loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • কুমিল্লা ইপিজেড-এ চামড়া কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান

  • নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলংকা

  • অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা

  • ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

  • প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনার জয়

লা লিগায় বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে রিয়াল


লা লিগায় বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে রিয়াল

জিনেদিন জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ শনিবার (১০ এপ্রিল) রাতে বার্সেলোনার বিরুদ্ধে রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ে জিতে স্প্যানিশ লা লিগার পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে গেছে।

আলফ্রেদো দি স্টেফানো স্টেডিয়ামে এদিন রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের দেখা মিলেছে। মৌসুমের দ্বিতীয় এল ক্লাসিকোতে ঘরের মাঠে বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জিতেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল। করিম বেনজেমার গোলে ক্লাবটি এগিয়ে যাওয়ার ১৫ মিনিট পরে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন টনি ক্রুস। বিরতির পরে বার্সার একমাত্র গোলটি করেন অস্কার মিনগেজা। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে কাসেমিরো লালকার্ড দেখলে ১০ জন নিয়ে খেলা শেষ করতে হয়েছে স্বাগতিক দলকে।

চলতি লা লিগায় দুইটি ক্লাসিকোতেই জিতলো রিয়াল। গত অক্টোবরে বার্সার মাঠ ক্যাম্প নিউইতে ৩-১ গোলে জিতেছিল দলটি। ২০০৭-০৮ মৌসুমের পর এমন ঘটনা এই প্রথম। পাশাপাশি, ১৯৭৮ সালের পরে প্রথমবারের মতো টানা তিন ক্লাসিকোতে পূর্ণ পয়েন্ট অর্জন করলো লস ব্লাঙ্কোসরা।

এদিন পুরো ম্যাচে বল দখলে আধিপত্য দেখিয়েছেন রোনাল্ড কোমানের শিষ্যরা। তাঁদের কাছে ৬৯ শতাংশ সময়ে ছিল বল। রিয়ালের অবশ্য এটা নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না। তাঁরা নিয়েছিলেন পাল্টা আক্রমণ-নির্ভর কৌশল; তাতে সাফল্যও এসেছে। দুইবার তাঁদের প্রচেষ্টা পোস্টে লেগে না ফিরলে ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয়ে যেতো আরও আগেই। একেবারে শেষ মুহূর্তে ক্রসবারের কারণে বার্সাকেও সমতায় ফিরতে না পারার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে।

ত্রয়োদশ মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ কাজে লাগিয়ে লিড নেয় রিয়াল। ডান প্রান্ত থেকে লুকাস ভাস্কেজের নিখুঁত ক্রসে চমৎকার ফ্লিকে জাল খুঁজে নেন বেনজেমা। এবারের লিগে এটি এই ফরাসি স্ট্রাইকারের ঊনবিংশতম গোল। তাঁর উপরে রয়েছেন শুধুমাত্র বার্সা অধিনায়ক লিওনেল মেসি (গোল ২৩টি)।

বেনজেমার গোলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন একাদশে ফেরা ফেদেরিকো ভালভার্দে। নিজেদের সীমানা থেকে প্রায় ৪০ গজ দৌড়ে অতিথিদের মাঝমাঠ এলোমেলো করে তিনি পাস দিয়েছিলেন ভাস্কেজকে। কিছুক্ষণ পরই সমতায় ফেরার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বার্সা। তবে, মেসির ক্রসে অনেকটা লাফিয়েও ঠিকমতো মাথা ছোঁয়াতে পারেননি ওসমান দেম্বেলে।

২৮তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় স্পেনের সফলতম ক্লাব রিয়াল। টনি ক্রুসের ফ্রি-কিক জালে পৌঁছাতে পায় ভাগ্যের কিছুটা সহায়তাও। এই জার্মান মিডফিল্ডারের শট বার্সা ডিফেন্ডার সার্জিনো দেস্তের পিঠে লেগে দিক পাল্টায়। তবে বলের সোজাসুজি গোললাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জর্দি আলবা। তিনি হেড করলেও পারেননি বল রুখতে। দায় এড়ানোর উপায় নেই দেস্তের। তিনি উল্টোদিকে ঘুরে গিয়েছিলেন।

রিয়াল ফ্রি-কিক পেয়েছিল ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ফাউলের শিকার হওয়ায়। গতিময় এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড দেখান ঝলক। তাঁকে আটকাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় বার্সার রক্ষণভাগকে। ছয় মিনিট পরে স্কোরলাইন হতে পারতো ৩-০; কিন্তু ভিনিসিয়ুসের পাসে ভালভার্দের শট পোস্টে বাধা পায়। ফিরতি বলে ভাস্কেজের শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টার স্টেগান।

প্রথমার্ধের শেষে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল ক্যাটালান ক্লাবটি। মেসির বাঁকানো কর্নার-কিক সবাইকে ফাঁকি দিলেও ক্রসবার পরাস্ত করতে পারেনি।

দ্বিতীয়ার্ধে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে জোরে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় খেলার গতি কিছুটা কমে আসে। তবে বার্সা ধীরে ধীরে আক্রমণে মনোযোগী হতে থাকে। ৬০তম মিনিটে ম্যাচে ফেরার পথও পেয়ে যান তাঁরা।

আল্বার ক্রসে লক্ষ্যভেদ করেন মিনগেজা। তরুণ এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের এটাই ক্লাসিকোতে প্রথম ম্যাচ। বদলি নামা আঁতোয়ান গ্রিজমানের কৃতিত্বও কম নয়, তিনি দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল ছেড়ে দেওয়ায় বিভ্রান্ত হয় রিয়ালের রক্ষণভাগ। বাকি কাজ দারুণভাবে শেষ করেন অরক্ষিত মিনগেজা।

৬২তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের শট রোনালদ আরাউহোর পায়ে লেগে পোস্টে বাধা পায়, ফলে ব্যবধান বাড়ানো হয়নি রিয়ালের। চার মিনিট পরে আবারও ব্যর্থতা; লুকা মদ্রিচ নিজেদের সীমানা থেকে উঁচু করে বাড়ান নজরকাড়া পাস, বল ধরে এগিয়ে ফাঁকায় থাকলেও শট নেননি ভিনিসিয়ুস। বরং দুর্বল ক্রস করেন বেনজেমার উদ্দেশ্যে, যা কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ক্লেঁমো লংলে।

৭১তম মিনিটে মিনগেজার জোরালো শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। চার মিনিট পর মেসির ক্রসে বদলি ইলাইশ মোরিবার হেড সহজেই লুফে নেন রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। ৮৩তম মিনিটে বার্সার পেনাল্টির আবেদনে উত্তেজনা ছড়ায় মাঠে। মার্টিন ব্র্যাথওয়েট ডি-বক্সে ফারলান্দ মেন্দির হালকা ছোঁয়ায় পড়ে গিয়েছিলেন। রেফারি আবেদন নাকচ করার পাশাপাশি প্রতিবাদ করায় হলুদ কার্ড দেখান আল্বা ও কোমানকে।

৯০তম মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় রিয়াল। দুই মিনিটের মধ্যে দুইবার হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কাসেমিরো। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ হওয়া সময়ের প্রথম মিনিটে মেসির ফ্রি-কিক ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া। শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে মোরিবার শট ক্রসবারে লাগার পরে ফিরতি বল উড়িয়ে মারেন আল্বা; ফলে, দুর্ভাগ্য সঙ্গী হয় বার্সার।

৩০ ম্যাচে ২০ জয় ও ছয় ড্রয়ে রিয়ালের অর্জন ৬৬ পয়েন্ট। মুখোমুখি লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকায় লিগের পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে নেমে গেছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তাঁদের হাতে অবশ্য একটি ম্যাচ রয়েছে। ২৯ ম্যাচে দিয়েগো সিমিওনের দলের পয়েন্টও ৬৬। তিনে নেমে যাওয়া বার্সেলোনার পয়েন্ট ৩০ ম্যাচে ৬৫।

Loading...