চলতি সফরের একমাত্র টেস্টে স্বাগতিক জিম্বাবুয়েকে ২২০ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ। রোববার (১১ জুলাই) পঞ্চম ও শেষ দিনে ম্যাচ বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি স্বাগতিকরা। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দারুণ নৈপুণ্যে বিজয়ের হাসিতে উদ্ভাসিত হয়েছে বাংলাদেশ দল।
রেকর্ড ৪৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা টাইগার-বোলারদের পুরো দুই সেশন ঠেকিয়ে রেখেও ম্যাচ বাঁচাতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৬ রানে অল আউট হয়ে যায় দলটি।
রানের হিসাবে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়। ১২৪ টেস্টে টাইগারদের এটি পঞ্চদশ জয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের প্রতিরোধ-দেয়াল ভাঙ্গতে মূল ভুমিকা পালন করেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ৮২ রানে ক্যারিয়ার-সেরা চার উইকেট শিকার করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে ৮২ রানে পাঁচ উইকেট দখল করা অফ স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ৬৬ রান দিয়ে চার উইকেট তুলে নিয়ে তাসকিনকে উপযুক্ত সঙ্গ দিয়েছেন। স্বাগতিকদের বাকী দুই উইকেট নিয়েছেন যথাক্রমে – সাকিব আল হাসান ও এবাদত হোসেন।
আগের তিন উইকেটে ১৪০ রানের সংগ্রহ নিয়ে রোববার ব্যাটিং শুরু করা জিম্বাবুয়ে শুরুতে ভাগ্যের কিছুটা সহায়তা পেয়েছিল। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ডোনাল্ড তিরিপানো ও ডিওন মায়ার্সের তুলে দেওয়া ক্যাচ তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা; সেটুকু বাদ দিলে পুরো টেস্টেই টাইগাররা ছিল প্রায় নিখুঁত।
প্রথম চা-বিরতির পরপর উইকেট-খরা দূর করেন মেহেদি মিরাজ। তাঁর বল ডিওন মায়ার্স মিড উইকেটে সরাসরি সাদমান ইসলামের হাতে তুলে দেন। ২৬ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। এই উইকেটটিই টাইগারদের জয়ের পথ খুলে দেয়। তিন বল পরে মিরাজ ফের আঘাত হানেন জিম্বাবুয়ে শিবিরে; লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান টিমিকেন মারুমাকে (০)।
এরপর উইকেট শিকারের উৎসবে যোগ দেন তাসকিন। তিনি পরপর ওভারে শূন্য রানে রয় কায়াকে ফেরানোর পরে বিদায় করেন এক রান সংগ্রহকারী রেজিস চাকাবাকে; এতেই নড়বড়ে হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের লোয়ার অর্ডার।
জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দেওয়ার আয়োজন চূড়ান্ত করার পরেও বাংলাদেশকে চিন্তায় ফেলেছিলেন ডোনাল্ড তিরিপানো। ভিক্টর নেয়াউচির সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি প্রথম দফায় যোগ করেন ৩৪ রান। পরে, তাসকিন ফিরিয়ে দেন ১০ রান সংগ্রহকারী ভিক্টরকে।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে কিছুটা ম্লান থাকা এবাদত অর্জন করেন তিরিপানোর উইকেটটি। লিটন দাসের হাতে ধরা পড়ার আগে ১৪৪ বল খেলে ৫২ রান সংগ্রহ করেছেন তিরিপানো।
এরপর স্বাগতিক দলের রানের চাকা সচল রাখেন ব্লেসিং মুজারাবানি। ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান রিচার্ড এনগারাভা (১০) বিদায় না-হওয়া পর্যন্ত তিনি রান সংগ্রহ যেমন বৃদ্ধি করেছেন, তেমনি দলকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন চা-বিরতি পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন মুজারাবানি।