loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • কুমিল্লা ইপিজেড-এ চামড়া কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান

  • নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলংকা

  • অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা

  • ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

  • প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনার জয়

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করলো টাইগাররা


ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করলো টাইগাররা

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৯৭/৬ (তামিম ৬৪, মুশফিক ৬৪, মাহমুদউল্লাহ ৬৪*, সাকিব ৫১; জোসেফ ২/৪৮, মেয়ার্স ১/৩৪, রিফার ২/৬১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৪.২ ওভারে ১৭৭ (পাওয়েল ৪৭, বনার ৩১, রিফার ২৭; সাইফ ৩/৫১, মোস্তাফিজ ২/২৪, তাসকিন ১/৩২, মিরাজ ২/১৮, সৌম্য ১/২২)
ফলাফল: বাংলাদেশ ১২০ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে জয়ী
ম্যাচ-সেরা: মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)
সিরিজ-সেরা: সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)

তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ – মাঠে ভালো কিছুর জন্য  মূলত তাঁদের দিকেই তাকিয়ে থাকেন বাংলাদেশের ক্রিকেট-ভক্তরা। স্বাভাবিক কারণেই একই সঙ্গে চার তারকার জ্বলে ওঠা খুব কম সময়ই হয়ে থাকে। যাহোক, সোমবার (২৫ জানুয়ারি) উইন্ডিজের বিপক্ষে চারজনই জ্বলে উঠেছেন, চারজনই করেছেন অর্ধশত রান। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বড় লক্ষ্যই ছুঁড়ে দিতে পেরেছে স্বাগতিক টাইগাররা। এরপর বোলারদের নৈপুণ্যে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে দলটি।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু ক্রিকেট সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২০ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ – যা এই মাঠে রানের ব্যবধানে টাইগারদের সবচেয়ে বড় জয়। 

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৯৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৪.২ ওভারে ১৭৭ রানে শেষ হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ইনিংস। ফলে হোয়াইটওয়াশ হলো ক্যারিবিয়ানরা। ২০০৯ সালের পরে দ্বিতীয়বারের মতো টাইগারদের কাছে ধবলধোলাই হলো বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটখেলুড়ে দেশটি। সে-বছর অবশ্য নিজেদের মাটিতে হয়েছিল তাঁরা। এবার নিয়ে ১৩বার এই কীর্তি গড়তে পারলো বাংলাদেশ দল।

এদিন বাংলাদেশের চার সিনিয়র তারকার তিনজন – তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ করেছেন ৬৪ রান করে। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থেকেছেন। সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছে ৫১ রান। এর আগে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে এই চার তারকা একসঙ্গে ফিফটি করেছিলেন। সেবার পাঁচ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছিলেন তামিম। মাহমুদউল্লাহ ৬২, মুশফিক ৬০ ও সাকিব ৫২ রান করেছিলেন। এদিন উইন্ডিজের বিপক্ষে আবারও জ্বলে ওঠে এই তারকার ব্যাট।

অবশ্য, চলতি সফরে নিজেদের সেরা দল নিয়ে আসতে পারেনি উইন্ডিজ। করোনাভাইরাসের কারণে তারকা খেলোয়াড়রা স্বেচ্ছায় বিশ্রাম নিয়েছেন। দ্বিতীয় সারির দল বাংলাদেশে এসে শুরু থেকেই সংগ্রাম করেছে। মিরপুরে আগের দুই ম্যাচেই দেড়শ করতে পারেননি তাঁরা। সেই দলটির সামনে এদিন ছিল ২৯৮ রানের বিশাল চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জে শুরু থেকেই চাপে ছিল দলটি। শুরুতে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে ক্যারিবিয়ানদের বড় চাপে ফেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। দলীয় সাত রানে দারুণ এক ডেলিভারিতে কিজর্ন ওটলিকে উইকেটরক্ষক মুশফিকের তালুবন্দি করেন এই পেসার। এরপর আরেক ওপেনার সুনিল আমব্রিসকেও ফেলেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। এরপর ক্যারিবিয়ান শিবিরে আঘাত হানেন আগের ম্যাচের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। কাইল মেয়ার্সকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। ফলে ৪৭ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলেছে সফরকারী দল।

তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদকে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন এনক্রুমাহ বনার। রানের গতি সচল না থাকলেও ১১ ওভার ব্যাট করেছেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ২২ রানের জুটিটি ভেঙেছেন সাইফউদ্দিন। এরপর বনারকেও তুলে নেন তিনি। উইন্ডিজ তখন একশ রানও ছুঁতে পারেনি। এরপর রভমান পাওয়েল এক প্রান্তে চেষ্টা চালিয়ে যান। ৪৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। কিন্তু সৌম্যর বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়লে কার্যত শেষ হয়ে যায় তাঁদের আশা। এরপর রেমন রিফার, আলজেরি জোসেফদের ব্যাটিং শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পেরেছে।

আঘাত কাটিয়ে ফিরে এদিন দারুণ বোলিং করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৫১ রান খরচায় পেয়েছেন দুই উইকেট। এছাড়া মোস্তাফিজ ও মিরাজ পেয়েছেন দুইটি করে উইকেট।

দিনের শুরুটা অবশ্য সহজ ছিল না বাংলাদেশের জন্যও। ব্যাটিং-বান্ধব উইকেটে শুরুতে সংগ্রাম করতে হয়েছে টাইগারদের। দলীয় ৩৮ রানে দুই উইকেটের পতন ঘটে। লিটন দাস বিদায় নিয়েছেন খালি হাতে। তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও পারেননি। তৃতীয় উইকেটে সাকিবকে নিয়ে দলের হাল ধরেন তামিম। যদিও নিজের প্রথম বলেই বিদায় নিতে পারতেন সাকিব। মেয়ার্সের অফ স্টাম্পে রাখা বল লেগে ঘোরাতে গিয়ে বোলারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু অল্পের জন্য তা ধরতে পারেননি মেয়ার্স।

তখন বাঁচলেও রানের জন্য প্রচুর সংগ্রাম করতে হয়েছে সাকিবকে। ভুগতে হয়েছে তামিমকেও। ১১৬ বলে ৯৩ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। একই দিনে এই জুটি নিজেদের দুই হাজার রানও পূর্ণ করেছেন। শুরুতে ধুঁকলেও ধীরে ধীরে সাবলীল ব্যাটিং শুরু করতে পেরেছিলেন তামিম। জেসন মোহাম্মদের বলে দারুণ এক ছক্কা মেরে ভালো কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই জোসেফের বলে পুল করতে গিয়ে আকিলের হাতে ধরা পড়ে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। ৮০ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। 

এদিন জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫০০ রান পূর্ণ করেন টাইগার-দলপতি।

অধিনায়কের বিদায়ের পরে সাকিবের সঙ্গে ইনিংস মেরামতে নামেন মুশফিক। ৩৮ রানের জুটিও গড়েছিলেন; তবে, ফিফটি করার পরেই বোল্ড হন তিনি। রেমন রেফারের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে লাইন মিস করেন তিনি। নিজের স্বভাববিরুদ্ধ ব্যাটিং করে ৮১ বলের ইনিংসে চার মেরেছেন মাত্র তিনটি। পরে রানের গতি বাড়াতে আগ্রাসী ব্যাট চালাতে থাকেন মুশফিক। মূলত তাঁর ব্যাটেই ম্যাচের পরিস্থিতি বদলে যায়। ৫৫ বলের ইনিংসে চারটি চার ও দুইটি ছক্কায় ৬৪ রানে বিদায় নেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।

মুশফিকের দেখানো পথে বাকি কাজ শেষ করেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ দিকে ব্যাটিং-ঝড় তুলে দলের ইনিংস ৩০০’র কাছাকাছি কৃতিত্বও তাঁরও কম নয়। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ৪২ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় করেন অপরাজিত ৬৪ রান এসেছে তাঁর কাছ থেকে।

এই হোয়াইটওয়াশের ফলে বাংলাদেশ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ সুপার লিগের (২০২৩ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব) পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো। প্রথম স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

Loading...