loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

  • বার্সাকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজি

  • অ্যাটলেটিকোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ডর্টমুন্ড

  • রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী কর তাগিদ দিলেন

  • ক্যানাডায় আর্টসেলের আটটি কনসার্ট

বিদেশে তিন সংস্করণে টাইগারদের প্রথম সিরিজ জয়


বিদেশে তিন সংস্করণে টাইগারদের প্রথম সিরিজ জয়

ক্রিকেটের তিন ফর্মেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এর আগেও সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ, তবে এবারের জয়টা সেদেশের মাটিতে; তাইতো এর গুরুত্ব অনেক। রোববার (২৫ জুলাই) হারারেতে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পাঁচ উইকেটের জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নিলো বাংলাদেশ। চলতি সফরে একমাত্র টেস্ট এবং তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজও জিতেছে টাইগাররা। এবার দ্বিতীয়  টি-২০ বাদে সব ম্যাচেই জয় এসেছে। শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়ে তিনটি ট্রফি নিয়ে দেশে অনুষ্ঠেয় অজিদের বিপক্ষে প্রস্তুতিটা ভালোভাবেই শেষ করলেন তামিম-সাকিব-সৌম্য-রিয়াদরা।

শেষ ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় স্বাগতিক দল। জবাবে সৌম্যর হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি  অধিনায়ক রিয়াদের ৩৪ ও শেষ দিকে শামীম পাটোয়ারীর ৩১ রানে চার বল হাতে রেখেই জয় বাংলাদেশের। ম্যাচ-সেরা ও সিরিজ-সেরা হয়েছেন সৌম্য সরকার।  

জয়ের জন্য ১৯৪ রানের লক্ষ্যে সিকান্দার রাজার প্রথম ওভারে সৌম্যর চার-ছয়ে এসেছে ১৩ রান। তৃতীয় ওভারে মুজরাবানি বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই ফেরান নাইমকে। লুকের হাতে ক্যাচ দেন সাত বলে তিন রান করা নাইম, ২০ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। 

তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে আসেন সাকিব। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে আসে ৫০ রান। অস্টম ওভারে জংওয়ের বলে টানা দুই ছক্কা হাকালেও, চতুর্থ বলে ধরা পড়েন মায়ার্সের হাতে। ১৩ বলে ২৫ রান করেন সাকিব।  ৭০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১০ ওভার পাচ বলে শতরান আসে বাংলাদেশের ইনিংসে। ৪০ বলে  (ছয় বাউন্ডারি, এক ছক্কা) হাফ সেঞ্চুরি করেন সৌম্য। অবশ্য, নিজের ইনিংস আরও দীর্ঘ করতে পারেননি, ৬৮ রান (৪৯ বলে, নয় বাউন্ডারি ও এক ছকা) করে, লুকের বলে মুসাকান্দার হাতে ধরা পড়েন তিনি। পের, অধিনায়কের সঙ্গী হন বাঁহাতি তরুণ আফিফ। দুই ছক্কায় ১৪ রান করে ফেরেন আফিফ, দলীয় সংগ্রহ তখন ১৫০।

এর পরে মাঠে আসেন শামীম পাটোয়ারী। শেষ চার ওভারে টার্গেট ৪০ রান। সপ্তদশ ওভারে রিয়াদের ছক্কা ও শামীমের বাউন্ডারিতে এসেছে ১২ রান। অষ্টাদশ ওভারে শামীমের তিন বাউন্ডারিতে আসে ১৫ রান। শেষ  ১২ বলে দরকার ১৩ রান। দলের জয় থেকে  সাত রান দুরে থাকতে উইেেকটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক রিয়াদ, ২৮ বলে ৩৪ রান করেন তিনি।

শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল পাঁচ রান। ক্রিজে আসেন উইকেটরক্ষক সোহান। প্রথম  বলেই বোলারের মাথার উপর দিয়ে বাউন্ডারি মেরে স্কোরে সমতা আনেন শামীম। দ্বিতীয় বলে উইনিং শট। ফলে, চার বল হাতে রেখেই পাঁচ উইকেটের জয়। ১৫ বলে  ছয় বাউন্ডারিতে ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন ২০ বছর বয়সী শামীম।

এর আগে হারারেতে বাংলাদেশের সামনে ১৯৪ রানের বড় লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী চেহারায় হাজির হয় স্বাগতিকরা। দুই ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানি আর ওয়েসলে মাদভেরে প্রথম তিন ওভারে করেন ২৮ রান। চতুর্থ ওভারে তাসকিন আহমেদের উপর চড়াও হন মাদভেরে। টানা পাঁচ বলে পাঁচটি চার হাঁকান তিনি। ওভারের শেষ বলটি কোনোমতে বাঁচাতে সক্ষম হন টাইগার পেসার। ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি আসে জিম্বাবুয়ের ইনিংসে। 

পঞ্চম ওভারে সাকিব  বোলিংয়ে এসে দেন তিন রান। পরের ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন মারুমানি। শেষ বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে জিম্বাবুইয়ান ওপেনারকে (২০ বলে ২৭) বোল্ড করে দেন সাইফউদ্দিন। পাওয়ার প্লে'র ছয় ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ এক উইকেটে ৬৩।

এরপর রেগিস চাকাভা ঝড়ো গতিতে সীমানার ওপারে একের পর এক বল পাঠান। নাসুম আহমেদের করা একাদশ ওভারে টানা তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকান চাকাভা। পরের ওভারেই ঝড় থামিয়েছেন সৌম্য। যদিও নাইম শেখ আর শামীম হোসেন পাটোয়ারীর যৌথ প্রচেষ্টার ফসল চাকাভার উইকেটটি। এবারও সজোরে হাঁকিয়েছিলেন চাকাভা, ক্যাচ নিয়েও ভারসাম্য রাখতে পারেননি নাইম। তবে, দড়ির বাইরে যাওয়ার আগে দারুণ বুদ্ধিমত্তায় বলটি উপরে তুলে দেন তিনি, পাশেই দাঁড়ানো শামীম দৌঁড়ে গিয়ে ক্যাচটি তালুবন্দী করেন; ফলে, চাকাভা সাজঘরে ফেরেন। ২২ বলে ছয় ছক্কায় ৪৮ রান করেছেন তিনি।

সে-ওভারেই সৌম্য তুলে নেন জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে, রানের খাতা খোলার আগেই। দুই উইকেট হারিয়ে রানের গতি কমে যায় জিম্বাবুয়ের। টাইগার-বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পরের চার ওভারে তাঁরা করতে পেরেছেন মাত্র ২৪ রান। সাকিবের করা ষোড়শ ওভারের প্রথম বলটি রিভার্স সুইপ করেছিলেন মাদভেরে। ৩৬ বলে ছয় বাউন্ডারিতে ৫৪ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যানের ক্যাচটি থার্ডম্যানে সহজেই তালুবন্দী করেন শরিফুল। পরের ওভারে শরিফুল দেন সাত। সাইফউদ্দিনের অষ্টাদশ ওভারে তিন চার আর এক ছক্কায়  ১৯ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে।

ঊনবিংশ ওভারে দারুণ বোলিং করে মাত্র দুই রান দেন শরিফুল। শেষ ওভারে সাইফউদ্দিন আবার ১৬ দেন। টানা দুই বলে চার আর ছক্কা হাঁকান রায়ান বার্ল। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৩১ রানে। স্বাগতিকরা পাঁচ উইকেটে ১৯৩ রান সংগ্রহ করেছে শেষ পর্যন্ত।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন সৌম্য। তিন ওভারে ১৯ রান দিয়ে শিকার করেছেন দুই উইকেট। শরিফুল ইসলাম চার ওভারে ২৭ এবং  সাকিব চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে পেয়েছেন একটি করে উইকেট। সাইফউদ্দিন এক উইকেট পেলেও চার ওভারে দিয়েছেন ৫০ রান।

Loading...