ম্যাচের শুরুর দিকে এগিয়ে গেলো বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ফলে, আরও একবার ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কা জেগেছিল ম্যানচেস্টার সিটির। তবে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা উপহার দিলেন উজ্জীবিত নৈপুণ্য। ঘুরে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত জয়ে দলটি উঠলো ইউরোপের শীর্ষ ক্লাব আসরের সেমিফাইনালে।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) রাতে শেষ আটের ফিরতি লেগে ডর্টমুন্ডকে তাঁদেরই মাঠ সিগনাল ইদুনা পার্কে ২-১ গোলে হারিয়েছে ম্যান সিটি। আগের লেগে নিজেদের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে একই ব্যবধানে জিতেছিল দলটি। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ গোলে এগিয়ে ইংলিশ ক্লাবটি পেলো সেমির টিকিট।
প্রথমার্ধে জুড বেলিংহামের গোলে এগিয়ে যায় জার্মান ক্লাব ডর্টমুন্ড। বিরতির পর পেনাল্টি থেকে স্কোরলাইন ১-১ করেন রিয়াদ মাহরেজ। পরে, সিটির হয়ে জয়সূচক গোল করেন ফিল ফোডেন।
দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে উঠলো ম্যানসিটি। ২০১৫-১৬ মৌসুমে তৎকালীন কোচ মানুয়েল পেলিগ্রিনির অধীনে তাঁরা এই স্বাদ প্রথমবার পেয়েছিল। গত তিন আসরে দলটি বিদায় নিয়েছিল কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে। এবার সেই বৃত্ত ভেঙে নিজের কোচিংয়ে প্রথমবার সিটিকে সেমিতে নিয়েছেন তারকা স্প্যানিশ কোচ গার্দিওলা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দলটির প্রতিপক্ষ ফরাসি লিগ ওয়ান-এর শিরোপাধারী পিএসজি।
এদিন সপ্তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি পায় ডর্টমুন্ড। মাহমুদ দাহুদের ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শট সহজেই লুফে নেন ম্যান সিটির গোলরক্ষক এদারসন। পঞ্চদশ মিনিটে অবশ্য তিনি পারেননি গোলপোস্ট অক্ষত রাখতে। পাল্টা আক্রমণে বেলিংহামের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক দল।
সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল নিয়ে সিটির ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন এর্লিং হালান্ড। বল নিয়ন্ত্রণে রেখে তিনি দেখান পায়ের কারুকাজ। কয়েক পা ঘুরে এরপর বল পেয়ে যান বেলিংহাম। ১৭ বছর বয়সী এই ইংলিশ মিডফিল্ডার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের প্রথম গোলটি করেন। ঝাঁপিয়ে পড়ে হাত ছোঁয়ালেও বল আটকাতে পারেননি এডারসন।
চার মিনিট পরে ব্যবধান বাড়তে পারতো। কর্নার থেকে মানুয়েল আকাঞ্জির সরাসরি হেড গ্লাভসবন্দি করেন ব্রাজিলিয়ান এডারসন।
আধিপত্য করা সিটি এরপর ধীরে ধীরে আক্রমণেও প্রাধান্য দেখাতে শুরু করে। ২৬তম মিনিটে সমতায় প্রায় ফিরেই গিয়েছিল দলটি। কেভিন ডি ব্রুইনার শটে পরাস্তও হয়েছিলেন ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষক মারভিন হিটজ; তবে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বল বাধা পায় ক্রসবারে।
প্রথমার্ধে ছয়টি শট নেয় ডর্টমুন্ড, এর মধ্যে লক্ষ্যে ছিল তিনটি। বিপরীতে, সিটির নয়টি শটের মাত্র একটি থাকে লক্ষ্যে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই একই ধাঁচে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থেকে সিটিজেনরা। ৫০তম মিনিটে জিনচেঙ্কোর শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন হিট্জ। পাঁচ মিনিট পরে গোল পায় সফরকারী দল। এমরে চানের হাতে বল লাগার বল ভিএআর-এর সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট-কিকে লক্ষ্যভেদ করেন আলজেরিয়ান ফরোয়ার্ড মাহরেজ।
চার মিনিট পরে ফের ক্রসবার হতাশ করে সিটিকে। জন স্টোন্সের হেড পরে হিটজের হাতে লাগলেও কর্নার পায়নি দলটি। ৬৫তম মিনিটে মাহরেজের পাসে ইলকাই গুন্দোগানের শট লক্ষ্যে থাকেনি।
৬৯তম মিনিটে সিটির রক্ষণে ভীতি ছড়ায় ডর্টমুন্ড। মার্কো রয়েসের ফ্রি-কিকে ম্যাটস হামেল্সের হেড ক্রসবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়। ৭৪তম মিনিটে একক নৈপুণ্যে বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ডি ব্রুইনা ঢুকে পড়েন ডি-বক্সে। তাঁর মাটি কামড়ানো শট সেইভ করেন হিটজ।
পরের মিনিটে বার্নার্দো সিলভার পাসে সিটিকে লিড পাইয়ে দেন ফোডেন। তরুণ এই ইংলিশ ফরোয়ার্ডের শট ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে গোললাইন অতিক্রম করে।
এরপর কোনো গোল হয়নি। ৮১তম মিনিটে উড়িয়ে মেরে সুযোগ হাতছাড়া করেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার হালান্ড। দুই মিনিট পর জিনচেঙ্কোও পারেননি ব্যবধান বাড়াতে।
