে এগিয়েও গেলো তামিম ইকবালের দল। এর আগে ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে এবং নিজেদর মাঠে সিরিজ জিতেছিলো বাংলাদেশ।

টানা তৃতীয়সহ পঞ্চমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। পাশাপাশি এটি টাইগারদের ২৬তম ওডিআই সিরিজ জয়। এ-পর্যন্ত ৭৩টি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ, যার মধ্যে জিতছে ২৬টি, পরাজিত হয়েছে ৪৪টিতে এবং ড্র করেছে চারটি।

আজ অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের ঘুর্ণিতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪৮ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। ৪ উইকেট নেন মিরাজ। জবাবে ৩৩.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১৪৯ রান করে জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ।

‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট সিরিজ’-এর দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে শুক্রবার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ক্যারিবীয়রা। প্রথম ম্যাচে ১২২ রানে অলআউটের স্মৃতি মনেই ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তাই, সর্তকতার সাথে খেলতে থাকেন দলের দুই ওপেনার সুনিল অ্যামব্রিস ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা কেজর্ন ওটলি। তবে উইকেটে সেট হওয়ার আগেই এই জুটিকে বিচ্ছিন্ন করেন বাংলাদেশের বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। গালিতে অ্যামব্রিসের দারুণ এক ক্যাচ নেন মিরাজ। পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ১০ রানে থামতে হয় অ্যামব্রিসকে (৬)।

সতীর্থকে হারিয়ে স্বাচ্ছেন্দ্যেই খেলছিলেন ওটলি। তবে তাঁর পথে বাঁধা হয়ে আসেন স্পিনার মিরাজ। চতুর্দশ ওভারে ওটলিসহ জসুয়া সিলভাকে শিকার করেন স্পিনার মিরাজ। ৪৪ বলে ২৪ রান করেন ওটলি। পাঁচ রান করে ফেরেন তিন নম্বরে নামা সিল্ভা।

দলীয় ৩৬ ও ৩৭ রানে আউট হন যথাক্রমে ওটলি ও সিল্ভা। এরপর নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট হারাতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় ৮৮ রানে অষ্টম উইকেট হারালে প্রথম ম্যাচের চেয়েও কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার মুখে পড়ে ক্যারিবীয়রা।

ক্যারিবিয় মিডল-অর্ডারের পাঁচ উইকেট ভাগ করে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান-মিরাজ-হাসান মাহমুদ। আন্দ্রে ম্যাকার্থিকে তিন ও অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদকে ১১ রানে আউট করেন সাকিব।

এনক্রুমার বোনারকে ২০ রানে বিদায় দেন আগের ম্যাচে অভিষেক হওয়া হাসান। নয় নম্বরে নামা রেমন রেইফারকে দুই রানে আউট করেন মিরাজ। আর রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরেন কাইল মায়ার্স।

শতরানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লজ্জায় পড়তে দেননি আট নম্বরে নামা রোভম্যান পাওয়েল। শেষ দুই ব্যাট্সম্যানকে নিয়ে নবম ও দশম উইকেটে ৬০ রান যোগ করেন পাওয়েল।

নবম উইকেটে আলজারি জোসেফকে নিয়ে ৪৭ বলে ৩২ ও শেষ উইকেটে আকিল হোসেনকে নিয়ে ৪০ বলে ২৮ রান দলকে এনে দেন পাওয়েল। এতে ৪৩.৪ ওভারে ১৪৮ রানের সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জোসেফ ১৭ ও পাওয়েল ৬৬ বলে দুইটি চার ও একটি ছক্কায় দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন। ১৭ বলে ১২ রান করে অপরাজিত ছিলেন আকিল।

৯.৪ ওভার বল করে ২৫ রানে চার উইকেট নেন মিরাজ। প্রথম ওয়ানডেতে আট রানে চার উইকেট শিকার করা সাকিব এবার পেয়েছেন দুই উইকেট। ১০ ওভারে ৩০ রান দিয়েছেন তিনি। আট ওভারে ১৫ রান দিয়ে দুই উইকেট পেয়েছেন মুস্তাফিজুর। এক উইকেট নিয়েছেন পেসার হাসান মাহমুদ।

১৪৯ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভালো শুরুর পথেই ছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস ও অধিনায়ক তামিম। দ্বিতীয় ওভারে দু’টি চার মারেন লিটন। লিটনের ব্যাট থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে একটি করে বাউন্ডারি আসে। চার ওভার শেষে ২৬ রান তুলে ভালো সূচনার ভিত গড়ছিলেন লিটন। তবে ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে লিটনকে থামিয়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁ-হাতি স্পিনার আকিল হোসেন।

লেগ বিফোর ফাঁদে পড়েন লিটন। রিভিউ নিয়েও নিজেকে বাঁচাতে পারেননি দারুণ ছন্দে শুরু করা এই ডান-হাতি ব্যাট্সম্যান। ২৪ বলে ২২ রান করেছেন লিটন।

দলীয় ৩০ রানে লিটনের বিদায়ে ক্রিজে তামিমের সাথে দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ধীরলয়ে খেলতে থাকেন তামিম-শান্ত। উইকেটে সেট হওয়ার দিকেই মনোযোগী ছিলেন তাঁরা। এরমধ্যে ত্রয়োদশ ওভার পর্যন্ত তামিম তিনটি ও শান্ত দুইটি চার মারেন।

পঞ্চদশ ওভারের চতুর্থ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন শান্ত। লং-অফে সেটি তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন বোনার। ফলে জীবন পান শান্ত।

অবশ্য জীবন পেয়ে বড় ইনিংস খেলতে এবারও ব্যর্থ হয়েছেন শান্ত। সপ্তদশ ওভারের দ্বিতীয় বলে সেই মোহাম্মেদের কাছেই শেষ হয় ২৬ বলে ১৭ রানের ইনিংসটি। প্রথম ম্যাচে এক রান করেছিলেন তিনি। তামিমের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৫ বলে ৪৭ রান করেন শান্ত।

শান্তর পরে ক্রিজে সাকিবকে পান তামিম। তাঁকে নিয়ে ধীরে এগোতে থাকেন তিনি। ২৩তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর শতরানে নিয়ে যান তামিম-সাকিব। এই জুটি দিয়েই ম্যাচ শেষ করার আশায় ছিল বাংলাদেশ। এই জুটিতেই ২০৯ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪৮তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। ৭৫ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন তিনি।

তামিমের হাফ-সেঞ্চুরির মাঝে হতাশায় পড়তে হয়েছিলো বাংলাদেশকে। কারণ, ২৬তম ওভারের প্রথম বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তামিম। রেইফারের বলে সিলভাকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। ৭৬ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৫০ রান করেছেন অধিনায়ক। তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ৬৫.৭৯। সাকিবকে নিয়ে ৫৩ বলে ৩২ রান যোগ করেছেন টাইগার-দলপতি।

তামিম যখন ফেরেন, তখন সাকিব ২৬ বলে ১৭ রানে ছিলেন। দলীয় ১০৯ রানে মুশফিকুর রহিমের সাথে জুটি বাঁধেন সাকিব। শেষ পর্যন্ত পাঁচ নম্বরে নামা মুশফিককে নিয়েই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব। তখনও ম্যাচের ১০০ বল বাকী ছিল।

চতুর্থ উইকেটে ৫০ বলে ৪০ রানের জুটি গড়েন সাকিব-মুশফিক। ৫০ বলে চারটি চারে অপরাজিত ৪৩ রান করেছেন সাকিব। ২৫ বলে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি ছাড়াই অপরাজিত নয় রান করেছেন মুশফিক।

আগামী ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি হবে।

(প্রতিবেদনে উল্লেখিত পরিসংখ্যানগুলো সংকলিত)

Loading...