বায়ার্ন মিউনিখের ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা ধরে রাখার ব্যর্থ অভিযান শেষ হলো। ক্লাবটি ছিটকে গেল ইউরোপের সেরা ক্লাব আসরের কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে। দলটিকে বিদায় করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিযোগিতার শেষ চারে উঠলো প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাতে শেষ আটের ফিরতি লেগে জিতেও শেষরক্ষা হয়নি বায়ার্নের। পিএসজিকে নিজেদের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে ১-০ গোলে হারলেও অ্যাওয়ে গোলের হিসাবনিকাশে কপাল পুড়েছে বাভারিয়ানদের। একমাত্র গোলটি করেন এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোটিং। চলতি মৌসুমের শুরুতে পিএসজি ছেড়ে বায়ার্নে যোগ দেন তিনি।
প্রথম লেগে নিজেদের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় প্যারিসিয়ানদের কাছে ৩-২ গোলে হেরেছিলেন হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ফলে গত আসরের দুই ফাইনালিস্টের লড়াইয়ে দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-৩। প্রতিপক্ষের মাঠে বেশি গোল করায় সেমিফাইনালে উঠলেন নেইমার-কিলিয়ান এমবাপেরা।
এদিন পুরো ম্যাচে বল দখলে প্রাধান্য দেখানোর পাশাপাশি গোলমুখে ১৩টি শট নেয় বায়ার্ন। যার মধ্যে পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে, পিএসজির ১০টি শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে। দুদলের ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা ছিল প্রকট। দুর্দান্ত খেলেও জালের ঠিকানা খুঁজে পাননি নেইমার। পিএসজির এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড সুযোগ পেয়েছিলেন একগাদা। বায়ার্ন আরও একবার অনুভব করেছে তাদের আক্রমণভাগের মূল অস্ত্র রবার্ত লেভানদভস্কির শূন্যতা। দলটির জার্মান ফরোয়ার্ড লেরয় সানে পারেননি নামের প্রতি সুবিচার করতে।
শুরু থেকে উজ্জীবিত ফুটবল উপহার দিতে থাকে স্বাগতিক দল। নেইমার-এমবাপে জুটি বারবার ভীতি ছড়ায় প্রতিপক্ষের রক্ষণে। কিন্তু তাঁদের সুযোগ নষ্টের মহড়ার পাশাপাশি বায়ার্ন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়্যার দেখান অসাধারণ নৈপুণ্য। প্রথমার্ধের শেষদিকে এগিয়ে যায় সফরকারী দল। ৪০তম মিনিটে দাভিদ আলাবার শট পিএসজি গোলরক্ষক কেইলর নাভাস ঠেকালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ছুটে গিয়ে হেড করেন ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড চুপো-মোটিং। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতি কিছুটা কমে আসে। তবে সুযোগ পেলেও পিএসজি যেমন সমতায় ফিরতে পারেনি, বায়ার্নও তেমন পায়নি কাঙ্ক্ষিত গোল।
দুই অর্ধে নেইমার হাতছাড়া করেছেন বেশ কিছু সুযোগ। কখনো নয়্যার, কখনো গোলপোস্ট, কখনো ক্রসবার তার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আবার কখনো কখনো দায়টা ছিল তাঁর নিজেরই। এত ব্যর্থতার মাঝেও জালে একবার বল পাঠিয়েছিল মরিসিও পচেত্তিনোর দল। ৭৮তম মিনিটে ফরাসি স্ট্রাইকার এমবাপে লক্ষ্যভেদ করলেও অফসাইডের বাঁশি বেজেছে।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে পিএসজির প্রতিপক্ষ ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি কিংবা জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ২-১ গোলে জিতে এগিয়ে আছে পেপ গার্দিওলার সিটি। বুধবার রাতে ফিরতি লেগে ডর্টমুন্ডের মাঠ সিনিয়াল ইদুনা পার্কে মুখোমুখি হবে দুই ক্লাব।