প্রথমার্ধে আক্রমণাত্নক ফুটবল খেলে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ডেনমার্ক। বিরতির পরে গোল শোধ করে খেলায় ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করেও পেরে উঠেনি চেক প্রজাতন্ত্র। ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের অসুস্থ হওয়ার ম্যাচে পরাজয় দিয়ে আসর শুরু করা ড্যানিশরা পৌঁছে গেলো ইউরো-২০২০ এর শেষ চারে।
শনিবার (৩ জুলাই) রাতে আজারবাইজানের বাকুতে চেক প্রজাতন্ত্রকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইউরোর সেমিফাইনালে উঠলো ডেনমার্ক। ১৯৯২ সালের পরে এবার ইউরোর শেষ চারে উত্তরণ ঘটলো দেশটির। অবশ্য সেবার শিরোপাও জিতেছিল ড্যানিশ দল।
এদিন ডেনমার্কের খেলায় দেখা গেছে আগ্রাসী, পরিকল্পিত ফুটবল। দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা মন্থর হয়ে পড়লেও প্রথমার্ধের দাপটে খেলা নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন তাঁরা। খেলার শুরুতেই গোল করে ডেনমার্ক। পঞ্চম মিনিটে স্ট্রিগের লারসেনের নেওয়া দারুণ কর্নার থেকে বল পেয়ে যান ফাঁকায় দাঁড়ানো থমাস ডেলানি; তাঁর নিখুঁত হেড আশ্রয় নেয় জালে।
ত্রয়োদশ মিনিটে আরেকটি গোল হতে পারতো। লম্বা পাস ধরে মিক্কেল দামসগার্ড ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন। গোলরক্ষককেও কাটিয়ে নেওয়া শট ফেরান চেক ডিফেন্ডার। তিন মিনিট পর ক্রস থেকে পাওয়া ডেলানির শট যায় যায় বার ঘেঁষে।
ড্যানিশদের একের পর এক আক্রমণে মুখে পরের কয়েক মিনিট চাপ বাড়ায় চেক প্রজাতন্ত্রও। ২৭ মিনিটে আবার সুযোগ আসে ডেনিশদের কাছে। মার্টিন ব্র্যাথওয়েট ডান থেকে পাওয়া আক্রমণ হেলায় হারান বাইরে মেরে। মিনিট পাঁচেক পর ফের তাঁকে আশাহত করেন চেক কিপার টমাস ভালসিক। ৩৫ মিনিটে চেকদের আক্রমণ ঠেকিয়ে দেন ডেনিশ তারকা কিপার ক্যাস্পার স্মাইকেল। ৩৭ মিনিটে দামসগার্ডের শট ফিরিয়ে দেন ভাল্সিক।
৪২ মিনিটে দুর্দান্ত গোল পেয়ে যায় ড্যানিশরা। ব্র্যাথওয়েটের দুর্দান্ত ক্রস থেকে ক্যাসপার ডলবার্গ ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
বিরতির পর নেমেই প্রবল আক্রমণে যায় চেক প্রজাতন্ত্র। বদলি নামা মিকেল ক্রমেনচিকের নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন স্মাইকেল। একটু পরে বারাকের দূরপাল্লার শটও কর্নারের বিনিময়ে বাঁচিয়ে দেন তিনি।
৫০ মিনিটে আসে চেকদের উদযাপনের মুহূর্ত। দারুণ গোলে ব্যবধান কমায় দলটি। ভ্লাদিমির কৌফলের অসাধারণ ক্রস ধরে এবারের ইউরোতে নিজের পঞ্চম গোল পেয়ে যান প্যাট্রিক চেক। ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর পাশাপাশি চলতি আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন তিনি।
পরের কয়েক মিনিট দুই দলই কিছু আক্রমণ তৈরি করলেও গোলের সেরকম সুযোগ আসছিল না। এরমধ্যে মাথায় আহত হওয়ায় টমাস শাওচেককে ব্যান্ডেজ বাঁধতে হয়। পরে মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধতে হয় জান বোরিলকেও।
৬৮ মিনিটে ডেনমার্কের হয়ে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন ইউসুফ পুয়েল্সন। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ছাড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষে গিয়ে দুর্বল শট মারেন।
৭১ মিনিটে চেকদের সমতায় আসার সুযোগ এসেছিল। বক্সের ভালো জায়গায় বল পেয়েছিলেন জ্যাকব জাঙ্কতু, কিন্তু তাঁর শট যায় বার ঘেঁষে। মিনিট খানেক পরে কর্নার থেকে আসা বল ঠেকিয়ে দলকে বাঁচান স্মাইকেল।
৭৭ মিনিটে পুউলসনের দুর্দান্ত শট আরও দুর্দান্ত দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন ভালসিক। ৮১ মিনিটে পুউলসনের সঙ্গে ওয়ান-টু-ওয়ান খেলে ব্র্যাথওয়েটের নেওয়া শট আবারও কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন চিক কিপার ভালসিক।
শেষ কয়েক মিনিট তীব্র চাপ সৃষ্টি করেও গোল শোধের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি চেক প্রজাতন্ত্র।