loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • কুমিল্লা ইপিজেড-এ চামড়া কারখানা করবে চীনা প্রতিষ্ঠান

  • নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রুপে শ্রীলংকা

  • অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা

  • ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

  • প্রীতি ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও আর্জেন্টিনার জয়

রেকর্ড জয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ-এ টাইগাররা


রেকর্ড জয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ-এ টাইগাররা

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ ‘বি’তে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পাপুয়া নিউ গিনিকে ৮৪ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সুপার টুয়েলভ-এ উত্তরণ নিশ্চিত করলো টাইগাররা।

গ্রুপে তিন খেলায় চার পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে এখন বাংলাদেশ। অবশ্য, আজ এই গ্রুপের শেষ ম্যাচে ওমানের মুখোমুখি হবে স্কটল্যান্ড। ঐ ম্যাচে ওমানকে হারালে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে স্কটিশরাই। সেক্ষেত্রে গ্রুপ রানার্স আপ হবে বাংলাদেশ।

এই ম্যাচে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রানে জয়ের রেকর্ডও গড়লো বাংলাদেশ। টাইগারদের এর আগের বড় জয়টি ছিল ৭১ রানের। ২০১২ সালে বেলফাস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ।

ওমানের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ২০ ওভারে সাত উইকেটে ১৮১ রানের বড় সংগ্রহ পায় টাইগাররা। ২৮ বলে ৫০ রান করেছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। জবাবে ৯৭ রানে অলআউট হয়ে যায় পাপুয়া নিউ গিনি।

টি-২০ বিশ্বকাপে টাইগারদের এটি এখন সর্বোচ্চ দলীয় রান।

এদিন ইনিংসের দ্বিতীয় বলে খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন আগের ম্যাচে ৬৪ রান করা ওপেনার মোহাম্মদ নাইম। শুরুর ধাক্কাটা ভালোভাবে কাটিয়ে ওঠেন আরেক ওপেনার লিটন দাস ও সাকিব আল হাসান। প্রথম ১৬ বলে কোনো বাউন্ডারি বা ওভার বাউন্ডারি পায়নি বাংলাদেশ। সপ্তদশ বলে ছক্কা মারেন লিটন। পরের ওভারে লং-অন দিয়ে ছক্কা আসে সাকিবের ব্যাট থেকে। ঐ ওভারে একটি বাউন্ডারিও আদায় করে নেন লিটন।

এরপর পাওয়ার প্লের বাকী ওভারগুলোতে আর কোনো বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি না এলেও ছয় ওভার শেষে ৪৫ রান পায় বাংলাদেশ। সপ্তম ওভারে হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌঁছায় দলীর স্কোর। তবে, অষ্টম ওভারের প্রথম বলে লিটন-সাকিবের জমে যাওয়া জুটি ভেঙে যায়। ২৩ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২৯ রান করে লিটন আউট হলে। সাকিব-লিটন জুটির কাছ থেকে ৪১ বলে ৫০ রান পায় টাইগাররা।

লিটনের বিদায়ে উইকেটে আসেন মুশফিকুর রহিম। উইকেটে সেট হতে সতর্কতার সাথে এগোলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। পাঁচ রান করে আউট হন মুশি। এতে ৭২ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে। মুশফিকের সাথে ১৯ বলে ২২ রান যোগ করেন সাকিব।

অবশ্য মাহমুদুল্লাহকে নিয়েও বড় জুটির পথে ছিলেন সাকিব। দলের স্কোর শতরান স্পর্শ করার পরে থামতে হয়েছে তাঁকে। চতুর্দশ ওভারের দ্বিতীয় বলে পাপুয়া নিউ গিনির অধিনায়ক আসাদ ভালাকে ছক্কাও মারেন সাকিব। এই ছক্কাতেই দলের রান তিন অংকে যায়। কিন্তু, চতুর্থ বলে আবারো ছক্কা মারতে গিয়ে ভালার বলে সাকিবের দুর্দান্ত ক্যাচ নেন চার্লস আমিনি। দারুণ ব্যাট করতে থাকা সাকিব চার রানের জন্য হাফ-সেঞ্চুরি মিস করেন। তিনটি ওভার বাউন্ডারিতে ৩৭ বলে নিজের ৪৬ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন দলের সেরা অলরাউন্ডার।

সাকিবের বিদায়ের পরে বাংলাদেশের রানে চাকা দ্রুতই ঘুরিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। সাকিব যখন আউট তখন অধিনায়কের রান ছিল ১১ বলে ১৬। পরে, মারমুখী মেজাজে ২৭ বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি। এবারের আসরে এ-পর্যন্ত এটিই দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরি। 

গতকাল ২৯ বলে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২৯ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করেছিলেন নামিবিয়ার ডেভিড ওয়াইজ।

সপ্তদশ ওভারে দুইটি ছক্কা ও একটি চার মারেন মাহমুদুল্লাহ। একই ওভারে ১০৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ পান টাইগার-দলপতি। শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে তিনটি করে চার-ছক্কায় ৫০ রান করে আউট হন তিনি। তখন ১৬ বল বাকী ছিল এবং দলীয় রান ছিল ১৪৪।

অধিনায়ক ফিরলেও রান করায় ভাটা পড়েনি বাংলাদেশের। আফিফ হোসেনের মারমুখী ব্যাটিং দলকে বড় স্কোরের পথে নিয়ে যেতে থাকে। তিনটি চারে দলের স্কোর ১৬০ অতিক্রম করান তিনি। কিন্তু ঊনবিংশ ওভারের শেষ বলে থামতে হয়েছে ১৪ বলে ২১ রান করা আফিফকে।

শেষ ওভারে প্রথম চার বল থেকে তিন রান নিতে পেরেছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও মেহেদি হাসান। পঞ্চম বলে ছক্কা মারেন সাইফুদ্দিন। শেষ বলেও ছক্কা পান সাইফুদ্দিন, আর এই ডেলিভারিটি নো ছিল; তাই, অতিরিক্ত শেষ বলে চার দিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ করেন সাইফুদ্দিন।

ছয় বলে একটি চার ও দুইটি ছক্কায় অপরাজিত ১৯ রান করেন সাইফুদ্দিন। দুই রানে অপরাজিত ছিলেন মেহেদি।

পাপুয়া নিউ গিনির কাবুয়া মোরেয়া-ড্যামিয়েন রাভু ও ভালা দুইটি করে উইকেট শিকার করেছেন।

জয়ের জন্য ১৮২ রানের বড় টার্গেটে খেলতে নেমে প্রথম দুই ওভারে কোনো বিপদ হয়নি পাপুয়া নিউ গিনির। তবে, তৃতীয় ওভার থেকে তাঁদেরকে চেপে ধরেছে টাইগাররা। তৃতীয় ওভারে সায়াকাকে শিকার করে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন সাইফুদ্দিন। পরের ওভারে পাপুয়া নিউ গিনির অধিনায়ক ভালাকে শিকার করেন আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ।

দুই পেসারের সাথে উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন সাকিব। পঞ্চম ওভারে দুই উইকেট তুলে নেন তিনি। আমিনিকে এক রানে ও আতাইকে খালি হাতে ফেরান সাকিব। এ-অবস্থায় ১৪ রানেই চার উইকেট হারায় পাপুয়া নিউ গিনি।

নবম থেকে একাদশ ওভারের মধ্যে পাপুয়া নিউ গিনির আরও তিন উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে বড় জয়ের দিকে নিয়ে যান সাকিব-মেহেদি। এ-সময় আরও দুই উইকেট দখল করেন ম্যাচ-সেরা নির্বাচিত হওয়া  সাকিব। সব মিলিয়ে এদিন চার উইকেট শিকার সাকিবের। ফলে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারে যৌথভাবে পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদির সমান এখন তিনি। সাকিব-আফ্রিদি উভয়েরই শিকার ৩৯টি করে উইকেট।

২৯ রানে সপ্তম উইকেট পতনে দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শংকায় পড়ে পাপুয়া নিউ গিনি; তা থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ডোরিগো ও সোপার। অষ্টম উইকেটে ২৫ রান যোগ করেন তাঁরা, ফলে,  হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌঁছায় দলের রান। ১১ রান করা সোপারকে আউট করে দলীয় ৫৪ রানে জুটি ভাঙেন সাইফুদ্দিন। এ-অবস্থায় পাপুয়া নিউ গিনির শেষ দুই উইকেট পতন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাত্র । তবে, বাংলাদেশের জয়কে দীর্ঘায়িত করেন আট নম্বরে নামা কিপলিন ডোরিগা। তাঁর ৩৪ বলে অপরাজিত ৪৬ রানে শতরানের কাছে যেতে পেরেছে পাপুয়া নিউ গিনি। শেষ পর্যন্ত তিন বল বাকী থাকতে ৯৭ রানে অলআউট হয় দলটি।

সাকিবের নয় রানে চারটি ছাড়া সাইফুদ্দিন-তাসকিন দুইটি করে উইকেট শিকার করেছেন। মেহেদি পেয়েছেন এক উইকেট।

Loading...