হ্যারি ম্যাগুআয়ার শেষ মুহূর্তের গোলে পোল্যান্ডকে ২-১ গোলে পরাজিত করে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তিন ম্যাচে শতভাগ জয় নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড।
ওয়েম্বলির দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে বুধবার (৩১ মার্চ) অধিনায়ক হ্যারি কেইন ১৯ মিনিটের পেনাল্টিতে গ্যারেথ সাউথগেটের দলকে লিড এনে দেন। রক্ষণভাগে জন স্টোন্সের ভুলে ৫৮ মিনিটে জ্যাকব মোডার পোলিশদের হয়ে সমতা ফেরান। ইংল্যান্ড যখন প্রথমবারের মতো পয়েন্ট হারানোর দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল, ঠিক তখনই ডিফেন্ডার ম্যাগুআয়ার স্টোন্সের এসিস্টে ম্যাচ শেষের পাঁচ মিনিট আগে জয়সূচক গোল করেন।
এই জয়ে গ্রুপ ‘আই’ এ পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে এখনকার বাছাইপর্বের মিশন শেষ করলো ইংলিশরা। এর আগে ছোট দুই দেশ সান মারিনো ও আলবেনিয়ার বিপক্ষে সহজ জয় পেয়েছিল সাউথগেট অ্যান্ড কোং। ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বাছাইপর্বে প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দলগুলোই শুধুমাত্র ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের মূল পর্বে উঠবে।
সাউথগেট বলেছেন, ‘প্রথমার্ধে আমরা দারুণ খেলেছি। পুরো ম্যাচে আমাদেরই নিয়ন্ত্রণ ছিল। তবে, গোল হজমের পরে আমরা কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাঁরাও ভালো প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। বিশেষ করে সমতায় ফেরার পরে তাঁরা অতি রক্ষণাত্মক হয়ে ওঠে; যে-কারণে খেলতে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে। তারপরেও শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারাটা অবশ্যই স্বস্তির।’
১৯৭৩ সালের পর থেকে পোল্যান্ডের কাছে কখনই পরাজিত হয়নি ইংল্যান্ড। বুধবার দলে ছিলেন না হাঁটুর ইনজুরিতে পড়া তারকা স্ট্রাইকার রবার্ট লিওয়ানডোস্কি। এছাড়া, চারজন খেলোয়াড় করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে মাঠে নামতে পারেনি পোলিশরা।
রোববার টিরানায় আলবেনিয়ার বিপক্ষে জয়ের ম্যাচটি থেকে মাত্র একটি পরিবর্তন করে মূল দল সাজিয়েছিলেন সাউথগেট। লুক শ‘র বদলে এদিন মাঠে নেমেছিলেন ফুল-ব্যাক বেন চিলওয়েল।
উনবিংশ মিনিটে যোগ্য দল হিসেবেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। রাহিম স্টার্লিংকে ডি বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন ডিফেন্ডার মিখায়েল হেলিক। ফলে, পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ড। স্পট কিক থেকে পোলিশ গোলরক্ষক ওজিচে সিজিসনিকে কোনো সুযোগই দেননি কেইন (১-০)। এর মাধ্যমে ফ্রাংক ল্যাম্পার্ডকে পিছনে ফেলে ইংল্যান্ডের হয়ে পেনাল্টি থেকে সর্বোচ্চ ১০ গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করলেন কেইন।
এক গোলে পিছিয়ে যেয়ে পোল্যান্ড আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠে। ইংল্যান্ডের আক্রমণে রাহিম স্টার্লিং বারবার পোল্যান্ডের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন। কেইনের একটি শক্তিশালী শট দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন সিজিসনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও ইংল্যান্ড আধিপত্য দেখিয়েছে; কিন্তু গোলের স্পষ্ট কোনো সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। সেই সুযোগে সিটি ডিফেন্ডার স্টোন্স তাঁর পজিশন হারালে পোলিশরা সমতায় ফেরে। চলতি মৌসুমে দারুণ ছন্দে থাকা স্টোন্স ডান দিকে থেকে ইংল্যান্ডের পেনাল্টি অঞ্চলের মধ্যে একটি বল রিসিভ করতে গিয়ে ভুল করে বসেন। আর সেই সুযোগে মিডফিল্ডার মোডার বল ছিনিয়ে নিয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে পোল্যান্ডকে সমতাসূচক গোল উপহার দেন।
মরিয়া ইংল্যান্ড কোনোভাবেই গোলের দেখা পাচ্ছিল না। যদিও সাউথগেট ধৈর্যধারণ করে দল পরিচালনা করে গেছেন। সেন্ট্রাল ডিফেন্সিভ পার্টনার স্টোন্সের বাড়ানো বলে ম্যাগুআয়া যখন বল জালে জড়ান, স্বস্তি ফিরে পান ইংলিশ কোচ।
এই পরাজয়ে পোল্যান্ড গ্রুপের শীর্ষ তিন দেশ – ইংল্যান্ড, হাঙ্গেরি ও আলবেনিয়ার চেয়ে পিছিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।