২১০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশকে একাই হারিয়ে দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে অভিষিক্ত হওয়া বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান কাইল মায়ার্স। চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি, বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্যটাকে মামুলি বানিয়েছেন মায়ার্স। এর আগে জাতীয় দলের হয়ে তিন ওয়ানডে ও দুইটি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৩৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তিন সেঞ্চুরি ও ১২টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ১৬৬৮ রান রয়েছে মায়ার্সের।
কোভিড-১৯ ও ব্যক্তিগত কারণে নিয়মিত অধিনায়ক জেসন হোল্ডারসহ টেস্ট দলের শীর্ষ খেলোয়াড়রা এবারের বাংলাদেশ দলে আসেননি। সেই সুবাদে রঙিন জার্সিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পঁচটি ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩৩টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে টেস্ট দলে সুযোগ হয় মায়ার্সের। কিন্তু অভিষেকেই যে ডাবল-সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঐতিহাসিক জয় এনে দেবেন, তা হয়তো মায়ার্স নিজেও জানতেন না।
ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনের অন্তিম মূর্হুতে মায়ার্স জানতে পারেন ৪১৫ মিনিট ক্রিজে থেকে ৩১০ বল খেলেও দলকে জয়ের মালা পরানো যায়। খর্বশক্তির দল নিয়ে সফরে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের মালা পরাতে গিয়ে রেকর্ড বইয়ের বহু জায়গায় নাম উঠেছে মায়ার্সের।
২০ চার ও সাত ছক্কায় ২১০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন তিনি। অভিষেকে ডাবল-সেঞ্চুরি করা ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হলেন মায়ার্স। তাঁর রান পঞ্চমস্থানে জায়গা করে নিয়েছে। এর আগে এই তালিকায় সবার আগে নাম লেখান ইংল্যান্ডের টি ফস্টার। ১৯০৩ সালে সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের অভিষেক টেস্টে ৩৭টি চারে ২৮৭ রান করেছিলেন ফস্টার। এরপর একে-একে সেই তালিকায় নাম উঠিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের লরেন্স রো, শ্রীলংকার ব্রেন্ডন কুরুপ্পু , নিউজিল্যান্ডের ম্যাথু সিনক্লেয়ার ও দক্ষিণ আফ্রিকার জক রুডলফ।
দীর্ঘ ১৮ বছর পরে এশিয়ার মাটিতে অভিষেকে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল-সেঞ্চুরি করলেন মায়ার্স। এর আগে ২০০৩ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে অপরাজিত ২২২ রান করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রুডলফ। তার আগে ১৯৮৭ সালে নিজ মাঠ কলম্বোতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ২০১ রান করেছিলেন লংকান কুরুপ্পু।
অভিষেক টেস্টে ম্যাচের তৃতীয় বা চতুর্থ ইনিংসে মায়ার্সের ডাবল-সেঞ্চুরি প্রথম দেখলো ক্রিকেটবিশ্ব। সেই সাথে সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন মায়ার্স। ৯১ বছরের পুরনো আরকে স্বদেশীর রেকর্ড ভেঙেছেন তিনি। গত ৯১ বছর ধরে এই রেকর্ড ধরে রেখেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জর্জ হ্যাডলি । ১৯৩০ সালে ব্রিজটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে ১৭৬ রান করেছিলেন ৭৪ বছর বয়সে মৃত্যু হওয়া হ্যাডলি।
মায়ার্সের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট ইতিহাসে মাত্র দুই জন ব্যাটসম্যান অভিষেক টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরির করেছিলেন। তাঁরা হলেন – লেন বাইচান ও ডোয়াইন স্মিথ।
