ব্রাইটন হােভ অ্যান্ড আলবিয়োনের সাথে মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) গোলশূন্য ড্র করেও প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের শীর্ষ চারে উঠে এসেছে চেল্সি এফ. সি.। এই ড্রয়ে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে ওয়েস্ট হ্যামকে গোল ব্যবধানে পিছনে ফেলে শীর্ষ চার নিশ্চিত করলো ব্লুজরা।
এদিন ম্যাচ শুরু হবার ঠিক আগে গুঞ্জন ছিল – চেল্সির মালিক রোমান আব্রামোভিচ বিতর্কিত ইউরোপিয়ান সুপার লিগে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও ম্যাচ শেষে এ-সম্পর্কে ক্লাবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। তবে, পরে চেল্সিসহ প্রিমিয়ার লিগের আরও পাঁচটি ক্লাব – ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল, আর্সেনাল ও টটেনহ্যাম আনুষ্ঠানিকভাবে সুপার লিগ থেকে নাম প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে এদিন একেবারেই সাদামাটা নৈপুণ্য দেখিয়েছে থমাস টুখেলের দল। ম্যাচ শেষে টুখেল বলেছেন, ‘ম্যাচের শুরুতে আমাদের সকলের মাথায় ম্যাচের চেয়ে সুপার লিগ নিয়ে বেশি চিন্তা ছিল। আমি মনে এই বিষয়টি ম্যাচের ফলাফলকে অবশ্যই প্রভাবিত করেছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। যে- কারণে খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি । পুরো পরিস্থিতি এখনো স্পষ্ট নয়। অন্য সকলের মতোই আমিও জানতে পেরেছি – চেল্সি খেলছে না। তবে সব কিছুর জন্যই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আজ আমরা ম্যাচ জয়ের জন্য সম্ভাব্য সব চেষ্টাই করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারিনি। আমাদের মানসিকভাবে পরিশ্রান্ত মনে হয়েছে।’
আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টিকে থাকার লড়াইয়ে শনিবার ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নামবে চেল্সি।
এদিন ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে মনে হয়েছিল চেল্সি যেন সুপার লিগে আমন্ত্রণ পেয়েই সন্তুষ্ট; ইউরোপে খেলার যোগ্যতা অর্জন নিয়ে তাঁরা মোটেও চিন্তিত নন। কিন্তু ম্যাচের মধ্যেই বিভিন্নভাবে চারিদিক থেকে সুপার লিগ না খেলার গুঞ্জন আসতে থাকে। তখনই মূলত ম্যাচের চেহারা পাল্টে যায়। আব্রামোভিচ ও ক্লাব চেয়ারম্যান ব্রুস বাক সবসময়ই দাবি জানিয়ে আসছিলেন – সুপার লিগে অংশ নিলে চেল্সির ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একইসাথে সমর্থকদের আস্থাও তাঁরা অনেকাংশেই হারিয়ে ফেলবে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ এখনো দর্শকশূন্য অবস্থায রয়েছে। তারপরেও প্রায় হাজারখানেক দর্শক মঙ্গলবার স্টেডিয়ামের বাইরে সুপার লিগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। কিন্তু সুপার লিগ থেকে নাম প্রত্যাহারের ঘোষণা আসার সাথে সাথেই তাঁরাই আবার প্রিয় দলকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে।
পুরো ম্যাচে টুখেলের শঙ্কা ছিল – তাঁর দল হয়তোবা সুপার লিগের নাটকীয়তায় তাঁদের বর্তমান দায়িত্বই ভুলে যাবে। বিশেষ করে, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল ম্যাচ এখনো বাকি। চেল্সির সামনে দারুণ এক সুযোগ নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাবার। কিন্তু, তাঁর আগে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ চারের জায়গা ধরে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাণহীন ম্যাচে এদিন ম্যাচের ৮০ মিনিটে ব্রাইটন গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ডানি ওয়েলবেকের কার্লিং শট পোস্টের পাশ দিয়ে বাইরে চলে যায়।
স্টপেজ সময়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারণে ইংলিশ ডিফেন্ডার বেন হোয়াইট মাঠ ত্যাগ করলে শেষ পর্যন্ত ১০ জন নিয়ে খেলতে হয়েছে ব্রাইটনকে। কিন্তু তারপর চেল্সির হাতে ম্যাচ জয়ের সুযোগ ছিল না।
এই ড্রয়ে রেলিগেশন জোন থেকে সাত পয়েন্ট উপরে উঠে ষোড়শ স্থানে রয়েছে ব্রাইটন।
