loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • শেষ মুহূর্তের গোলে ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

  • আর্সেনালের কাছে পাঁচ গোলে উড়িয়ে গেলো চেল্সি

  • হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

  • বেপজা অর্থনৈতিক জোনে চীনা কোম্পানির ১৯.৯৭ মি. ডলার বিনিয়োগ

  • কাতারের আমিরের ঢাকা ত্যাগ

টি-২০ বিশ্বকাপের আশা বাঁচিয়ে রাখলো টাইগাররা


টি-২০ বিশ্বকাপের আশা বাঁচিয়ে রাখলো টাইগাররা

সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ড এবং মোহাম্মদ নাইমের ব্যাটিং নৈপুণ্যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে খেলার আশা  বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এই জুটির সাথে মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিংয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ওমানকে ২৬ রানে হারিয়েছে টাইগাররা।

বাছাইপর্বে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৫৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ওপেনার মোহাম্মদ নাইম দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন। জবাবে ২০ ওভারে নয় উইকেটে ১২৭ রান করে হারের স্বাদ নেয় ওমান। এই গ্রুপে দুই ম্যাচে এক জয় ও এক পরাজয়ে দুই পয়েন্ট করে আছে বাংলাদেশ ও ওমানের। দুই ম্যাচে দুই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে স্কটল্যান্ড।

ওমানের আল আমেরাতে ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সুপার টুয়েলভে খেলতে হলে এই ম্যাচে জয় ছাড়া টাইগারদের সামনে বিকল্প ছিল না। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওপেনার সৌম্য সরকারকে বাদ দিয়ে মোহাম্মদ নাইমকে নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। 

নাইমের সাথে ইনিংসের শুরুটা জমাতে পারেননি আরেক ওপেনার ছয় রান করা লিটন দাস। তৃতীয় ওভারে দলীয় ১১ রানে থামেন তিনি। 

পিঞ্চ হিটার হিসেবে নেমেছিলেন মেহেদি হাসান। চার বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন মাহেদিও। এমন অবস্থায় ২১ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে মহা চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

সেই চাপকে দূর করার গুরুদায়িত্ব কাঁধে চাপে  নাইম ও চার নম্বরে নামা সাকিব আল হাসানের। চার মেরে রানের খাতা খুলেন সাকিব। সপ্তম ওভারে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান নাইম। একই সাথে সেটি ছক্কায় পরিণত হয়। অষ্টম ওভারে আবারো জীবন পান নাইম। তাই নাইম-সাকিবের সতর্ক ব্যাটিংয়ে ১০ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৬৩ রান পায় বাংলাদেশ।

ক্রিজে টিকে থাকতে গিয়ে প্রথম ১০ ওভারে রানের গতি কমই ছিলো বাংলাদেশের। দ্বাদশ ওভারে মারমুখী রুপে দেখা যায় নাইম-সাাকিবকে। ১৭ রান তুলেন তারা। এরমধ্যে সাকিবের দু’টি চার ও নাইমের ১টি ছক্কা ছিল। চতুর্দশ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তিন অংকে পৌঁছায়। দুর্ভাগ্য, এই ওভারেই নাইম-সাকিবের জুটিতে ভাঙন ধরে। 

পয়েন্ট থেকে ওমানের আকিব ইলিয়াসের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ২৯ বলে ৬টি চারে ৪২ রান করা সাকিব। ৫৩ বলে ৮০ রানের জুটি গড়েন নাইম-সাকিব। সাকিবের বিদায়ের পরের  ওভারে বাউন্ডারি দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৩তম ম্যাচে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান নাইম।

দলীয় ১০১ রানে সাকিবের বিদায়ের পর দ্রুতই তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ১২২ রানের মধ্যে আউট হন নুরুল হাসান, আফিফ হোসেন ও নাইম। নুরুল তিন ও আফিফ এক রান করেন। এক প্রান্ত আগলে রাখা নাইম ৬৪ রানে থামেন। ৫০ বলে তিনটি চার ও চারটি ছক্কায় গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস সাজান নাইম।

নাইম যখন ফেরেন, তখন ইনিংসে ২০ বল বাকী ছিলো। এ-অবস্থায় বাংলাদেশের স্কোর কত দূর নিয়ে যেতে পারেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম - সেটিই দেখার ছিল। মুশফিককে নিয়ে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন মাহমুদুল্লাহ। নয় বলে ১৬ রান যোগ করেছে এই জুটি।

তবে, ঊনবিংশ ওভারের প্রথম দুই বলে টাইগার-শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন ওমানের পেসার ফাইয়াজ বাট। মুশফিক-মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে তুলে নেন তিনি। মুশফিক ছয় রান করতে পারলেও  সাইফুদ্দিন খাতাই খুলতে পারেননি। 

ঊনবিংশ ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে দলের স্কোর দেড়শর কাছে নিয়ে যান মাহমুুদুল্লাহ। তাই আশা করা হয়েছিল, শেষ ওভারে মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিং-ঝড় দেখা যাবে। কিন্তু ঐ ওভারের তৃতীয় বলে আউট হন অধিনায়ক। একটি করে চার-ছক্কায় ১০ বলে ১৭ রান করেন তিনি। আর শেষ ওভারের শেষ বলে মুস্তাফিজুরের আউটে, ১৫৩ রানেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। 

মুস্তাফিজ দুই রান করেন। এক রানে অপরাজিত ছিলেন তাসকিন। ওমানের বিলাল-ফায়াজ তিনটি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১৫৪ রানের টার্গেট দিয়ে দ্বিতীয় ওভারেই ওমানের প্রথম উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। ওপেনার আকিব ইলিয়াসকে ছয় রানে শিকার করেন টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর ওমানের রানের চাকা ঘুরিয়েছেন জতিন্দার সিং ও ক্যাশপ প্রজাপতি। এই জুটি ২৭ বলে ৩৪ রান যোগ করে। এই জুটি বিচ্ছিন্ন করেন ফিজ। ২১ রান করে আউট হন প্রজাপতি।

৪৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পরে লড়াইয়ে টিকে থাকার মতো জুটি গড়েন জিতান্দার ও অধিনায়ক জিমাস মাকসুদ। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান করেছেন তাঁরা। এই জুটিতে ৩৪ বলে ৩৪ রান আসে। মাকসুদকে ১২ রানে মেহেদি ফিরিয়ে দিলে জুটি ভাঙে।

এরপর ওমানের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামান সাকিব-মুস্তাফিজ ও সাইফুদ্দিন। ২২ রানে ছয় উইকেট শিকার করেন তাঁরা। ফলে ২০ ওভারে নয় উইকেটে ১২৭ রানের বেশি করতে পারেনি ওমান।

উইকেটে সেট ব্যাটসম্যান জতিন্দারকে শিকার করে ওমানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলার শুরুটা করেছিলেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী সাকিব। চারটি চার ও এক ছক্কায় ৩৩ বলে ৪০ রান করেন জতিন্দার। পরের দিকে ওমানের ব্যাটাররা ব্যর্থ হলে, জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। নাদিমের অপরাজিত ১৪ রান ওমানের হারের ব্যবধান কমায়।

বল হাতে ৩৬ রানে চার উইকেট নেন মুস্তাফিজ। ২৮ রানে তিন উইকেট নেন সাকিব। একটি করে শিকার ছিল সাইফুদ্দিন ও মাহেদির। 

আগামী ২১ অক্টোবর গ্রুপ পর্বে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পাপুয়া নিউ গিনির মুখোমুখি হবে টাইগাররা।

Loading...